দেশের সংবিধান অনুযায়ী, স্ত্রী-র বয়স ১৫ বছরের বেশি হলে, তার সঙ্গে যৌন সংগম করা কোনও ভাবেই ধর্ষণ হতে পারে না। দিল্লি হাইকোর্টকে দেওয়া এক হলফনামায় এ কথা স্পষ্ট জানিয়ে দিল কেন্দ্র। প্রধান বিচারপতি জি রোহিনী এবং বিচারপতি সঙ্গীতা ধিগরা শেহগলের ডিভিশন বেঞ্চকে কেন্দ্র জানায়, ভারতীয় আইন এই বিষয়টিকে ‘সনাতন সামাজিক কাঠামোর ভিত্তিতে স্বামী-স্ত্রীর ব্যক্তিগত ব্যাপার হিসেবে দেখে’, তাই এটা কোনও ভাবেই অসাংবিধানিক হতে পারে না।
সংবিধানের ৩৭৫ অনুচ্ছেদে ধর্ষণের ব্যাখ্যা দেওয়া আছে। সেখানে স্ত্রীর বয়স ১৫ বছরের বেশি হলে, তাকে কোনও আঘাত করা হলে বা তার সঙ্গে যৌন সংগম করা হলে, সেটিকে কোনও ভাবেই ধর্ষণ বলা যাবে না বলে নির্দিষ্ট করে দেওয়া আছে।
সরকার আদালতে স্বীকার করেছে যে, যদিও বিয়ের জন্য সম্মতি দেওয়ার বয়স ১৮ এবং শিশুবিবাহ গ্রহণযোগ্য নয় কিন্তু সামাজিক বাস্তবতা এমনই যে আইনের কাঠামোয় সেটা সম্পূর্ণ রূপে আনা যাচ্ছে না। কারণ দেশে সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং শিক্ষাগত ক্ষেত্রে অসম বিকাশ রয়েছে এবং শিশুবিবাহ হয়েই চলেছে।
হলফনামায় জানানো হয়েছে, আইনে যে ১৫ বছরের উপরে স্ত্রীর সঙ্গে যৌন সঙ্গমের অধিকার রয়েছে, সেই অধিকার কেন্দ্র বজায় রাখতে চায়, যাতে এ কাজ কোনও ভাবেই অপরাধের তালিকায় না পড়ে।
আরও বলা হয়েছে, বৈবাহিক ধর্ষণ সংক্রান্ত আইনের সঙ্গে সঙ্গে ‘অভিযোগকারী, পুলিশ আধিকারিক এবং সামগ্রিক ভাবে সামাজিক মনোভাবের পরিবর্তন’-ও প্রয়োজন।
আরআইটি ফাউন্ডেশন নামে একটি বেসরকারি সংগঠনের দায়ের করা জনস্বার্থ মামলার প্রেক্ষিতে হলফনামা জমা দিয়েছিল কেন্দ্র।
ওই মামলায় বলা হয়, বর্তমান আইন অনুযায়ী আইনসম্মত ভাবে বিবাহিত স্ত্রী-র যৌন স্বাধীনতায় স্বামীর হস্তক্ষেপের অধিকারে রাষ্ট্র সিলমোহর দিচ্ছে। এই বিষয়টি সংবিধানের ২১ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুসারে স্ত্রী যে ব্যক্তিগত গোপনীয়তার অধিকার রয়েছে, তার পরিপন্থী।
মামলায় আরও বলা হয়, ‘সংবিধানের ৩৭৫ ধারার ব্যতিক্রম মহিলাদের মধ্যে অযৌক্তিক বিভেদ তৈরি করে রেখেছে, কারণ এই আইন অনুসারে বিবাহিত মহিলাদের ক্ষেত্রে সম্মতির বয়স যেখানে ১৫ বছর, সেখানে অন্য মহিলাদের ক্ষেত্রে তা ১৮ বছর’।
খবরের সব আপডেট পড়ুন খবর অনলাইনে। লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল।