পটনা: নিট প্রশ্নফাঁস কেলেঙ্কারির তদন্তভার নেওয়ার পর সিবিআই বৃহস্পতিবার বিহারের পটনা থেকে দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে। ধৃতেরা হলেন, মণীশ কুমার এবং আশুতোষ কুমার। সিবিআই সূত্রে জানা গেছে, মণীশ কুমার নিজের গাড়িতে করে পরীক্ষার্থীদের নিয়ে যেতেন এবং তাঁদের জন্য ঘরের ব্যবস্থাও করতেন। আশুতোষ এই কাজে তাঁকে সহযোগিতা করতেন এবং পরীক্ষার্থীদের থাকা, খাওয়ার বন্দোবস্ত করতেন।
তদন্তকারীদের সন্দেহ, পরীক্ষার আগে একটি ফাঁকা স্কুলে পরীক্ষার্থীদের নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখানে প্রায় ২৪ জন পরীক্ষার্থীর থাকার ব্যবস্থা করা হয় এবং পরীক্ষার আগের দিন তাঁদের নিটের প্রশ্নপত্র দেওয়া হয়। প্রশ্নপত্রের উত্তরও তৈরি করানো হয়। নিট প্রশ্নফাঁসকাণ্ডে সিবিআই ছ’টি এফআইআর দায়ের করেছে। রবিবারই কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রক সিবিআইয়ের হাতে এই তদন্তভার দেয় এবং প্রথম এফআইআর করা হয়।
নিট প্রশ্নফাঁস কেলেঙ্কারি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টেও মামলাটি চলছে। বৃহস্পতিবার পরীক্ষা নিয়ামক সংস্থা ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি (এনটিএ)-কে নোটিস দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট, ‘বাড়তি নম্বরের’ ব্যাখ্যা চেয়ে। আগামী ৮ জুলাইয়ের মধ্যে এর জবাব দিতে বলা হয়েছে। একটি ‘লার্নিং অ্যাপ’-এর তরফে নিটে দুর্নীতি এবং বাড়তি নম্বরের প্রসঙ্গ তুলে মামলা দায়ের করা হয়।
এই কেলেঙ্কারির ঘটনায় এখনও পর্যন্ত চার রাজ্যের পুলিশের হাতে ২৬ জনকে গ্রেফতার হয়েছে। এর মধ্যে বিহার থেকে ১৩, ঝাড়খণ্ডে ৬, গুজরাতে ৫ এবং মহারাষ্ট্রে ২ জন গ্রেফতার হয়েছেন। নিটে একসঙ্গে ৬৭ জন প্রথম স্থান অধিকার করায় দেশজুড়ে বিতর্ক শুরু হয়। পরে জানা যায়, প্রশ্নপত্র এবং কিছু পরীক্ষা কেন্দ্রে সময় জনিত সমস্যার জন্য ১৫৬৩ জন পরীক্ষার্থীকে বাড়তি নম্বর দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু র্যাঙ্কিং নিয়ে বিতর্ক প্রকাশ্যে আসতেই এই বাড়তি নম্বরের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে প্রতিবাদ জানায় বিভিন্ন মহল।
এই প্রশ্নফাঁস কেলেঙ্কারি নিট পরীক্ষার বিশ্বাসযোগ্যতায় বড় আঘাত হেনেছে। সিবিআই তদন্তের মাধ্যমে এই ঘটনা কতটা গভীর তা স্পষ্ট হবে। পরীক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন অভিভাবক এবং শিক্ষার্থীরা এখন এই তদন্তের দিকে নজর রাখছেন।