প্রশ্নপত্র ফাঁস থেকে ফলাফলে কারচুপি। অভিযোগে জেরবার ডাক্তারিতে ভর্তির সর্বভারতীয় প্রবেশিকা পরীক্ষা নিট-ইউজি। মুখরক্ষায় বাড়তি নম্বর বা গ্রেস মার্ক পরীক্ষার্থীদের আবারও পরীক্ষা হল রবিবার। কিন্তু যাঁরা গ্রেস মার্কস পেয়ে পাস করেছিলেন, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে মেনে ফের নিটে বসতেই চাইলেন না তাঁদের অর্ধেক।
রবিবার দেশের চারটি রাজ্য এবং একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ছয়টি কেন্দ্রে ১ হাজার ৫৬৩ জন প্রার্থীর জন্য পুনরায় নিটি-ইউজি পরীক্ষা পরিচালনা করেছে। পরীক্ষক সংস্থা তথ্য অনুসারে, ১ হাজার ৫৬৩ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৮১৩ জন এই পরীক্ষায় উপস্থিত ছিলেন, যেখানে ৭৫০ জন পরীক্ষার্থী আবার এক বার পরীক্ষা দিতে আসেননি।
এর আগে নিট পরীক্ষায় মেঘালয়, হরিয়ানা, ছত্তীসগঢ়, গুজরাত এবং চণ্ডীগড়ের ছয়টি কেন্দ্রে পরীক্ষা শুরুতে বিলম্বের কারণে সময়জনিত ক্ষতির জন্য বাড়তি নম্বর বা গ্রেস মার্ক দেওয়া হয়েছিল এই পরীক্ষার্থীদের। সেই গ্রেস মার্ক প্রত্যাহার করার পরে এই ১ হাজার ৫৬৩ জনের জন্য আবারও পরীক্ষা নেওয়া হয় রবিবার।
নতুন করে যে পরীক্ষা নেওয়া হল, সেখানে ছত্তীসগঢ়ে পরীক্ষাটি দুটি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয়। ওই দুই কেন্দ্রে ৬০২ জন প্রার্থী পুনরায় পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তাঁদের মথ্যে ২৯১ জন পরীক্ষার্থী রবিবারের পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন।
হরিয়ানার দুটি পরীক্ষা কেন্দ্রে ৪৯৪ জন পরীক্ষার্থীর জন্য আবার পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এর মধ্যে ২৮৭ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেন। বাকিরা আসেননি। মেঘালয়ে ৪৬৪ জন প্রার্থীর মধ্যে ২৩৪ জন রবিবার পরীক্ষা দিয়েছেন। গুজরাতে, একজন প্রার্থীর জন্য পুনরায় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
প্রসঙ্গত, ডাক্তারিতে ভর্তির প্রবেশিকা পরীক্ষায় ব্যাপক অনিয়ম এবং অন্যায্য ভাবে নম্বর দেওয়ার অভিযোগ ওঠার পর সরকার পুনরায় পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেয়। একসঙ্গে ৬৭ জন প্রথম স্থান অধিকার করায় বিতর্ক শুরু হয়েছিল দেশ জুড়ে। পরে জানা যায়, প্রশ্নপত্র এবং কিছু পরীক্ষাকেন্দ্রে সময় জনিত সমস্যার জন্য বাড়তি নম্বর দেওয়া হয়েছিল ১ হাজার ৫৬৩ জন পরীক্ষার্থীকে। কিন্তু র্যাঙ্কিং নিয়ে বিতর্ক প্রকাশ্যে আসতেই এই বাড়তি নম্বরের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে প্রতিবাদ জানায় বিভিন্ন মহল। একাধিক মামলা হয় সুপ্রিম কোর্টে।
চাপের মুখে আদালতে হলফনামা দিয়ে কেন্দ্র জানিয়েছে, অতিরিক্ত নম্বর বাতিল করা হচ্ছে। যাঁরা অতিরিক্ত নম্বর পেয়েছেন, তাঁরা চাইলে ফের ডাক্তারি সর্বভারতীয় প্রবেশিকার পরীক্ষায় বসতে পারেন। কিন্তু যদি পরীক্ষা না দেন, সেক্ষেত্রে অতিরিক্ত নম্বর বাতিল করা হবে। সেই মতোই রবিবার পুনরায় পরীক্ষার আয়োজন। যাতে অর্ধেক পরীক্ষার্থীর অনুপস্থিতি যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
আরও পড়ুন: প্রশ্ন ফাঁসের তদন্তভার হাত নিল সিবিআই, একাধিক অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা