সপ্তম দফা ভোটের আগে ৯১ বছর বয়সী প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং পাঞ্জাবের ভোটারদের উদ্দেশ্যে একটি আবেগঘন আবেদন জানিয়েছেন। আগামী শনিবার ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের চূড়ান্ত পর্যায়ে ভোটগ্রহণের আগে এই খোলা চিঠিতে তিনি ভোটারদের অনুরোধ করেছেন, ‘আমাদের গণতন্ত্র এবং সংবিধানকে বারবার আক্রমণ থেকে রক্ষা করার জন্য এটি শেষ সুযোগ।’
এই তিন পাতার খোলা চিঠিতে প্রবীণ কংগ্রেস নেতা গত দশকে – প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং বিজেপি সরকারের দুই মেয়াদে – ভারতের অর্থনীতিতে ‘অবিশ্বাস্য অস্থিরতা’র বিষয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
ড. সিং লিখেছেন, ‘গত দশক ধরে ভারতের অর্থনীতি অভূতপূর্ব অস্থিরতার সম্মুখীন হয়েছে। বর্তমান শাসক দল আমাদের গণতন্ত্র এবং সংবিধানের মূল কাঠামোকে বারবার আক্রমণ করেছে।’
আরও পড়ুন। শেষ দফা ভোটের আগেই আবার সিএএ শংসাপত্র দেবে কেন্দ্র, এবার তালিকায় রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ
তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে আমাদের দেশের গণতন্ত্র এবং সংবিধান রক্ষার জন্য আমাদের সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা প্রয়োজন। এই নির্বাচনে আপনার ভোটই আমাদের দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে।’
প্রবীণ কংগ্রেস নেতা ড. মনমোহন সিং তার চিঠিতে আরও লেখেন, ‘আমি পাঞ্জাবের সকল ভোটারদের অনুরোধ করছি, আপনারা সবাই ভোট দিন এবং আমাদের দেশের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে রক্ষা করুন। এই নির্বাচন আমাদের দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এবং আমাদের সকলের উচিত এটি গুরুত্ব সহকারে নেওয়া।’
ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং তাঁর চিঠিতে লিখেছেন, “বিজেপি সরকারের অধীনে গড় জিডিপি প্রবৃদ্ধি ছয় শতাংশের নিচে নেমে গেছে, যেখানে কংগ্রেস-ইউপিএ শাসনামলে এটি ছিল প্রায় আট শতাংশ।” তিনি আরও উল্লেখ করেন, “অভূতপূর্ব বেকারত্ব এবং অনিয়ন্ত্রিত মুদ্রাস্ফীতি বৈষম্যকে শতবর্ষের সর্বোচ্চ স্তরে নিয়ে গেছে।”
বিশ্বব্যাঙ্কের তথ্য অনুসারে, ইউপিএ সরকারের অধীনে ২০১০ সালে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৮.৫ শতাংশে পৌঁছেছিল এবং ২০০৮ সালে বিশ্বব্যাপী আর্থিক সংকটের সময় ৩.১ শতাংশে নেমে গিয়েছিল। এরপরের দশ বছরে, ২০২১ সালে এটি সর্বোচ্চ ৯.১ শতাংশে পৌঁছায় এবং মহামারির সময় -৫.৮ শতাংশে নেমে যায়।
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের মন্তব্য রাজনৈতিক মহলে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে। তিনি বলেন, “বর্তমান সরকারের অধীনে আর্থিক অবস্থা ক্রমশ খারাপের দিকে যাচ্ছে। আমাদের দেশের অর্থনীতির জন্য এটি একটি বিপজ্জনক সংকেত।”
বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১০ সালে ইউপিএ সরকারের অধীনে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৮.৫ শতাংশে পৌঁছেছিল, যা তখনকার সময়ে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক ছিল। কিন্তু বর্তমান সরকারের অধীনে এই প্রবৃদ্ধির হার ছয় শতাংশের নিচে নেমে এসেছে, যা দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ।