মুম্বই: সোমবারের প্রবল ঝড়ে মুম্বইয়ের ঘাটকোপারে বিলবোর্ড ভেঙে ১৪ জনের মৃত্যুর দায়ে ভবেশ ভিন্ডের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তাঁকে ‘খুনের উদ্দেশ্যে নয়, এমন অনিচ্ছাকৃত হত্যার’ দায়ে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
‘ইগো মিডিয়া প্রাইভেট লিমিটেড’-এর মালিক ভবেশ ভিন্ডে মুম্বই পুলিশের কাছে নতুন কোনো মুখ নন। তিনি ধর্ষণের মামলায় অভিযুক্ত এবং অবৈধ হোর্ডিং লাগানোর জন্য অন্তত ২১ বার তাঁকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। পুলিশকর্তারা জানিয়েছেন, ভবেশ ভিন্ডে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। তাঁর মোবাইলও বন্ধ রয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ভারতীয় দণ্ডবিধির (আইপিসি) প্রাসঙ্গিক বিভিন্ন ধারায় ৫১ বছরের ভবেশ ভিন্ডে ও আরও কয়েক জনের বিরুদ্ধে পন্থ নগর থানায় মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে। আইপিসি-র যে সব ধারায় তাঁদের অভিযুক্ত করা হয়েছে, তার মধ্যে একটি হল ‘কালপেবল হোমিসাইড নট অ্যামাউন্টিং টু মার্ডার’ (খুনের উদ্দেশ্যে নয়, এমন অনিচ্ছাকৃত হত্যা)।
সোমবার মুম্বইয়ে মরশুমের প্রথম ঝড়বৃষ্টি হয়। প্রবল ঝড়ে ঘাটকোপারে বিশাল এক বিলবোর্ড ভেঙে পড়ে একটি পেট্রোল পাম্পের উপরে। তার ফলে ১৪ জন মারা যান এবং অন্তত ৭৪ জন জখম হন। ওই অবৈধ বিলবোর্ডের মালিক ভবেশ ভিন্ডে এ বছরের গোড়ার দিকে এক ধর্ষণের মামলায় অভিযুক্ত। মুলুন্দ থানা তাঁর বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬ ধারা (ধর্ষণের জন্য শাস্তি) মোতাবেক মামলা রুজু করে এবং চার্জশিট ফাইল করে। কিন্তু আদালতে ভবেশ আগাম জামিন পান। ভবেশের আইনি টিম বলেছে, তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের করা এই মামলা ভুয়ো।
অ্যাডভার্টাইসিং এজেন্সির মালিক ভবেশ ভিন্ডে ২০০৯-এর বিধানসভা নির্বাচনে মুলুন্দ কেন্দ্র থেকে নির্দল প্রার্থী হিসাবে লড়েছিলেন। তিনি তাঁর এফিডেভিটে জানান, তাঁর বিরুদ্ধে ‘মুম্বই মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন অ্যাক্ট’ এবং ‘নেগোশিয়েবল ইনস্ট্রুমেন্টস অ্যাক্ট’ (চেক ফেরত যাওয়া) অনুসারে ২৩টি মামলা রয়েছে।
প্রাণঘাতী সেই বিলবোর্ড কত বড়ো
‘মুম্বই মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন অ্যাক্ট’ অনুসারে ভবেশের বিরুদ্ধে যে সব মামলা রয়েছে সেগুলি অবৈধ হোর্ডিং লাগানো সংক্রান্ত। যেমন, ঘাটকোপারের ভেঙে পড়া বিলবোর্ডটি। অতি বিশাল এই বিলবোর্ডের মাপ ছিল ১২০ ফুট বাই ১২০ ফুট। অথচ বিএমসি (বৃহনমুম্বই মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন) বলেছে, তারা ৪০ ফুট বাই ৪০ ফুট মাপের চেয়ে বড়ো বিলবোর্ড লাগাতে দেন না।
বিএমসি কমিশনার ভূষণ গাগরানি মঙ্গলবার সাংবাদিকদের বলেছেন, “শহরের সমস্ত অবৈধ হোর্ডিংয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমরা নির্দেশ দিয়েছি। আমরা আজই কাজ শুরু করছি। এ ক্ষেত্রেও (ঘাটকোপারের হোর্ডিং) কোনো অনুমতি নেওয়া ছিল না। তাই মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই হোর্ডিং যাতে দেখা যায় তার জন্য কিছু গাছও কেটে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এ ব্যাপারেও আমরা মামলা দায়ের করেছি।”
আরও পড়ুন
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হাতে নগদ ৫২ হাজার টাকা, ব্যাঙ্ক-ব্যালেন্স কত