নয়াদিল্লি: আর জি কর ধর্ষণ-হত্যার মামলার বিচারপ্রক্রিয়া পশ্চিমবঙ্গ থেকে অন্য রাজ্যে পাঠানোর আর্জি খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চের কাছে যখন এই দাবি মৌখিক ভাবে করা হয় তখন বেঞ্চ মৌখিক ভাবেই জানিয়ে দেয় তারা এ ধরনের কোনো নির্দেশ দিচ্ছে না।
গত আগস্ট মাসে কলকাতার আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে জুনিয়র ডাক্তারকে ধর্ষণ-হত্যার ঘটনা সংক্রান্ত স্বতঃপ্রণোদিত মামলাটির শুনানি চলছিল বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পার্ডিওয়াল এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রকে গঠিত বেঞ্চে।
শুনানি চলার সময় একজন কৌঁসুলি পশ্চিমবঙ্গ থেকে মামলা অন্য রাজ্যে স্থানান্তরণের আর্জি পেশ করেন। তিনি বলেন, পশ্চিমবঙ্গে যে ‘বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি’ চলছে তার প্রেক্ষিতে রাজ্যে চলা আর জি কর মামলা রাজ্যের বাইরে পাঠানো উচিত। তাঁর আর্জির জবাবে প্রধান বিচারপতি বলেন, “মণিপুরের ক্ষেত্রে আমরা রাজ্যের বাইরে মামলা পাঠাতে বলেছি। কিন্তু এখানে আমরা সে রকম কিছু করব না। এ ধরনের বদলি হবে না।”
একজন কৌঁসুলি বলেন, “পশ্চিমবঙ্গের জনগণ রাজ্যের বিচারব্যবস্থা ও পুলিশের উপর আস্থা হারিয়েছেন”। প্রধান বিচারপতি তাঁকে ধমকে বলেন, “জনগণের কথা বলবেন না…আপনারা কাদের হয়ে হয়ে মামলা লড়ছেন? এ রকম সাধারণ বিবৃতি দেবেন না। আদালতেও ক্যান্টিনের খোশগল্প চলছে!”
আর-একজন কৌঁসুলি বলেন, সিবিআই যথাযথ তদন্ত করেনি। রাজ্য পুলিশ তদন্ত করে যা পেয়েছে তাকেই অনুমোদন করেছে। প্রধান বিচারপতি বলেন, নিম্ন আদালতের বিচারপতির ক্ষমতা আছে আরও তদন্ত চালানোর আদেশ দেওয়ার। সুপ্রিম কোর্ট নিম্ন আদালতের ক্ষমতায় হস্তক্ষেপ করবে না।
আর জি কর ঘটনার সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে সিবিআই জানায়, ঘটনায় অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়ের বিরুদ্ধে শিয়ালদহের অতিরিক্ত দায়রা বিচারক গত ৪ নভেম্বর চার্জ গঠন করেছে এবং ১১ নভেম্বর আবার শুনানি শুরু করার দিন ধার্য হয়েছে।
ডাক্তারদের নিরাপত্তা কী ভাবে বাড়ানো যায় সে সম্পর্কে পরামর্শ দেওয়ার জন্য আদালত যে ন্যাশনাল টাস্ক ফোর্স (এনটিএফ) গঠন করেছে, সেই টাস্ক ফোর্স তাদের রিপোর্ট পেশ করে। এনটিএফ-এর রিপোর্টের কপি মামলায় জড়িত সমস্ত পক্ষের কাছে এবং বিভিন্ন রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মুখ্যসচিবদের কাছে পাঠানোর নির্দেশ দেয় উচ্চ আদালত।