মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি নেতৃত্বাধীন মহাযুতির বিশাল জয়ের পর কে হবেন মুখ্যমন্ত্রী, তা নিয়ে উত্তেজনা চরমে। নির্বাচিত বিধানসভার মেয়াদ শেষ হওয়ার দিনেই মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিণ্ডে পদত্যাগ করেছেন। তবে বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট এখনো শীর্ষ পদের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি।
বিজেপি নেতারা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীসকে ফের মুখ্যমন্ত্রী করতে চান, অন্যদিকে শিবসেনার বিধায়করা চান শিণ্ডে পদে বহাল থাকুন। জানা গেছে, অজিত পওয়ারের নেতৃত্বাধীন এনসিপি ইতিমধ্যেই ফড়নবীসকে সমর্থন দেওয়ার কথা জানিয়েছে। বিজেপি, শিবসেনা এবং এনসিপি যথাক্রমে ১৩২, ৫৭ এবং ৪১টি আসন পেয়ে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের অবস্থানে রয়েছে। ফলে বিজেপি এনসিপির সমর্থন পেলেই সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় ১৪৫ আসন পার হয়ে যাবে, যা শিণ্ডের জন্য পরিস্থিতি আরও কঠিন করে তুলেছে।
মুখ্যমন্ত্রীপদ নিয়ে বিজেপির অভ্যন্তরীণ আলোচনার মাঝে শিণ্ডে-সমর্থিত শিবসেনার কিছু নেতারা শক্তি প্রদর্শনের পরিকল্পনা করলেও শিণ্ডে তাঁদের থেকে বিরত থাকতে বলেন। তিনি এক্স (আগের টুইটার)-এ লেখেন, “মহাযুতির ঐতিহাসিক জয়ের পর আমরা একত্রে সরকার গঠন করব। আমি সকলের ভালবাসার জন্য কৃতজ্ঞ। অনেকেই আমার সমর্থনে মুম্বই আসার কথা জানাচ্ছেন। কিন্তু এরকম কোনো পদক্ষেপের প্রয়োজন নেই।”
শিবসেনা নেতা নরেশ মহাস্কে ‘বিহার মডেল’-এর উদাহরণ টেনে দাবি করেছেন যে শিণ্ডেকে মুখ্যমন্ত্রীপদে রাখা উচিত, ঠিক যেভাবে বিহারে বিজেপি সংখ্যাগরিষ্ঠ থাকা সত্ত্বেও জেডিইউ নেতা নীতীশ কুমারকে মুখ্যমন্ত্রী করেছিল। অন্যদিকে বিজেপি নেতা প্রবীণ দারেকার জানিয়েছেন, মহারাষ্ট্রের মানুষ দেবেন্দ্র ফড়নবীসের পক্ষে রায় দিয়েছে।
জানা গেছে, বিজেপির আদর্শগত সংগঠন আরএসএসও চায় ফড়নবীস মুখ্যমন্ত্রী হোন। ২০২৫ সালে আরএসএস-এর শতবর্ষ পূর্তি উদযাপন সামনে রেখে তারা বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকারকে এগিয়ে রাখতে চায়।
২০১৯ সালে মহারাষ্ট্রে সরকার গঠন নিয়ে নাটকীয় পরিস্থিতির কথা এখনও অনেকেরই মনে রয়েছে। তবে শিণ্ডে এখন জটিল এক পরিস্থিতিতে পড়েছেন। যেখানে তাঁকে ছাড়াই বিজেপির সরকার গঠন সম্ভব। অজিত পওয়ারের নেতৃত্বাধীন এনসিপি ইতিমধ্যেই বিজেপিকে সমর্থন দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে। এতে শিণ্ডের সামনে একমাত্র বিকল্প হয়ে দাঁড়িয়েছে মন্ত্রীসভা গঠনে ভালো পদ পাওয়ার চেষ্টা করা।
বিরোধীরা ইতিমধ্যেই শিণ্ডেকে আক্রমণ করা শুরু করেছে। উদ্ধব ঠাকরে বলেছেন, শিণ্ডেকে এখন ফড়নবীসের অধীনে কাজ করতে হবে।
সরকার গঠনে বিলম্বের ফলে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির সম্ভাবনা নিয়ে গুঞ্জন শুরু হলেও নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যেই নবনির্বাচিত বিধায়কদের নাম জানিয়ে ১৫তম বিধানসভা গঠিত হয়েছে বলে জানিয়েছে।