মহাকুম্ভ ২০২৫ উপলক্ষে ব্যাপক প্রস্তুতি শুরু করেছে বিভিন্ন দফতর, বিশেষত ভারতীয় রেল। ২০২৫ সালের ১৩ জানুয়ারি উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজে গঙ্গা, যমুনা এবং সরস্বতীর সঙ্গমস্থলে শুরু হবে এই পবিত্র মেলা। লক্ষ লক্ষ ভক্তের ভিড় সামলানোর জন্য রেল ৩,০০০ বিশেষ ট্রেন চালানোর ঘোষণা করেছে, যার মধ্যে ৫৬০টি রিং রেল রুটে চলবে।
৯টি স্টেশনে টিকিটিং সুবিধা
উত্তরমধ্য রেলওয়ে প্রয়াগরাজ জংশন, নৈনি, চেওকি, প্রয়াগ জংশন, সুবেদারগঞ্জ, ফাফামাউ, প্রয়াগরাজ রামবাগ, প্রয়াগরাজ সঙ্গম এবং ঝাঁসির মতো ৯টি গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনে টিকিটের ব্যবস্থা করেছে। ৫৬০টি টিকিটিং পয়েন্টের মাধ্যমে প্রতিদিন প্রায় ১০ লক্ষ টিকিট ইস্যু করা হবে। ভ্রমণ পরিকল্পনা সহজতর করতে, টিকিট ১৫ দিন আগে থেকে বুক করা যাবে।
পুণ্যার্থীদের জন্য ব্যাপক রেল নেটওয়ার্ক
মহাকুম্ভ চলাকালীন ১৩,০০০টিরও বেশি ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা করেছে রেল, যার মধ্যে ১০,০০০টি নিয়মিত এবং ৩,০০০টি বিশেষ ট্রেন। এছাড়া প্রয়াগরাজ-অযোধ্যা-বারাণসী-প্রয়াগরাজ, প্রয়াগরাজ সঙ্গম-জৌনপুর-প্রয়াগ-প্রয়াগরাজ এবং ঝাঁসি-গোবিন্দপুরী-প্রয়াগরাজ-মানিকপুর-ঝাঁসি রুটে ৫৬০টি রিং রেল ট্রেন চলবে।
নিরাপত্তার জন্য ১৮,০০০ জন আরপিএসএফ এবং এসআরপি কর্মী মোতায়েন থাকবে। প্রয়াগরাজ জংশনে ১,১৮৬টি সিসিটিভি ক্যামেরা, যার মধ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন ক্যামেরাও রয়েছে, নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণের জন্য বসানো হয়েছে।
পুণ্যার্থীদের জন্য পরিকাঠামো উন্নয়ন
বিশাল দর্শনার্থী সংখ্যা সামলাতে ১.৬ লক্ষ তাঁবু এবং ১.৫ লক্ষ টয়লেট নির্মাণ করা হচ্ছে। ১৫,০০০ সাফাইকর্মী পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করবেন। ১,২৫০ কিমি পাইপলাইন বসানো হয়েছে জল সরবরাহ নিশ্চিত করতে। আলো জ্বালানোর জন্য ৬৭,০০০ এলইডি লাইট, ২,০০০ সোলার লাইট এবং ৩ লাখ গাছ লাগানো হচ্ছে। মহাকুম্ভে থাকবে ৯টি স্থায়ী ঘাট, ৭টি রিভারফ্রন্ট রাস্তা এবং ১২ কিমি বিস্তৃত অস্থায়ী ঘাট।
মহাকুম্ভ মেলা ২০২৫
কুম্ভ মেলা প্রতি ৩ বছর অন্তর, অর্ধকুম্ভ মেলা ৬ বছর অন্তর এবং মহাকুম্ভ মেলা ১২ বছর অন্তর আয়োজিত হয়। শেষ মহাকুম্ভ মেলা ২০১৩ সালে এবং অর্ধকুম্ভ মেলা ২০১৯ সালে আয়োজিত হয়েছিল। এ বারের মহাকুম্ভ মেলা শুরু হবে ২৯ জানুয়ারি, ২০২৫-এ সিদ্ধি যোগে। এটি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের জন্য সবচেয়ে বড় উৎসব, যেখানে সারা বিশ্বের ভক্তরা অংশগ্রহণ করেন।
মহাকুম্ভ চলবে ১৩ জানুয়ারি থেকে ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এই পবিত্র সঙ্গমে স্নানের জন্য লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাগম হয়। এটি শুধুমাত্র একটি মেলা নয়, বরং এক বৈশ্বিক উৎসবের রূপ ধারণ করে।