শিবসেনার (শিন্ডে গোষ্ঠী) বিরুদ্ধে বিতর্কিত ‘গদ্দার’ মন্তব্য করে ভয়ঙ্কর পরিণতির মুখে পড়লেন কমেডিয়ান কুনাল কামরা। অভিযোগ, এই রসিকতার জেরে শিবসেনা কর্মীদের কাছ থেকে ৫০০-রও বেশি ফোন কলের মাধ্যমে খুনের হুমকি পেয়েছেন তিনি। ফোনে বলা হয়েছে, তাঁকে টুকরো টুকরো করে ফেলা হবে! ইতিমধ্যে পুলিশ তাঁকে তলব করেছে, যদিও কামরা এক সপ্তাহ সময় চেয়েছেন।
সম্প্রতি মুম্বাইয়ের খার এলাকায় ‘হ্যাবিটাট’ কমেডি ক্লাবে শো চলাকালীন কুনাল কামরা ‘দিল তো পাগল হ্যায়’ সিনেমার একটি গানের কথা পরিবর্তন করে ব্যঙ্গ করেন। যদিও তিনি সরাসরি কারও নাম নেননি, তবে মনে করা হচ্ছে, এটি মহারাষ্ট্রের উপ-মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডেকে উদ্দেশ্য করেই বলা হয়েছিল। সেই ভিডিও ভাইরাল হতেই শিবসেনার শিন্ডে শিবিরের কর্মীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়েন এবং ওই কমেডি ক্লাব ভাঙচুর করেন। ঘটনায় শিবসেনার ১২ জন কর্মীকে গ্রেফতার করা হলেও পরে তাঁদের জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়।
এদিকে, কামরার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন শিবসেনা বিধায়ক মুরজি প্যাটেল। তাঁর ভিত্তিতেই পুলিশের পক্ষ থেকে কামরাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হয়। পাশাপাশি, থানের ডোম্বিভলি পুলিশ স্টেশনেও শিবসেনার এক নেতা কামরার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেছেন। ভারতীয় ন্যায় সঞ্চিতা (Bharatiya Nyaya Sanhita) ৩৫৬(২) ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।
ক্ষমা চাইতে নারাজ কুনাল কামরা
তবে সমালোচনা কিংবা হুমকির মুখেও পিছু হঠতে রাজি নন কুনাল কামরা। তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, “আমি যা বলেছি, সেটাই আগে অজিত পাওয়ার একনাথ শিন্ডেকে নিয়ে বলেছেন। তাই এর জন্য ক্ষমা চাইব না।” তিনি আরও বলেন, “আমি ভীত নই, খাটের নিচে লুকিয়েও থাকব না। এই সব হুমকির সামনে মাথা নত করব না।”
তিনি আরও জানান, তাঁর মোবাইল নম্বর ফাঁস করে দেওয়া হয়েছে, আর অচেনা নম্বর থেকে একের পর এক হুমকি আসছে। তবে তাতে বিচলিত নন তিনি। বরং কটাক্ষ করে বলেন, “যাঁরা ফোন করে বিরক্ত করছেন, তাঁদের জানিয়ে রাখি—সব অচেনা নম্বর থেকে আসা কল সরাসরি আমার ভয়েসমেলে চলে যাচ্ছে, যেখানে আপনাদের সবচেয়ে অপছন্দের গান বাজবে!”
শিবসেনার হুঁশিয়ারি ও শিন্ডের প্রতিক্রিয়া
তবে শিবসেনা নেতা ও মহারাষ্ট্র সরকারের মন্ত্রী গুলাব রঘুনাথ পাটিল কুনাল কামরাকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, “ওঁকে শিবসেনা ছেড়ে দেবে না! এমন অপমান আমরা বরদাস্ত করব না। ক্ষমা না চাইলে তো ওকে একদিন বাইরে আসতেই হবে, তখন আমরা আমাদের মতো করে ওর সঙ্গে কথা বলব!”
এই ঘটনায় মহারাষ্ট্রের উপ-মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডেও প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমরা ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ বুঝি, তবে তারও একটা সীমা থাকা উচিত। কেউ যদি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কথা বলে, তাহলে প্রতিক্রিয়াও আসবেই।”