ওয়েবডেস্ক: রাজ্যের শেষ পঞ্চায়েত নির্বাচনেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে বামফ্রন্ট বা কংগ্রেস নয়, ইদানীং প্রধান বিরোধী দলের আসন অধিকার করে নিয়েছে বিজেপি। স্বাভাবিক ভাবেই তৃণমূল এবং বিজেপি, উভয় দলের সঙ্গেই সমানে লড়তে হবে বাম-কংগ্রেসকে। এমনই মত প্রদেশ কংগ্রেসের বৃহত্তর অংশের। কিন্তু ভিন্ন মতও খুব একটা দুর্বল নয়। সেখানেও আছেন বেশ কয়েক জন সাংসদ-বিধায়ক। শুক্রবার রাহুল গান্ধীর সঙ্গে জোট নির্ধারণের বৈঠকে বসার আগেই একটি অংশ যেমন তৃণমূলের হাত ধরার আর্জি নিয়ে পৌঁছে গিয়েছিলেন সনিয়া গান্ধীর কাছে, তেমন অন্য একটি অংশ আবার বামেদের সঙ্গে জোটের যৌক্তিকতা তুলে ধরে হাইকম্যান্ডের কাছে পাঠিয়েছে ৯ পাতার চিঠি। তা হলে কোন পক্ষের মতকে অগ্রাধিকার দিতে চলেছেন দিল্লি নেতৃত্ব।
কংগ্রেস সাংসদ আবু হাসেম খান-সহ একাধিক বিধায়কের দাবি, বিজেপি-কে ঠেকাতে তৃণমূলের সঙ্গে যাওয়া ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই। আবার দলের সাধারণ সম্পাদক ওমপ্রকাশ মিশ্র দিল্লিকে লেখা চিঠিতে উল্লেখ করেছেন, কী ভাবে ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বামফ্রন্টের সঙ্গে জোট করে সাফল্য পেয়েছে প্রদেশ কংগ্রেস। উল্লেখ্য, সে বার বাম-কংগ্রেসের প্রাপ্ত ভোটের হার ছিল প্রায় ৩৯ শতাংশ। অন্য দিকে ৪৪ জন প্রার্থী ‘হাত’ প্রতীকে জয়ী হয়েছিলেন।
তবুও বাম-সঙ্গে আগ্রহীদের নিবৃত্ত করা এ মুহূর্তে খুব একটা সহজ কাজ নয় রাহুল গান্ধীর পক্ষে। ২০১৯ লোকসভা ভোটের দিকে তাকিয়ে দেশজোড়া বিজেপি-বিরোধী জোট গড়ে তোলার স্বার্থে তাঁর কাছে বামদলগুলির থেকে খুব একটা কম গুরুত্বপূর্ণ নন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিশেষ করে তেলঙ্গনার মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রশেখর রাও এবং ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী বিজু প়ট্টনায়েককে পাশে পেতে হলে রাহুলের সব থেকে বেশি প্রয়োজন মমতার সাহচর্য।
প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের কথায় স্পষ্ট, বামফ্রন্টের সঙ্গে ফের জোটে যাওয়া মানে সাংগঠনিক ক্ষয় অবধারিত। সে ক্ষেত্রে আর হাফডজন সাংসদ-বিধায়ক তৃণমূলে যোগ দেওয়ার জন্য পা বাড়িয়ে বসে আছেন। আবার শুধু মাত্র লোকসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে তৃণমূলের সঙ্গে জোট করলে যে ২০১১-এর পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে, সেই আশঙ্কাও পুরোমাত্রায় থেকে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: পৃথক ভাবে প্রত্যেক প্রদেশ কংগ্রেস নেতার বক্তব্য শুনলেন রাহুল গান্ধী
ওয়াকিবহাল মহল স্বাভাবিক ভাবেই ধারণা করছে, শুক্রবারের এই একটা বৈঠকে হয়তো ‘মীমাংসা’ অধরাই থেকে যেতে পারে! যে কারণে শুক্রবার রাহুল উভয় পক্ষের বক্তব্য মন দিয়ে শুনে ভাঙন ঠেকানোর জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দিলেও লোকসভার জোট নিয়ে তেমন কোনো সিদ্ধান্তের কথা জানাননি।