মহাকুম্ভের পবিত্র স্নান পর্বে পদপিষ্টের ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, বুধবার মৌনী অমাবস্যায় ‘শাহি স্নান’ করতে গিয়ে ত্রিবেণী সঙ্গমে প্রচণ্ড ভিড়ের কারণে পদপিষ্ট হয়ে বহু মানুষ গুরুতর আহত হয়েছেন, আশঙ্কাজনক অবস্থায় বেশ কয়েকজনকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। ৩০ জন মহিলা পূণ্যার্থী আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে উদ্ধারকাজ চলছে যুদ্ধকালীন তৎপরতায়।
এই ঘটনার পরই উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে ফোন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি সব ধরনের সাহায্যের আশ্বাস দেন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও যোগীর সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতির আপডেট নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, গঙ্গা, যমুনা ও অন্তঃসলিলা সরস্বতীর সঙ্গমস্থলে লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থী একত্রিত হয়েছিলেন। অতিরিক্ত ভিড়ের ফলে আচমকাই ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়ে যায়, যার জেরে পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনা ঘটে। স্থানীয় উদ্ধারকারী দল প্রথমে তৎপরতা দেখায়, পরে রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী এবং জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে র্যাফ ও এনএসজি-র দলও মোতায়েন করা হয়েছে।
এই দুর্ঘটনার পর মৌনী অমাবস্যায় ‘শাহি স্নান’ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সাধুদের আখড়াগুলি। অখিল ভারতীয় আখড়া পরিষদের সভাপতি মহন্ত রবীন্দ্র পুরী বলেন, ‘‘এই ভয়াবহ দুর্ঘটনার পরে আমরা আপাতত স্নান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’
মেলা কমিটির আধিকারিক বিজয় আনন্দ জানিয়েছেন, ‘‘সম্ভবত কোনও গুজবের কারণে হুড়োহুড়ি শুরু হয়, যার ফলে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে।’’ যদিও এখনও পর্যন্ত সঠিক কারণ স্পষ্ট নয়। প্রশাসন ইতিমধ্যে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, মহাকুম্ভের মতো বিশাল ধর্মীয় অনুষ্ঠানে আরও কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রয়োজন ছিল। বিপুল জনসমাগম সামাল দিতে ব্যর্থতার অভিযোগও উঠেছে প্রশাসনের বিরুদ্ধে। তবে আপাতত আহতদের চিকিৎসা এবং উদ্ধারকাজে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।