গত ৭৫ বছরে যাঁরা সংরক্ষণের সুবিধা নিয়ে সমাজে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছেন এবং প্রতিযোগিতায় সক্ষম, তাঁদের সংরক্ষণের বাইরে রাখা উচিত। তবে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে সরকার এবং আইন প্রণেতাদের। এমনটাই পর্যবেক্ষণ সুপ্রিম কোর্টের।
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বিআর গাভৈ এবং বিচারপতি অগাস্টিন জর্জ মেসি’র বেঞ্চ একটি মামলার শুনানিতে এই মন্তব্য করে। এর আগে গত বছরের ১ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টের সাত সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ জানিয়েছিল, রাজ্য সরকারগুলি প্রয়োজন অনুযায়ী অনগ্রসর শ্রেণিগুলোর মধ্যে আরও শ্রেণিবিভাগ করতে পারে।
সংবিধান বেঞ্চের রায়ে বলা হয়েছিল, অনগ্রসর শ্রেণির (SC/ST) মধ্যে যারা তুলনামূলকভাবে কম উন্নত, তাদের উন্নতির জন্য সংরক্ষণ পদ্ধতি এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যেতে পারে। বিচারপতি গাভৈ পৃথক রায়ে জানান, ‘ক্রিমি লেয়ার’-এর নীতি অনুসারে যাঁরা আর্থিক ও সামাজিকভাবে সক্ষম, তাঁদের সংরক্ষণের সুবিধা দেওয়া উচিত নয়।
আবেদনকারীর আইনজীবী অভিযোগ করেন, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও রাজ্য সরকার কোনও নীতি তৈরি করেনি। আইনজীবী আরও জানান, যদি রাজ্য সরকার নীতি না তৈরি করে, তা হলে সুপ্রিম কোর্টকে হস্তক্ষেপ করতে হবে।
সুপ্রিম কোর্টের সাত সদস্যের বেঞ্চ ৬-১ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় জানায়, ২০০৪ সালের ইভি চেন্নাইয়া মামলার রায়টি ভুল ছিল। ওই রায়ে বলা হয়েছিল, তফসিলি জাতি এবং তফসিলি উপজাতি একটি অভিন্ন গোষ্ঠী এবং এর মধ্যে উপবিভাগ করা যাবে না।
বিচারপতি বেলা এম ত্রিবেদী এই রায়ের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন। তাঁর মতে, সংরক্ষণের মধ্যে শ্রেণিবিভাগ সাংবিধানিক বিধানের বিরোধী। তিনি বলেন, সংবিধানের ৩৪১ এবং ৩৪২ ধারা অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতির তালিকায় কোনও পরিবর্তন আনতে পারে শুধুমাত্র সংসদ, রাজ্য সরকার নয়।
সবমিলিয়ে সুপ্রিম কোর্টের এই রায় সংরক্ষণের কাঠামোতে একটি বড় পরিবর্তন আনতে পারে। ভবিষ্যতে এ বিষয়ে আইন প্রণয়ন বা নীতি নির্ধারণে সরকারের সক্রিয় ভূমিকা প্রয়োজনীয়তাও দেখা যেতে পারে।