খবর অনলাইন: পালটাচ্ছে পাকিস্তান। পরিবারের সম্মান রক্ষার্থে খুনের ক্ষেত্রে খুনিরা ‘পারিবারিক ক্ষমা’র যে সুযোগ পায়, তা আর দেওয়া হবে না। অন্তত কান্দিল বালোচ হত্যাকাণ্ডে সেই সিদ্ধান্ত নিল পাকিস্তানের পঞ্জাব সরকার। এই খুনের অভিযোগে ধৃত কান্দিলের ভাই ওয়াসিম বালোচের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অপরাধের বিরল অভিযোগ আনা হয়েছে।
পারিবারিক সম্মান রক্ষার নামে প্রতি বছর পাঁচশোরও বেশি খুন হয়ে থাকে পাকিস্তানে। বলাই বাহুল্য, এঁদের মধ্যে অধিকাংশই মহিলা। কিন্তু নিহতের পরিবার ক্ষমা করে দিলেই আইনের ফাঁক গোলে বেরিয়ে যায় খুনিরা। কান্দিল বালোচ হত্যাকাণ্ডে সেই পারিবারিক ক্ষমার সম্ভাবনা আটকে দেওয়া হল।
১৫ জুলাই পঞ্জাবের মূলতানে তাঁর নিজের বাড়িতে খুন হন পাক মডেল ২৬ বছরের কান্দিল বালোচ। অল্প সময়েই মডেলিং-এর জগতে নাম কুড়িয়ে ছিলেন বালোচ। তবে নানা বিতর্কে জড়িয়ে শিরোনামে এসেছেন বহু বার। বালোচ খুনের ঘটনায় তাঁর ভাই মহম্মদ ওয়াসিম আজিমকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশের জেরায় তাঁর ভাই অপরাধ স্বীকার করে নিয়েছেন এবং এর জন্য তিনি অনুতপ্ত নন আদৌ। ওয়াসিমের বক্তব্য, সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা সময়ের খোলামেলা ফোটো দিয়ে বা ধর্মগুরু মুফতি আবদুল কাভের সঙ্গে সেলফি তুলে পরিবারের সম্মান ধুলোয় লুটিয়েছেন তিনি। ওয়াসিম ছাড়াও আরেক ছেলের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন বালোচের বাবা মহম্মদ আজিম।
ওয়াসিমের বিরুদ্ধে যে সব ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে পাকিস্তান দণ্ডবিধির ৩১১ ধারা, যার বলে ওয়াসিমের বিরুদ্ধে আবেদনকারী হয়েছে রাষ্ট্র। এর অর্থ ওয়াসিমের পরিবারের কেউ যদি খুনিকে ক্ষমা করতে চায় তা হলে তা গ্রাহ্য হবে না।
খুনিকে ‘পারিবারিক ক্ষমা’ আর মানবে না পঞ্জাব সরকার। পঞ্জাব সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে পাকিস্তানে এ ব্যাপারে কার্যকর সংস্কার আসছে কিনা বলা যাচ্ছে না। পরিবারের সম্মান রক্ষার খুনে ‘পারিবারিক ক্ষমা’র পদ্ধতি বন্ধ করতে একটি বিল পাকিস্তান পার্লামেন্টে আনা হয়েছিল। তা দীর্ঘদিন পড়ে আছে। গত ফেব্রুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ জানিয়েছিলেন বিলটি দ্রুত পাস করানোর ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া হবে। কিন্তু কাজের কাজের কিছু হয়নি।
খবরের সব আপডেট পড়ুন খবর অনলাইনে। লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল।