ডাক্তারির সর্বভারতীয় প্রবেশিকা পরীক্ষা নিট-এ অনিয়মের অভিযোগে কেন্দ্রীয় সরকার এবং জাতীয় পরীক্ষা নিয়ামক সংস্থা (এনটিএ)-র কাছে জবাব তলব করে ফের নোটিস দিল সুপ্রিম কোর্ট। নিট-এ অনিয়ম নিয়ে একাধিক মামলা দায়ের হয়েছে শীর্ষ আদালতে। পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস এবং একাধিক অনিয়মের অভিযোগ তুলে একটি মামলা দায়ের হয় আদালতে। মঙ্গলবার তারই শুনানি ছিল সুপ্রিম কোর্টে।
মামলার শুনানিতে নিট-এ অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ ছিল স্পষ্ট। বিচারপতি বিক্রম নাথের বেঞ্চ জানায়, “যদি ০.০০০১ শতাংশ গাফিলতিও কারও কোনও অংশে হয়ে থাকে, তবে তা সবিস্তারে দেখা উচিত।” বিচারপতির বেঞ্চ আরও উল্লেখ করেন, পরীক্ষার্থীদের পরিশ্রমের দিকটি অস্বীকার করা যায় না। সংবাদ সংস্থা এএনআই-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ, “ছোটরা পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিল। আমরা তাদের পরিশ্রমকে অস্বীকার করতে পারি না।” বিচারপতি নাথ এনটিএ-র কৌঁসুলির উদ্দেশে বলেন, “আশা রাখি সময়ে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে।”
নিট-এ প্রশ্নপত্র ফাঁস এবং ঢালাও নম্বর দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। একসঙ্গে ৬৭ জনের প্রথম স্থান পাওয়া ওই ঢালাও নম্বর দানের ফল বলেই মনে করছেন অনেকে। এই নিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন পরীক্ষার্থীদের একাংশ। সরব হয় বিরোধী দলগুলিও।
চলতি বিতর্কের মধ্যে সম্প্রতি কেন্দ্র সুপ্রিম কোর্টে জানিয়েছে, নিট-এ যে ১৫৬৩ জন পরীক্ষার্থী গ্রেস নম্বর বা বাড়তি নম্বর পেয়েছিলেন, তাঁদের ওই অতিরিক্ত নম্বর বাতিল করা হচ্ছে। কেন্দ্র আরও জানিয়েছে, ওই পরীক্ষার্থীরা চাইলে আবার পরীক্ষা দিতে পারবেন। আগামী ২৩ জুন সেই পরীক্ষা হবে।
এই সিদ্ধান্তের পরেও পরীক্ষার্থীদের একাংশের মধ্যে অসন্তোষ রয়ে গেছে। তাঁদের দাবি, পরীক্ষা প্রক্রিয়ার সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। এনটিএ-র এই পদক্ষেপ কতটা কার্যকর হবে তা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই।
এই পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্টের নোটিস কেন্দ্রীয় সরকার এবং এনটিএ-র উপর চাপ বাড়িয়েছে। আদালতের নির্দেশ মেনে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন এনটিএ-র কৌঁসুলি। এখন দেখার বিষয়, আদালতের নির্দেশ মেনে কত দ্রুত এবং কতটা কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া হয় এই অনিয়মের বিরুদ্ধে।