সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ বুধবার বুলডোজার নীতির বিরুদ্ধে এক গুরুত্বপূর্ণ রায় ঘোষণা করেছে। বিচারপতি বিআর গভই এবং বিচারপতি কেভি বিশ্বনাথনের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে, শুধুমাত্র অভিযোগের ভিত্তিতে কিংবা দোষী সাব্যস্ত না করেই কোনও ব্যক্তির বাড়ি ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক। বেঞ্চ জানিয়েছে, কোনও পুলিশ বা প্রশাসন সংস্থা কারও দোষ প্রমাণ না হওয়া পর্যন্ত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারে না।
বিচারপতি গভই বলেন, “বাসস্থানের অধিকার সংবিধানের ১৯ এবং ২১তম অনুচ্ছেদে সুরক্ষিত, এবং এই অধিকার মৌলিক। মানুষকে অন্যায়ভাবে এই অধিকার থেকে বঞ্চিত করা সংবিধান পরিপন্থী।” বেঞ্চ এ-ও উল্লেখ করেছে যে অপরিকল্পিতভাবে নির্দিষ্ট বাড়ি ভেঙে ফেলা এবং একই ধরনের অন্য কাঠামোকে রেয়াত করার ঘটনা ক্ষমতার অপব্যবহার নির্দেশ করে।
রায় অনুযায়ী, কোনও কাঠামো ভাঙার আগে ১৫ দিনের শোকজ নোটিস দেওয়া হবে, এবং বিষয়টি জেলা প্রশাসক নিয়োগিত নোডাল অফিসারের তত্ত্বাবধানে বিবেচিত হবে। সংবিধানের ১৪২ ধারার অধীনে এই নির্দেশিকা জারি হয়েছে।
এর আগে, গত ১ অক্টোবর, অন্তর্বর্তী আদেশে বেঞ্চ জানায়, পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত কোনও বাড়ি বা দোকান বুলডোজার দিয়ে ভাঙা যাবে না। কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা জানান, বুলডোজার নীতি কেবল অবৈধ নির্মাণ প্রমাণিত হলে প্রয়োগ করা হয়। বিচারপতিরা প্রতিউত্তরে জানান, ভবিষ্যতে বাড়ি ভাঙার জন্য নির্দিষ্ট নিয়মবিধি তৈরি হবে।
বিরোধী দলগুলি অভিযোগ করেছে, বিজেপি পরিচালিত রাজ্য সরকারগুলি বুলডোজার ব্যবহার করে বেছে বেছে তাদের বিরোধীদের বাড়ি ভেঙে দিচ্ছে। বিশেষত উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের প্রশাসনকে ‘বুলডোজার বাবা’ নামে কটাক্ষ করা হয়। মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগও তুলেছেন সমালোচকরা।
আরও পড়ুন: ভোট কেন্দ্রে কর্তব্যরত সরকারি আধিকারিককে কষিয়ে থাপ্পড়, উপনির্বাচনে তুলকালাম কাণ্ড রাজস্থানে