সোমবার (২৭ জানুয়ারি, ২০২৫) বড় ধস নামল ভারতের শেয়ারবাজারে। সেনসেক্স প্রায় ৯০০ পয়েন্ট পড়ে যায় এবং নিফটি ২২,৮০০-এর নীচে নেমে আসে। দিনের সর্বনিম্ন স্তরে সেনসেক্স ৭৫,২৬৭.৫৯ পর্যন্ত গিয়ে ৭৫,৩৬৬.১৭-তে বন্ধ হয়, যা ৮২৪ পয়েন্ট বা ১.০৮ শতাংশ পতন। নিফটি ৫০ ইন্ট্রাডে গ্রাফে ২২,৭৮৬.৯০ ছুঁয়ে ২২,৮২৯.১৫-তে শেষ হয়, যা ২৬৩ পয়েন্ট বা ১.১৪ শতাংশ কম।
মিডক্যাপ ও স্মলক্যাপ শেয়ারের দর আরও বেশি পড়েছে। বিএসই মিডক্যাপ সূচক ২.৬৮ শতাংশ এবং স্মলক্যাপ সূচক ৩.৫১ শতাংশ কমে যায়। বিএসই-তে তালিকাভুক্ত সংস্থাগুলোর বাজার মূলধন আগের সেশনের ₹৪১৯.৫ লাখ কোটি টাকা থেকে কমে ₹৪১০ লাখ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে, ফলে বিনিয়োগকারীদের এক দিনে প্রায় ₹১০ লাখ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
এনএসই-র সব প্রধান সূচক লাল সংকেতে শেষ হয়েছে। নিফটি মিডিয়া, আইটি, মেটাল ও ফার্মা সূচক ৩-৪ শতাংশ কমেছে, আর নিফটি ব্যাংক, অটো, এফএমসিজি ও রিয়েলটি সূচক ১ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
কী কারণে শেয়ারবাজারে বড় পতন?
১. বাজেট নিয়ে উদ্বেগ
বিনিয়োগকারীরা বাজেট ২০২৫-এর দিকেই নজর রাখছেন। বাজেটে রাজস্ব ব্যয় ও ভোক্তা ব্যয় বৃদ্ধির মধ্যে ভারসাম্য রাখার চেষ্টা করা হতে পারে। কিছু বিশ্লেষকের মতে, বাজেট বেশি জনমুখী হলে, আর্থিক শৃঙ্খলা শিথিল হলে বাজার আরও দুর্বল হতে পারে।
২. দুর্বল ত্রৈমাসিক আয়
ভারতীয় সংস্থাগুলোর অক্টোবর-ডিসেম্বর (Q3) ত্রৈমাসিকের আয় প্রত্যাশার তুলনায় দুর্বল এসেছে। এর ফলে বিনিয়োগকারীদের ঝুঁকি নেওয়ার প্রবণতা কমেছে।
৩. বিরাট পরিমাণ বিদেশি মূলধন প্রত্যাহার
গত বছরের অক্টোবর থেকে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ভারতীয় শেয়ারবাজারে ২.৫ লাখ কোটি টাকারও বেশি শেয়ার বিক্রি করেছে। জানুয়ারির ২৪ তারিখ পর্যন্ত তারা ৬৯,০০০ কোটি টাকারও বেশি শেয়ার বিক্রি করেছে।
৪. মার্কিন সুদহার সংক্রান্ত অনিশ্চয়তা
২৮-২৯ জানুয়ারি ফেডারেল ওপেন মার্কেট কমিটির (FOMC) বৈঠক রয়েছে। ২০২৪ সালে মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভ এক শতাংশ সুদহার কমিয়েছিল। তবে সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক তথ্য অনুযায়ী, এই সুদহার কমানোর চক্র শেষ হতে পারে, যা বাজারের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
৫. ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কনীতি নিয়ে উদ্বেগ
বিশ্বের শেয়ারবাজার এখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কনীতির দিকে নজর রাখছে। কানাডা ও মেক্সিকোর পর এবার কলম্বিয়ার উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক বসানোর হুমকি দিয়েছেন তিনি। মার্কিন বাণিজ্য নীতির এই পরিবর্তন বিশ্ব বাজারে অনিশ্চয়তা বাড়াচ্ছে।