ট্রেন সফরও এবার পেতে চলেছে বিমানের ছোঁয়া। শীর্ষ রেল বোর্ড সূত্রে খবর, চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই ট্রেনে টিকিট বুকিংয়ের সময় যাত্রীরা নিজেদের পছন্দমতো আসন বেছে নেওয়ার সুযোগ পাবেন। বিমানের মতোই ‘সিট সিলেকশন’-এর এই নতুন সুবিধা আনতে প্রস্তুত রেল মন্ত্রক।
কিন্তু এই সুবিধা কতটা যাত্রীবান্ধব হবে, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন যাত্রীরা। বিমানে সিট বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে যেভাবে অতিরিক্ত টাকা গুনতে হয়, ট্রেনেও কি তেমনই কিছু হতে চলেছে? মঙ্গলবার থেকেই শর্তসাপেক্ষে রেলের ভাড়া বৃদ্ধি করেছে কেন্দ্র। তাই নতুন পরিষেবার আড়ালে যাত্রীদের কাছ থেকে বাড়তি রাজস্ব আদায়ের আশঙ্কা করছে অনেকেই।
যদিও, রেল বোর্ডের একাংশের দাবি, এই পরিকল্পনার উদ্দেশ্য কখনওই যাত্রীদের পকেটে অতিরিক্ত চাপ দেওয়া নয়। বরং, প্রযুক্তির মাধ্যমে যাত্রী পরিষেবা উন্নত করাই মূল লক্ষ্য। তাদের মতে, রেলের ভাড়া এখনও বিমানের তুলনায় অনেকটাই কম এবং নতুন পরিষেবার ক্ষেত্রে যাতে সাধারণ মানুষ আর্থিকভাবে বিপাকে না পড়েন, সেদিকে নজর থাকবে। মধ্যবিত্ত এবং নিম্নবিত্তদের স্বার্থেই ট্রেন পরিচালনার নির্দেশ রয়েছে মোদি সরকারের তরফে।
রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব সম্প্রতি রিজার্ভেশন সিস্টেমের উন্নয়ন এবং আসন সংরক্ষণের একাধিক বিষয়ে বৈঠক করেছেন। সেই বৈঠক থেকেই আসন বেছে নেওয়ার মতো পরিষেবার পরিকল্পনা গৃহীত হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
এদিকে, সংরক্ষিত শ্রেণির যাত্রী তালিকা প্রকাশ নিয়েও বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল বোর্ড। নতুন নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, সকাল ৫টা থেকে দুপুর ২টার মধ্যে যেসব দূরপাল্লার ট্রেন ছাড়বে, সেগুলির প্রথম সংরক্ষিত তালিকা আগের রাত ৯টার মধ্যেই প্রকাশ করা হবে। অন্যদিকে, দুপুর ২টার পর এবং ভোর ৫টার আগে যেসব ট্রেন ছাড়বে, সেগুলির তালিকা ট্রেন ছাড়ার ৮ ঘণ্টা আগে প্রকাশ পাবে। এতদিন এই সময়সীমা ছিল ৪ ঘণ্টা।
সব মিলিয়ে পরিষেবা উন্নয়নের লক্ষ্যে একের পর এক পদক্ষেপ নিচ্ছে রেল। তবে ‘নতুন সুবিধা’র খবরে যাত্রীদের মনে বাড়তি খরচের আশঙ্কা তৈরি হওয়াটা স্বাভাবিক। এখন দেখার, সরকার সেই আশঙ্কা দূর করতে কী ব্যাখ্যা দেয়।