রাজকোট: গুজরাতের রাজকোটের একটি গেমিং জোনে ব্যাপক অগ্নিকাণ্ডের ফলে ৯ শিশু-সহ কমপক্ষে ৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে। দুর্ঘটনার পরই এই গেমিং জোনের নিরাপত্তার মান নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন উঠছে। সরকারি আধিকারিকরা জানিয়েছেন যে বিনোদন কেন্দ্রটি দমকলের ছাড়পত্র (এনওসি) ছাড়াই চলছিল এবং এর বাইরে বেরনোর পথ মাত্র একটি।
টিআরপি নামক গেমিং জোনটিতে ঢোকার জন্য টিকিটের দাম মাত্র ৯৯ টাকা। শুধু তাই নয়, এই মূল্যের টিকিটের সঙ্গে সপ্তাহান্তে ডিসকাউন্ট অফারের কারণে দর্শকদের আগ্রহ ছিল যথেষ্ট। এমন একটি জায়গায় শর্ট সার্কিটের কারণে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। তবে আধিকারিকরা বলেছেন যে সঠিক কারণ জানা যাবে শুধুমাত্র পর্যাপ্ত তদন্তের মাধ্য়মে।
দমকল বিভাগের এক আধিকারিক জানান, “আগুনের কারণ নিয়ে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আগুন নেভানো এবং উদ্ধারকাজ চলছে। অস্থায়ী কাঠামো ভেঙে পড়া এবং বাতাসের বেগের কারণে আগুন নেভানোর কাজে আমরা অসুবিধার সম্মুখীন হয়েছি”।
আগুনের তীব্রতা এতটাই ছিল যে কয়েক কিলোমিটার দূর থেকে ধোঁয়া দেখা যাচ্ছিল। মৃতদেহগুলো এমন ভাবে পুড়ে গিয়েছে যে চেনার অসাধ্য বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট আধিকারিকরা। শনাক্তকরণের জন্য মৃতদেহের ও নিহতের স্বজনদের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
সূত্রের মতে, গেমিং জোনের পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় লাইসেন্স ছিল না এবং রাজকোট মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন থেকে ফায়ার ক্লিয়ারেন্সের জন্য কোনো ছাড়পত্র (এনওসি) ছিল না। বিপর্যয়ের পরে এই বিষয়টিও তদন্তের আওতায় এসেছে।
রাজকোটের মেয়র নয়না পেধাদিয়া, যিনি উদ্ধার অভিযানের তদারকি করতে ঘটনাস্থলে ছিলেন, তিনি দমকলের এনওসি না থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, “আমরা তদন্ত করব কী ভাবে এত বড় গেমিং জোন ফায়ার এনওসি ছাড়াই কাজ করছিল এবং আমরা এর পরিণতি প্রত্যক্ষ করছি। এই ইস্যুতে কোনো রাজনীতি করা যাবে না”।
এই বিনোদন পার্কটিতে শুধুমাত্র একটি জরুরি প্রস্থানের পথ ছিল। যে কারণে আগুন ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই আতঙ্কও ছড়িয়ে পড়ে। আর প্রবেশ পথের কাআছে একটি অস্থায়ী কাঠামো ভেঙে পড়ায় দর্শকরা সেখান দিয়েও বাইরে যেতে পারছিলেন না। যে কারণে তাঁদের বাইরে বের করে আনার কাজ কঠিন হয়ে পড়ে।
প্রসঙ্গত, রাজকোটে গেমিং জোন অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৩২। দেহগুলি এমন ভাবে ঝলসে গিয়েছে যে, বেশির ভাগই শনাক্ত করা যাচ্ছে না বলে পুলিশ সূত্রে খবর। শনিবার সন্ধ্যার এই ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে টিআরপি গেম জোনের মালিক যুবরাজ সিংহ সোলাঙ্কি, ম্যানেজার নিতিন জৈন-সহ তিন জনকে। শীর্ষ আইপিএস আধিকারিক সুবাষ ত্রিবেদীর নেতৃত্বে একটি বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন (সিট) করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: রাজকোটে বিনোদন পার্কে আগুন, ৪ শিশু-সহ ২৭ জন জীবন্ত দগ্ধ