নয়াদিল্লি: মঙ্গলবার, ভারতের জরুরি অবস্থার ৫০ তম বর্ষপূর্তিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কংগ্রেসকে তীব্র কটাক্ষ করেছেন। অষ্টাদশ লোকসভার দ্বিতীয় দিনের অধিবেশন শুরুর আগে মোদী নিজের এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে একাধিক টুইট করে এই দিনটির স্মৃতি স্মরণ করিয়ে দেন। মোদী লিখেছেন, “যারা জরুরি অবস্থা জারি করেছিল, তাদের সংবিধানের প্রতি ভালবাসা দেখানোর কোনও অধিকার নেই।”
সোমবার সংসদের প্রথম দিনেই বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র সাংসদরা হাতে সংবিধান নিয়ে সংসদ চত্বরে বিক্ষোভ দেখান। মোদী যখন সংসদের ভিতর শপথ বাক্য পাঠ করতে ওঠেন, তখন রাহুল গান্ধী বেঞ্চে বসে মোদীর উদ্দেশে সংবিধান প্রদর্শন করেন। পরে সংসদ থেকে বেরিয়ে রাহুল গান্ধী বলেন, “মোদী এবং বিজেপি সংবিধানকেই শেষ করতে চান। আমাদের সেই সংবিধানকে রক্ষা করার লড়াই করতে হচ্ছে।” মনে করা হচ্ছে, মঙ্গলবার সেই সংবিধানকে হাতিয়ার করেই কংগ্রেসের বিরুদ্ধে পাল্টা আক্রমণ শানালেন মোদী।
১৯৭৫ সালের ২৫ জুন, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর আমলে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। সাময়িকভাবে সমস্ত নাগরিক অধিকার স্থগিত করা হয় এবং বিরোধী নেতাদের গ্রেফতার করে জেলে পাঠানো হয়। সংবাদমাধ্যমের উপরেও কঠোর নজরদারি আরোপ করা হয়। এই পরিস্থিতি চলেছিল টানা ২১ মাস, ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত। ১৯৭৭ সালের লোকসভা নির্বাচনে ইন্দিরা গান্ধীর নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস পরাজিত হয়।
মোদী তার টুইটে লেখেন, “জরুরি অবস্থার কালো দিন আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, কীভাবে কংগ্রেস মৌলিক স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছিল এবং ভারতের সংবিধানকে পদদলিত করেছিল।” তিনি আরও দাবি করেন, ক্ষমতায় টিকে থাকতে কংগ্রেস সরকার সেই সময় সমস্ত গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে অস্বীকার করেছিল।
এই প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রীর কটাক্ষে কংগ্রেস কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানায়, তা দেখার অপেক্ষায় রয়েছে রাজনৈতিক মহল। বিরোধীরা অভিযোগ করেছেন, মোদী সরকারও সংবিধানকে অবমাননা করছে এবং দেশের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে আঘাত করছে। তবে মোদীর এই মন্তব্যে শাসকদলও কংগ্রেসের বিরুদ্ধে সুর চড়াতে সক্ষম হয়েছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
সোমবারের বিক্ষোভ এবং মঙ্গলবারের প্রতিক্রিয়া স্পষ্টভাবে দেখাচ্ছে, জরুরি অবস্থার স্মৃতি এখনও ভারতের রাজনীতিতে জীবন্ত এবং এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা এখনও রাজনৈতিক অঙ্গনে উষ্ণতা বাড়ায়।