জাতগণনার বিতর্ক নিয়ে নিজের অবস্থান বদল করল ‘রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ’ (আরএসএস)। আগের বিরোধিতা থেকে সরে এসে এবার উন্নয়নের জন্য জাতগণনার প্রয়োজনীয়তা মেনে নিল সংগঠনটি। তবে, সঙ্ঘের তরফে স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়েছে যে এই গণনাকে ভোট-রাজনীতির উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা উচিত নয়।
সোমবার সঙ্ঘের প্রধান মুখপাত্র সুনীল অম্বেডকর জাতগণনার প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘জাতগণনা মানুষের উন্নয়নের চাহিদা পূরণের জন্য প্রয়োজন। তবে এটিকে ভোট-রাজনীতির হাতিয়ার বানানো উচিত নয়।’’ তাঁর বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকারের জন্যও পরামর্শ ছিল। তিনি বলেন, ‘‘সরকারের উচিত তথ্য সংগ্রহের উদ্দেশ্যে জাতগণনা করা। তবে জাতপাতের প্রতিক্রিয়া আমাদের সমাজে একটি সংবেদনশীল বিষয়। জাতীয় সংহতির ক্ষেত্রে এটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন।’’
এই পরিস্থিতিতে, বিহারে চলমান জাতগণনা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলার প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী অক্টোবরের গোড়ার দিকে জাতগণনার উদ্যোগের সমালোচনা করেছিলেন। তিনি তখন বলেছিলেন, ‘‘দেশে বিভাজন ঘটানোর চেষ্টা চলছে।’’ ডিসেম্বরে আরএসএস সরাসরি জাতগণনার বিরোধিতা করেছিল এবং বলেছিল, ‘‘জাতগণনা দেশে সামাজিক বৈষম্য আরও গভীর করবে।’’
টানা বৃষ্টিতে তেলেঙ্গানা ও অন্ধ্রপ্রদেশে মৃত ২৭, সহযোগিতার আশ্বাস প্রধানমন্ত্রী মোদীর
তবে আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত আগেই স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছিলেন যে, তাঁরা তফসিলি জাতি-জনজাতি এবং ওবিসি সংরক্ষণের বিরোধী নন। তিনি জাতপাতের প্রথার ঐতিহাসিক গুরুত্বের কথা উল্লেখ করে বলেছিলেন যে, এটি ভারতীয় সমাজকে পেশা এবং প্রথা অনুযায়ী ভাগ করেছে এবং এই শৃঙ্খলা ভারতের বিভিন্ন শ্রেণিকে এক সূত্রে বেঁধে রেখেছে। তবে এখন সঙ্ঘের পক্ষ থেকে জাতগণনা সমর্থন করা হচ্ছে, যেটি উন্নয়নমূলক পরিকল্পনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে তাঁরা মনে করছেন।
জাতগণনা নিয়ে আরএসএস-এর এই পরিবর্তিত অবস্থান দেশের রাজনৈতিক মহলে আলোড়ন তুলেছে। অনেকেই মনে করছেন, সঙ্ঘের এই অবস্থান জাতীয় রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।