খবর অনলাইন: নেতাজি অন্ততপক্ষে ১৯৬৮ সাল পর্যন্ত বেঁচেছিলেন। তিনি তখনও রাশিয়াতে ছিলেন। সেই সময় রাশিয়ার ওমস্ক শহরে বিপ্লবী বীরেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের ছেলে নিখিল চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হয়। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত একটি গোপন পিএমও ফাইল থেকে এ কথা জানা গিয়েছে।
ওই ফাইলে লেখক-সাংবাদিক নরেন্দ্রনাথ সিন্দকরের পেশ করা একটি হলফনামা রয়েছে। নরেন্দ্রনাথ ১৯৬৬ সাল ১৯৯১ পর্যন্ত মস্কো শহরে বাস করতেন। হলফনামায় দাবি করা হয়েছে, তথাকথিত বিমান দুর্ঘটনার ২৩ বছর পরে নিখিল চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর স্ত্রী সাইবেরিয়ার ওই শহরে সুভাষচন্দ্র বসুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
২০০০ সালে মুখার্জি কমিশনে পেশ করা সিন্দকরের ওই হলফনামায় চট্টোপাধ্যায়ের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, ভারতে যুদ্ধাপরাধী হিসাবে তাঁর বিচার হবে, এই আশঙ্কায় তিনি রাশিয়ায় লুকিয়ে ছিলেন।
হলফনামায় বলা হয়েছে, ১৯৬৬ সালে বীর সাভারকর মারা যাওয়ার পরেই সিন্দকর মস্কো শহরে চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ১৯৩৭ সালে স্তালিনের আমলে তাঁর বাবা বীরেন্দ্রনাথের প্রাণদণ্ড হয়। পুত্র নিখিলের জন্ম রাশিয়াতেই। “আমাদের যে কথাবার্তা হয়েছিল তাতে তিনি অভিযোগ করেছিলেন যে নেতাজি সুভাষকে সোভিয়েত রাশিয়ায় নির্বাসনে থাকতে বাধ্য করেছিলেন নেহরু। নেতাজি নির্বাসনেই ছিলেন। কারণ তাঁর ভয় ছিল, নেহরুর যোগসাজশে তাঁকে যুদ্ধাপরাধী হিসাবে ঘোষণা করা হবে। মাঞ্চুরিয়া হয়ে নেতাজি সোভিয়েত রাশিয়া পৌঁছলে স্তালিন, মলোটভ বেরিয়া এবং ভরোশিলভ ভারততত্ত্ববিদদের সঙ্গে পরামর্শ করেন। ভারততত্ত্ববিদরা সোভিয়েত দূতাবাসের মাধ্যমে লন্ডনে কৃষ্ণ মেননের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন স্তালিনকে। কৃষ্ণ মেনন স্পষ্ট ভাবেই নেহরুর পক্ষ নিয়ে কথা বলেন এবং এই খবর প্রকাশ না করার জন্য স্তালিনকে অনুরোধ করেন …” – ‘ডবলিউআই/৪১১/১/২০০০ – ইই’ নম্বর সম্বলিত ফাইলে রাখা সিন্দকরের হলফনামায় এই দাবি করা হয়েছে।
সিন্দকর বলেছেন, চট্টোপাধ্যায়ের এই উদ্ঘাটনে তিনি মর্মাহত হন। নিজেকে নেতাজির নিবিড় অনুগামী বলে অভিহিত করে সিন্দকর বলেছেন, কমরেড চন্দ্রনের মাধ্যমে নেতাজি সম্পর্কে আরও তথ্য প্রকাশের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে আর যোগাযোগ হয়েছিল কি না সে সম্পর্কে হলফনামায় আর কিছু বলা হয়নি।
সূত্র: দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া
খবরের সব আপডেট পড়ুন খবর অনলাইনে। লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল।