বুধবার গভীর রাতে দীর্ঘ বিতর্কের পর লোকসভায় পাশ হল সংশোধিত ওয়াকফ বিল। বিলের পক্ষে ২৮৮ জন এবং বিপক্ষে ২৩২ জন সাংসদ ভোট দেন। ভোটের ব্যবধান ৫৬। মোট ভোট পড়ল ৫২০। অধিবেশনে তেমন কোনও অশান্তি হয়নি। বৃহস্পতিবার রাজ্যসভায় বিলটি পেশ করা হবে।
বিল পেশের আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সরকারের অবস্থান জানিয়ে বলেন, “অন্যের জমি দান করা যায় না, দান একমাত্র নিজের জমিই করা যায়।” তিনি দাবি করেন, সংশোধিত ওয়াকফ বিল মুসলিম সম্প্রদায়ের ধর্মীয় বিশ্বাসে হস্তক্ষেপ করে না। এটি ওয়াকফ সম্পত্তির সঠিক ব্যবস্থাপনা এবং পিছিয়ে পড়া মুসলিমদের কল্যাণে সহায়ক।
বিরোধীদের আপত্তি ও মেরুকরণের অভিযোগ
বিলের বিরোধিতায় তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় অভিযোগ করেন, জেপিসির ভিন্নমত উপেক্ষা করে বিলটি পেশ করা হয়েছে। তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বিলটিকে “অসাংবিধানিক” বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, “বিজেপির আনা এই বিল মুসলমানদের অধিকার খর্ব করছে এবং কেন্দ্রীয় সরকারের অসৎ উদ্দেশ্য স্পষ্ট করছে।”
কংগ্রেস সাংসদ গৌরব গগৈ এবং সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদবও বিলকে মেরুকরণের উদ্দেশ্য হিসেবে চিহ্নিত করেন। গৌরবের মন্তব্য, “এই বিল সংবিধানকে অবজ্ঞা করছে এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে অপদস্থ করতে চাইছে।”
মোদীকে সমর্থন শরিকদের
তিন শরিক জেডিইউ, টিডিপি এবং এলজেপি সংশোধিত ওয়াকফ বিলের পক্ষে দাঁড়ায়। জেডিইউর লল্লন সিংহ দাবি করেন, “বিরোধীরা মুসলিমদের ক্ষমতায়নের বিরুদ্ধে।”
বিজেপি সাংসদদের সমর্থন
বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এবং তেজস্বী সূর্য বিলের প্রশংসা করেন। অভিজিৎ প্রশ্ন তোলেন, “ওয়াকফ সম্পত্তি কি বিধবা মুসলিম মহিলা ও অনাথদের কল্যাণে ব্যবহৃত হচ্ছে?” তেজস্বী সূর্য ২০১৩ সালের সংশোধিত ওয়াকফ আইনকে কংগ্রেসের ভুল পদক্ষেপ বলে চিহ্নিত করেন।
আডবাণী, সুষমার অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন ওয়েইসির
ওয়াকফ বিলের বিরোধিতায় অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (মিম) প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়েইসি পাল্টা প্রশ্ন তুলে বলেন, “২০১৩ সালে ওয়াকফ সংশোধনী বিল সর্বসম্মতি ভাবে পাশ হয়েছিল। তখন আডবাণী, সুষমা স্বরাজ, রাজনাথ সিংহ কেন আপত্তি করেননি?”
সংশোধিত ওয়াকফ বিল নিয়ে বিতর্ক অব্যাহত। বৃহস্পতিবার রাজ্যসভায় বিল পেশ হলে আরও তীব্র আলোচনার সম্ভাবনা রয়েছে।