Home খবর দেশ নির্বাচনের সময়েই কেন সন্ত্রাস হামলা? প্রশ্ন সিদ্ধারামাইয়ার, তীব্র প্রতিক্রিয়া বিজেপির

নির্বাচনের সময়েই কেন সন্ত্রাস হামলা? প্রশ্ন সিদ্ধারামাইয়ার, তীব্র প্রতিক্রিয়া বিজেপির

siddaramai

দিল্লি বিস্ফোরণ ও বিহার নির্বাচনের দ্বিতীয় দফা ভোট শেষ হওয়ার পরই বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধারামাইয়া। বুধবার এক্স (X)-এ পোস্ট করে তিনি প্রশ্ন তোলেন, “নির্বাচনের সময়েই দেশে সন্ত্রাস হামলার ঘটনা ঘটে কেন?”

তাঁর এই মন্তব্য ঘিরে শুরু হয়েছে তীব্র রাজনৈতিক বিতর্ক। কর্ণাটক বিজেপি সভাপতির বি ওয়াই বিজয়েন্দ্র তাঁর বক্তব্যকে “দায়িত্বজ্ঞানহীন, সংবেদনহীন এবং নীচু মানসিকতার রাজনীতি” বলে আখ্যা দিয়েছেন।

মঙ্গলবার মাইসুরুতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “দেশে কোনওভাবেই বোমা বিস্ফোরণ হওয়া উচিত নয়। নিরপরাধ মানুষ প্রাণ হারাচ্ছেন। তবে এমন ঘটনার সময়কাল লক্ষ্য করলে মনে হয়, এর পেছনে কোনও উদ্দেশ্য থাকতে পারে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা দরকার।”

তিনি আরও বলেন, দিল্লি বিস্ফোরণের প্রভাব বিহার নির্বাচনে পড়তে পারে এবং “তা বিজেপির বিরুদ্ধে যাবে।” একই দিনে রাজ্যের মন্ত্রী প্রিয়ঙ্ক খারগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে আক্রমণ করে বলেন, “স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে অমিত শাহই সবচেয়ে অযোগ্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এই বিস্ফোরণ গোয়েন্দা ব্যর্থতার ফল।”

বিজেপির পাল্টা প্রতিক্রিয়া

বিজেপি নেতা বিজয়েন্দ্র বলেন, তদন্ত এখনও চলছে, অথচ মুখ্যমন্ত্রী ও কংগ্রেস নেতারা রাজনৈতিক মন্তব্য করে তদন্ত প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন। তিনি বলেন, “এটি শুধু নিন্দনীয় নয়, ভয়ঙ্করও। এমন সংবেদনশীল সময়ে গোটা দেশকে একসঙ্গে কথা বলা উচিত, অথচ কংগ্রেস নিম্নস্তরের রাজনীতি করছে।”

তিনি আরও বলেন, “জাতীয় নিরাপত্তা, নাগরিকের প্রাণহানি, শহিদদের ত্যাগ— এসব বিষয় কংগ্রেসের কাছে শুধু রাজনৈতিক অস্ত্র। ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার সময়ও তারা পাকিস্তানের প্রচারে সাহায্য করেছিল।”

বিজয়েন্দ্রের দাবি, সিদ্ধারামাইয়ার মন্তব্য কংগ্রেসের “বিরোধী মনোভাবাপন্ন রাজনীতির ধারাবাহিকতা।” তিনি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে মন্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন এবং সতর্ক করেছেন, “কর্ণাটকের মানুষও এর জবাব দেবে।”

দিল্লি বিস্ফোরণ তদন্তের অগ্রগতি

এদিকে, দিল্লির লালকেল্লার সামনে সোমবার সন্ধ্যার বিস্ফোরণে এখনও পর্যন্ত ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে, আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন। তদন্তে জানা গিয়েছে, বিস্ফোরণে ব্যবহৃত হুন্ডাই আই২০ গাড়িটির সঙ্গে যুক্ত সন্দেহভাজনরা আরেকটি লাল রঙের ফোর্ড ইকোস্পোর্ট ব্যবহার করছিল।

দিল্লি পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ফারিদাবাদের এক গাড়ি বিক্রেতা, রয়্যাল কার প্লাজা-র মালিক অমিতকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তিনি সেই আই২০ গাড়ি বিক্রিতে সাহায্য করেছিলেন বলে অভিযোগ। তদন্তকারীরা এখন গাড়ির মালিকানার পুরো চেইন ও লেনদেনের নথি খতিয়ে দেখছেন।

হরিয়ানা ও উত্তরপ্রদেশ পুলিশের সঙ্গেও যৌথ অভিযান চলছে। রাজধানী ও আশপাশের রাজ্যে ব্যবহৃত সেকেন্ডহ্যান্ড গাড়ি বিক্রেতাদের রেকর্ড যাচাইয়ের নির্দেশ দিয়েছে দিল্লি পুলিশ।

এক পুলিশ আধিকারিক জানান, “সব থানাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সাম্প্রতিক সময়ে বিক্রি হওয়া গাড়ির নথি যাচাই করতে, বিশেষ করে দিল্লি, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ ও জম্মু-কাশ্মীরের ক্রেতাদের।”

কেন্দ্রের বার্তা: দোষীদের কেউ রেহাই পাবে না

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছেন, এই ষড়যন্ত্রের শিকড় পর্যন্ত পৌঁছবে কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থাগুলি। একই সুরে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও বলেন, “দোষীদের কাউকে ছাড়া হবে না।”

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version