হাথরস: প্রায় দু’দিন পরে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হলেন নির্যাতিতার পরিবার। ন্যায় বিচারের দাবি তুলে সাংবাদিকদের সামনে তাঁরা একে একে উগরে দিলেন পুলিশ-প্রশাসনের ভূমিকার কথা।
নির্যাতিতার দাদা বলেন, “আমরা জানতে চাই, সে দিন কার মৃতদেহ পোড়ানো হচ্ছিল? আর সেটা যদি আমাদের বোনের হয়, তা এলে কেন এ ভাবে পোড়ানো হল? আমরা পুলিশ-প্রশাসনের প্রত্যেকের কাছে আবেদন করেছিলাম, শেষ বারের মতো তাঁকে দেখতে দেওয়ার”।
সংবাদ মাধ্যমকে গ্রামে ঢোকার অনুমতি দেওয়ার পর মৃত বছর কুড়ির দলিত তরুণীর পরিবার পুলিশ-প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন। তরুণীর দাদা সংবাদ সংস্থা এএনআই-এর কাছে বলেন, “আমরা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট চেয়েছিলাম। তখন তাঁরা বলেন, আপনারা ইংরাজি পড়তে পারেন না, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট বুঝতে পারবেন না”।
একই সঙ্গে তিনি বলেন, “শেষ দু’দিন ধরে আমরা বাড়ির বাইরে বেরোতে পারিনি। আমরা এখনও আতঙ্কে রয়েছি। পুলিশ সবসময় বাড়ির ভিতরে রয়েছে। আমাদেরও তো কিছু ব্যক্তিগত বিষয় রয়েছে। শুধু তাই নয়, প্রশাসনের কর্তারা এসে আমাদের মোবাইল ফোন দেখাতে বলেন। শেষ দু’দিন বাইরের জগতের সঙ্গে যোগাযোগের এক মাত্র অবলম্বন ছিল এটাই”।
পরিবারের আর এক সদস্য বলেন, “গ্রাম অধিকারীর মাধ্যমে বিষয়টা মিটমাট করে নেওয়ার জন্য আমাদের চাপ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমরা এর বিচার চাই”।
গ্রামে সংবাদ মাধ্যমের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্য স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে এক পুলিশকর্তার মন্তব্যে। এসিপি প্রকাশ কুমার বলেন, “যত দিন না বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) তদন্ত শেষ করছে, তত দিন সংবাদ মাধ্যমের প্রবেশ নিষেধ”।
গত বৃহস্পতিবার হাথরসের নির্যাতিত মৃত তরুণীর পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। ‘অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোরতম শাস্তি এবং সমস্ত রকমের সহযোগিতা’র কথা জানান তিনি। জানা যায়, নির্যাতিতার পরিবারকে ২৫ লক্ষ টাকার আর্থিক ‘ক্ষতিপূরণ’, একটি বাড়ি এবং পরিবারের একজন সদস্যকে সরকারি চাকরির প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়।
পরিবারের সদস্যদের দাবি, “প্রশাসনের তরফে কেউ পাশে দাঁড়ানোর কথা বলেনি, টাকা অন্য অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেওয়ার কথা বলেছিলেন জেলাশাসক। সত্য উদ্ঘাটনের ভয়েই সংবাদ মাধ্যমকে বাধা দেওয়া হয়েছে”।
আরও পড়তে পারেন: ফের হাথরসের পথে রাহুল-প্রিয়ঙ্কা
প্রসঙ্গত, শনিবার কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস প্রতিনিধি দল পৌঁছানোর আগেই নির্যাতিতার বাড়িতে পৌঁছান উত্তরপ্রদেশের অতিরিক্ত মুখ্য স্বরাষ্ট্রসচিব অবনীশ অবস্থি এবং ডিজিপি এইচসি অবস্থি। (উপরের ছবিতে)