মণিপুর সরকারের পক্ষ থেকে বুধবার আবারও একটি নির্দেশিকা জারি করা হল। যেখানে জানানো হয় যে, রাজ্যের সাতটি জেলায় মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধের সময়সীমা আরও তিন দিন বাড়ানো হয়েছে। এর আগে গত ১৬ নভেম্বর থেকে রাজ্য সরকার অশান্তি রোধে দু’দিন মোবাইল ইন্টারনেট সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নেয়। যাতে অশান্তি ছড়িয়ে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিঘ্নিত করার মতো কোনো ধরনের কন্টেন্ট ছড়িয়ে না পড়ে, সে কারণেই এই সিদ্ধান্ত।
এর আগে, সোমবারও এই সাসপেনশন আরও দু’দিন বাড়ানো হয়েছিল। বুধবার নতুন নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, রাজ্য সরকার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ইম্ফল পশ্চিম, ইম্ফল পূর্ব, কাকচিং, বিশনপুর, থৌবল, চুরাচান্দপুর এবং কাংপোকপির মতো মণিপুরের সাতটি জেলায় মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা আরও তিন দিন স্থগিত থাকবে।
১৬ নভেম্বর থেকে রাজ্য প্রশাসন মোবাইল এবং ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পরিষেবা দুটোই স্থগিত করেছিল। তবে, মঙ্গলবার সাধারণ মানুষকে কিছুটা সুবিধা দিতে ব্রডব্যান্ড সেবা আবার চালু করা হয়, যাতে স্বাস্থ্য পরিষেবা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং অন্যান্য অফিসগুলোর কাজকর্ম চালু থাকে।
অন্যদিকে, ইম্ফল পূর্ব, ইম্ফল পশ্চিম এবং কাকচিং জেলার বাজারগুলোতে কিছুটা সময়ের জন্য কারফিউ শিথিল করা হলে কিছুটা প্রাণচাঞ্চল্য দেখা গেছে। ভোর ৫টা থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল থাকার কারণে মানুষ বাজারে বেরিয়ে আসতে শুরু করে এবং পেট্রোল পাম্পে লম্বা লাইন দেখা যায়। তবে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধই ছিল।
এই অশান্তির শুরু হয় জিরিবাম জেলার ছয় নাগরিকের খুন হওয়ার পর। যাঁদের মধ্যে তিনজন মহিলা এবং তিনজন শিশু। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজ্য জুড়ে তীব্র নিন্দার বয়ে যায়। মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
এদিকে, নাগা মহিলা ইউনিয়ন এই হত্যাকাণ্ডের জন্য শোক প্রকাশ করে এবং একে “নির্দয় হত্যাকাণ্ড” হিসেবে উল্লেখ করেছে। সংগঠনটি মেইতেই এবং কুকি সম্প্রদায়ের সশস্ত্র দলগুলোকে নারী ও শিশুদের বিরুদ্ধে হিংসা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে। তারা বলেছে, “বিপর্যস্ত মানুষের উপর আক্রমণ করা চরম অপরাধ ছাড়া আর কিছু নয় এবং এটা এক ধরনের কাপুরুষতার পরিচয়।”