ভুবনেশ্বর: নিজের জীবনের বেশিরভাগ সময়টাকেই যন্ত্রণা দিয়ে গিয়েছে একটা সেতুর অভাব। ওড়িশার সালান্ডিতে প্রশস্ত এই নদীর উপর নির্ভর করেই চলে কৃষিকাজ। ফলে নদীর অবদান এখানে অপরিহার্য। কিন্তু কৃষক-সহ সাধারণ মানুষের যোগাযোগের ব্যাঘাত ঘটানোর মাধ্যমও এই নদী। স্বাভাবিক ভাবেই মনে মধ্যে পুষে রাখা দীর্ঘ দিনের স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করলেন প্রাণীসম্পদ বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত ইন্সপেক্টর গঙ্গাধর রাউত। নিজের পেনশনের টাকাতেই তিলে তিলে গড়ে তুলছেন ২৭০ ফুট দীর্ঘ আস্ত একটা সেতু। তাঁর এই আত্মবিশ্বাসী সংকল্পকে সাধুবাদ জানানোর সঙ্গে পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন আরও অনেকেই।
স্থানীয় কানপুর এবং দানেইপুর গ্রামের সংযোগরক্ষা করবে এই সেতুটি। প্রায় এক দশকেরও বেশি সময় ধরে গঙ্গাধর এবং প্রায় ১,২০০ গ্রামবাসী সম্মিলিত ভাবে রাজ্য সরকারের কাছে একটা সেতুর দাবি জানিয়ে এসেছেন। কিন্তু সরকারের তরফে প্রতিশ্রুতি এবং উদাসীনতা ছাড়া মেলেনি আর কিছুই। অস্থায়ী ভাবে এতদিন বাঁশের তৈরি সাঁকো দিয়েই চলে আসছে যাতায়াত।
এর পরে একটি স্থানীয় ট্রাক ওনার অ্যাসোসিয়েশন এবং বিধায়কের উদ্যোগে ৩ লক্ষ টাকার কাঠামো তৈরি হয়। কিন্তু তা সম্পূর্ণ হয়নি। কেটে গিয়েছে প্রায় এক দশক সময়। অসমাপ্ত সেতুটা দেখলেই বুকের মধ্যে যন্ত্রণা অনুভব করতেন গঙ্গাধর। অগত্যা সেই কাজ শেষ করারই দৃঢ় সংকল্প নিয়ে ফেলেছেন তিনি।
গঙ্গাধর জানান, “আমার মনে হয়েছে, এই সেতুর কাজ আমি যদি সম্পূর্ণ করতে না-পারি, তা আর কেউ পারবে না। এর পরই আমি এবং আমার ভাইপো মিলে এলাকার যত সেতু আছে, সব ক’টাকে ভালো করে দেখি। ঠিক কী ধরনের সেতু এখানে নির্মাণ করা সম্ভব, সেটাও খতিয়ে দেখা হয়। তার পরেই স্বউদ্যোগে ২০১৬ সালে থেকে ইট,বালি, সিমেন্ট, লোহার রড কিনতে শুরু করি”।
প্রথমে মনে হয়ছিল ৬ লক্ষ টাকাতেই কাজ সেরে ফেলা যাবে। কিন্তু ওই অসম্পূর্ণ সেতুর পিলারগুলো এতটাই ক্ষতিগ্রস্ত যে, সেই আনুমানিক ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ১০ লক্ষ টাকা।
[ আলিগড়ের ২ বছরের শিশুকন্যার নৃশংস খুনের প্রতিবাদে গর্জে উঠল সোশ্যাল মিডিয়া ]
এ ভাবেই নিজের স্বপ্ন পূরণের বাস্তবায়ন করতে গিয়ে গ্রামের মানুষের কাছে গঙ্গাধর হয়ে উঠেছেন বাস্তবের ‘হিরো’!