আইপিএল জয়ের উল্লাসের আবহে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। বেঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের বাইরে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হল অন্তত সাত জনের। আহত হয়েছেন প্রায় ৫০ জন। তাঁদের মধ্যে অনেকেই আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি।
মঙ্গলবার রাতে আইপিএল ট্রফি জয়ের পর বুধবার বেঙ্গালুরুতে আয়োজন করা হয়েছিল রাজকীয় উৎসবের। দুপুরের পর থেকেই বিরাট কোহলি ও রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর দলের ট্রফি প্রদর্শনের অনুষ্ঠান ছিল চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে। সেই উপলক্ষে সকাল থেকেই ভিড় জমতে শুরু করে। বিকেলের দিকে তা রূপ নেয় জনসমুদ্রে।
স্টেডিয়ামে প্রবেশের অনুমতি ছিল শুধুমাত্র যাঁদের বিশেষ পাস ছিল তাঁদের। কিন্তু হাজার হাজার মানুষ প্রবেশের চেষ্টা করেন গেট ভেঙে। বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে বাধ্য হয়ে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। হুড়োহুড়িতে রাস্তায় পড়ে গিয়ে পদপিষ্ট হন বহু মানুষ। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, সিপিআর দেওয়া হয় রাস্তার মধ্যেই।
এই ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যেই নির্ধারিত সময়মতো ট্রফি উদ্যাপন অনুষ্ঠান চালিয়ে যাওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে রাজ্য প্রশাসনের বিরুদ্ধে। মাঠের ভিতরে যখন বিরাট কোহলিদের সংবর্ধনা চলছে, শিল্পীরা চোখ বন্ধ করে সংগীত পরিবেশন করছেন, তখন স্টেডিয়ামের বাইরে আহতদের হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে অ্যাম্বুল্যান্সে।
ঘটনার খবর পেয়ে কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী ডি কে শিবকুমার ঘটনাস্থলে যান। জানান, ‘‘প্রচুর ভিড় হয়েছিল। আমরা ৫০০০ পুলিশ মোতায়েন করেছিলাম, তবে আরও বাড়ানো হবে। রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত কিছু বলা যাচ্ছে না।’’ তবে বিতর্কের কেন্দ্রে উঠে এসেছেন তিনি, কারণ পরে তাঁকেও দেখা গিয়েছে কোহলিদের পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে, স্টেডিয়ামের মাঝখানে মঞ্চে।
স্টেডিয়ামে ঢোকার টিকিট না থাকা দর্শকদের না আসার অনুরোধ আগেই জানিয়েছিল বেঙ্গালুরু পুলিশ। কিন্তু সেই অনুরোধে কেউ কর্ণপাত করেননি। ফলাফল, অপার নিয়ন্ত্রণহীনতা এবং মৃত্যু।
দুর্ঘটনার পরে মেট্রো স্টেশনগুলি বন্ধ করে দেওয়া হয়, স্টেডিয়ামে যাওয়ার রাস্তাগুলি অবরুদ্ধ করা হয়। কিন্তু প্রশ্ন থেকেই যায়—এই বিপুল জনসমাগমের আশঙ্কা থাকলেও কেন পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি? আর কেনই বা এই দুর্ঘটনার মধ্যেও থামানো হল না রাজকীয় অনুষ্ঠান?