কেন্দ্রীয় বাজেট
বাড়ল বইয়ের দাম, বাজেটে সস্তা হল প্রতিরক্ষা সর়ঞ্জাম

ওয়েবডেস্ক: বাজেট প্রস্তাব পেশ করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। সুদূরপ্রসারী চিন্তাভাবনা নিয়ে একাধিক পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ তাঁর ঢালাও প্রশংসা করেছেন। বিরোধী দলগুলি সে সবের পথ মাড়ায়নি। তবে উল্লেখ্যনীয় ভাবে, প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের দাম কমা এবং আমদানি করা ছাপা বইয়ের দাম বাড়ার ঘোষণা নিয়ে তির্যক মন্তব্যও উঠে আসছে।
সুইডেনের ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের একটি প্রতিবেদেনে জানানো হয়েছিল, যুদ্ধাস্ত্র কেনার দিক থেকে বিশ্বের অন্যান্য দেশকে পিছনে ফেলেছে ভারত। ওই সমীক্ষা রিপোর্টের মতে, ২০১২-১৬ সালের মধ্যে পৃথিবীতে মোট যে পরিমাণ অস্ত্র আমদানি হয়, তার মধ্যে ভারত একাই কিনেছে ১৩ শতাংশ। এই তথ্য প্রকাশিত হওয়ার পর তেমন কোনো প্রতিবাদ করতে দেখা যায়নি সরকারি দলকে। তবে অস্ত্র আমদানি কমিয়ে স্বনির্ভর হওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে বিজেপি শাসিত কেন্দ্রীয় সরকার।
সম্প্রতি জানা গিয়েছে, ১১৪টি অত্যাধুনিক যুদ্ধ বিমান কিনতে চায় ভারত, খরচ প্রায় ১৫ বিলিয়নের মতো। বোয়িং কোম্পানি, ল্যাকহিড মার্টিন কর্পোরেশন এবং সুইডেনের সাব এবি এ ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলেও শোনা যাচ্ছে। তবে একই সঙ্গে স্বনির্ভর হওয়ার লড়াইও চলছে জোর কদমে।
এ দিনের বাজেট প্রস্তাব থেকে জানা গিয়েছে, প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের দাম কমছে। একই ভাবে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরিতে প্রয়োজনীয় উপকরণেরও দাম কমছে। এখন এই দুই ক্ষেত্রের সঙ্গে জড়িত বা এই দুই ক্ষেত্র থেকে সুবিধা পাবেন, এমন ভারতবাসীর পরিমাণ ঠিক কত শতাংশ, সেটাও গবেষণার বিষয়।
মধ্যবিত্তের ভার লাঘব করা হয়েছে বলে দেদার ডাক বাজানো চলেছে বাজেট প্রস্তাব পেশ করার পর থেকেই। গৃহঋণের উপর ছাড়, আয়করের ছাড়ের পরিমাণ বা ঊর্ধ্বসীমা অপরিবর্তিত রাখা ইত্যাদি নিয়ে প্রশংসায় পঞ্চমুখ অর্থনীতিবিদদের একাংশ। অথচ একই দিনে যখন পেট্রোল-ডিজেলের দাম বাড়ানোর কথা ঘোষণা করা হয়, তখন সেটা কোন বিত্তের মানুষের উপকারে আসে, সেটাই পরীক্ষা প্রার্থনীয় বিষয়।
আন্তঃশুল্ক এবং রোড সেসের জন্য পেট্রোল-ডিজেলের মতো অতিপ্রয়োজনীয় জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে এ বারের বাজেটে। দাম বাড়ছে লিটার প্রতি পেট্রোল এবং ডিজেলে যথাক্রমে ২.৫০ টাকা এবং ২.৩০ টাকা। জ্বালানি তেলের দাম বাড়লে থেমে থাকবে না অন্য যে কোনো পণ্যের দামও। পরিবহণ ব্যয় বাড়লে দাম বাড়বে নিত্যপণ্যের।
দাম বাড়ছে ছাপা বই এবং নির্দেশিকা বা ম্যানুয়েলের। এ দিনের বাজেটেই ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী। উচ্চশিক্ষাকে আন্তর্জাতিক মানের করে তুলতে শিক্ষাখাতে ৪০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছেন তিনি। ছাপা বইয়ের দাম বাড়বে, শিক্ষাখাতে বরাদ্দও বাড়বে, এটাই তো ভারসাম্য!
কেন্দ্রীয় বাজেট
কোথায় দিশা, বাজেটে ব্যাগ ভরতি হতাশা!

জয়ন্ত মণ্ডল: প্রায় আড়াই ঘণ্টা সময় ধরে ২০২০-২১ অর্থবর্ষের বাজেট প্রস্তাব পেশ করে রেকর্ড গড়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। সরকারি ভাবে স্বীকার করা হোক না হোক, বাজারের দশা থেকে স্পষ্ট অর্থনৈতিক মন্দা কাটিয়ে উঠতে এ বারের বাজেট চরম প্রত্যাশা জাগিয়েছিল দেশের প্রতিটা ক্ষেত্রকেই। কিন্তু উচ্চতর মানের শিক্ষা, অনলাইন শিক্ষা ইত্যাদির মাধ্যমে চাকরির ক্ষেত্রে জোর দেওয়ার কথা বলা হলেও অর্থমন্ত্রীর বাজেট প্রস্তাবে বিস্তৃত ক্ষেত্রে কর্মসংস্থানের কোনো উল্লেখই করা হল না।
বাজেট প্রস্তাব পেশের শুরুতেই অর্থমন্ত্রী স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন, করকাঠামোর পুনর্বিন্যাসই এ বারের বাজেটে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বাজেটের ক’দিন আগে থেকেই কর কাঠামোর পুনর্গঠন নিয়ে ব্যাপক প্রত্যাশা সৃষ্টি হয়েছিল সাধারণ মানুষের মনে। মনমোহনী করে তুলতে এ দিন বাস্তবিক ভাবেই চমকপ্রদ করকাঠামো ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী। পড়ুন নীচের লিঙ্কে ক্লিক করে-
আয়করে বড়োসড়ো ছাড়! এক নজরে দেখে নিন প্রস্তাবিত পর্যায় এবং হার
তবে একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, পুরনো হারে কর দিলে মিলবে ছাড়। নতুন হারে দিলে কোনো ছাড় মিলবে না।
কিন্তু শিল্পায়ন এবং প্রত্যক্ষ কর্মসংস্থান নিয়ে তেমন কোনো আশার বাণী উঠে আসেনি বাজেট প্রস্তাবে। উদ্ভাবনী উদ্যোগ হিসাবে স্টার্ট-আপদের টার্নওভারের সীমা ২৫ থেকে বাড়িয়ে ১০০ কোটি করার কথা বলা হয়েছে। জানানো হয়েছে, কোম্পানিগুলিকে ডিভিডেন্ট ডিস্ট্রিবিউশন ট্যাক্স দিতে হবে না।

এই ব্যাগে ছিল ২০১৯-২০ অর্থবর্ষের বাজেট। যেখানে বৃদ্ধির প্রস্তাবিত হার ছিল ৭ শতাংশ। এখন যা ঠেকতে চলেছে ৫ শতাংশে। এ বারের বাজেটে জিডিপি বৃদ্ধির প্রস্তাবিত হার ৬-৬.৫ শতাংশ। বাস্তবে কোথায় গিয়ে ঠেকে, সেটাই দেখার!
অর্থনীতির সাদামাটা সমীকরণ- কর্মসংস্থান বাড়লে মানুষের হাতে টাকা আসবে। তৈরি হবে ক্রেতা। বাজারে চাহিদা থাকলেই চড়চড়িয়ে বাড়বে উৎপাদন। হাল ফিরবে ঝিমিয়ে পড়া অর্থনীতির। স্বাভাবিক ভাবে পরিকাঠামোয় বরাদ্দ বৃদ্ধি করলেই কর্মসংস্থান বাড়তে বাধ্য। তখনই তো আসে করছাড় বা কর পুনর্বিন্যাসের প্রসঙ্গ।
সরকারি পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট, বিগত ৪৫ বছরে কর্মসংস্থান তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। রেকর্ড গড়েছে বেকারত্ব। তবে এ বারের বাজেটে শিল্প এবং বাণিজ্যে উন্নয়নের জন্য ২৭ হাজার ৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। এরই মধ্যে রয়েছে ১০০টি বিমানবন্দর নির্মাণ। বিনিয়োগ নিয়ে স্পষ্ট কোনো দিশা অধরা। সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, গত চার বছরে বিনিয়োগের বৃদ্ধি ঠেকেছে ১ শতাংশে। সেই জায়াগায় দাঁড়িয়ে কোনো সদুত্তর মেলেনি এ বারের বাজেট প্রস্তাবে।
আসা যেতে পারে করকাঠামোয়। এমনিতেই ২০ বছরের মধ্যে সব থেকে বেশি হ্রাস পেতে চলেছে চলতি বছরের প্রত্যক্ষ কর সংগ্রহ। জানা গিয়েছে, চলতি ২০১৯-২০ আর্থিক বছরের জন্য নরেন্দ্র মোদী নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার প্রত্যক্ষ কর আদায়ের লক্ষ্য হিসাবে স্থির করেছিল ১৩.৫ লক্ষ কোটি টাকা। গত বছরের তুলনায় কর আদায়ের লক্ষ্য পরিমাণে ১৭ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়। চলতি অর্থবছরের মেয়াদ শেষ হবে আগামী ৩১ মার্চ।
ও দিকে সরকারি ভাঁড়ারেও টান পড়েছে। বড়োসড়ো ঘাটতি ধরা পড়েছে রাজকোষে। রাজস্ব আদায়ের সব থেকে বড়ো মাধ্যম জিএসটি নিয়ে চলমান বিতর্ক সেখানেও হতাশা ছুড়ে দিচ্ছে প্রতিনিয়ত। সেই জায়গায় প্রত্যক্ষ কর (আয়কর এবং কর্পোরেট কর) থেকে আয় না বাড়িয়ে গত্যন্তর নেই সরকারের।
সরকারি আয় বাড়াতে এলআইসির মতো রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থায় সরকারি অংশীদারিত্ব (বড়ো অংশ) বেচে দিয়ে, সংস্থাটিকে স্টক এক্সচেঞ্জের তালিকাভুক্তির ঘোষণা করা হয়েছে। (বিস্তারিত পড়ুন এখানে ক্লিক করে: এলআইসির অংশীদারিত্ব বেচে দেবে সরকার)
এমন পরিস্থিতিতে মানুষকে বাজারমুখী করার তাগিদে যেন সব কিছুই তালগোল পাকিয়ে গিয়েছে। অর্থনীতির গোলকধাঁধায় পড়ে একটা চমকধর্মী বাজেট পেশ করার চেষ্টা, বিপুল জনসমর্থন নিয়ে সরকারে ফেরা বিজেপিকে মাইলেজ কতটা দেবে, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও, বেকারত্ব ঘোঁচানোর সদিচ্ছার অভাবকে স্পষ্ট করে দেয়।
ফলে বাজেটে আর সব কিছু থাকলেও নেই যুবসম্প্রদায়ের জন্য কোনো বার্তা। অর্থমন্ত্রী ২ ঘণ্টা ৩৭ মিনিটের ভাষণে রাজ্যওয়াড়ি স্কিল ডেভেলপমেন্ট তৈরি করে স্টার্টআপ বা শিক্ষাক্ষেত্রের আমুল বদল করে চাকরি জোগানোর মতো প্রতিশ্রুতি থাকলেও দেশের বেকার যুবদের তেমন কোনো আশার বাণী শোনাতে পারেননি তিনি। কমানো হয়েছে কর, কিন্তু হাতে যদিও আয়-ই না থাকে, কী তার প্রাসঙ্গিকতা? নরেন্দ্র মোদী সরকার বিষয়টি বোঝে না তেমনটা নয়, যে কারণে সমস্যাকে পাশ কাটানোর আপ্রাণ প্রয়াস!
কেন্দ্রীয় বাজেট
কেন্দ্রীয় বাজেট ২০২০: অর্থনীতিতে রাষ্ট্রের দায়িত্ব ঝেড়ে ফেলতে চাইছে সরকার

চরম অর্থনৈতিক মন্দার আবহে রীতিমতো ‘অগ্নিপরীক্ষা’য় অবতীর্ণ হয়ে কেন্দ্রীয় বাজেট পেশ করলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। বিশ্লেষণে গৌতম রায়
আরএসএস এবং তাদের সমস্ত ধরনের শাখা সংগঠনগুলি ও তাদের রাজনৈতিক সংগঠন বিজেপি মুখে স্বদেশিয়ানার কথা বলে। স্বদেশি অর্থনীতির কথা বলে। যদিও ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের কালে, ভারতবর্ষের মানুষের স্বার্থে অর্থনীতিকে পরিচালিত করার যে দাবি, জাতীয় আন্দোলনের সমস্ত পর্যায়ের নেতারা রেখেছিলেন, রাজনৈতিক হিন্দু সাম্প্রদায়িক শক্তি, সেই দাবির প্রতি কখনোই বিন্দুমাত্র সহানুভূতি জ্ঞাপন না করলেও, স্বাধীনতার পর থেকে তারা স্বদেশিয়ানাকে, তাদের ক্ষমতা দখলের রাজনীতির একটি অত্যন্ত বড়ো কৌশল হিসেবে ব্যবহার করে থাকে।
এই কৌশলকে বাস্তবায়িত করতে আরএসএস, তার শাখা সংগঠন ,’স্বদেশি জাগরণ মঞ্চ’ তৈরি করেছে। দত্ত পন্থ ঠেংড়ির মতো সঙ্ঘের প্রথম সারির প্রচারক, একাধারে রাজনৈতিক হিন্দুদের শ্রমিক নেতা হয়েছেন, আবার এই স্বদেশি জাগরণ মঞ্চেরও নেতা হয়েছেন। এই কৌশলকে বজায় রেখেই, নয়ের দশক থেকে গোটা ভারতবর্ষ জুড়ে যে বাজার অর্থনীতির প্রকোপ শুরু হয়েছে, সেই গোটা পরিকল্পনার সঙ্গে আরএসএস-বিজেপির চিন্তা-চেতনা এবং প্রয়োগজনিত ক্ষেত্রে কোনো রকম ফারাক থাকেনি।
অতীতে অটলবিহারী বাজপেয়ীর সাড়ে ছয় বছরের প্রধানমন্ত্রিত্ব কালে খুব পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল, বাজার অর্থনীতির নাম করে, ভারতবর্ষের স্বাধীনতার পর থেকে, নেহেরু মডেলের যে অর্থনীতি, অর্থাৎ, রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রণাধীন শিল্প এবং পরিকাঠামো ও পরিষেবাজনিত অঙ্গটিকে, সরাসরি বাজার অর্থনীতির হাতে ছেড়ে দিয়ে, বিদেশি পুঁজির অবাধ বিচরণ ভূমি হিসেবে ভারতবর্ষের বাজারটিকে তুলে দেওয়া, আরএসএস এবং তাদের রাজনৈতিক সংগঠন বিজেপির যে একমাত্র লক্ষ্য, তা আজ কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমনের বাজেটের ভেতর দিয়ে একদম পরিষ্কার হয়ে গেল।
বস্তুত নরেন্দ্র মোদী তাঁর প্রথম দফার পাঁচ বছরের প্রধানমন্ত্রিত্বে দেশের অর্থনীতিকে নোট বন্দি, জিএসটি ইত্যাদির জাঁতাকলে যে ধ্বংসের কিনারায় এনে দাঁড় করিয়েছেন, সেই জায়গায় একটি ডুবন্ত জাহাজকে রক্ষা করতে গেলে, বিদেশি পুঁজির কাছে দেশের বাজারকে খুলে দেওয়া ছাড়া আর কোনো রাস্তা নেই, তাই যেন ‘সীতা’ নির্মলা সীতারমন, তাঁর এই বাজেটের ভেতর দিয়ে একদম পরিষ্কার করে দিলেন।
বিমা কোম্পানি থেকে রেল বেসরকারিকরণের যে রাস্তা এই বাজেটে খুলে দেওয়া হল, তার ফলে ধীরে ধীরে দেশের গোটা পরিষেবাজনিত সমস্ত অঙ্গনগুলি যে আগামী দিনে বাজার অর্থনীতির নিরিখে নিরূপিত হবে, এই আশঙ্কা খুব গভীর ভাবে উঠে আসছে। ধর্মান্ধ সাম্প্রদায়িকতা ,জাতিবিদ্বেষ, পারস্পরিক ভেদাভেদকে তীব্র করে, বিভাজনের ঘৃণ্য রাজনীতির ভিতর দিয়ে, ভারতবর্ষের অর্থনীতি, রাজনীতি, সামাজিক পরিকাঠামো, সাংস্কৃতিক পরিকাঠামোকে ধ্বংস করে দিয়ে, এই দেশের অর্থনৈতিক সার্বভৌমত্বকে সাম্রাজ্যবাদী শক্তির হাতের পুতুলে পরিণত করাই যে, মুখে স্বদেশিয়ানার বুলি কপচিয়ে, কার্যত দেশের অর্থনীতির সর্বনাশ করাই বিজেপি সরকারের একমাত্র উদ্দেশ্য, তা আজ নির্মলা সীতারামনের বাজেটের ভেতর দিয়ে একদম পরিষ্কার হয়ে গেল।
নরেন্দ্র মোদী নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারের অর্থনৈতিক দিশা বলতে যে কোনো কিছুই নেই, এটা বেশ কিছুদিন ধরেই আমরা খুব স্পষ্ট ভাবে বুঝতে পারছিলাম। আমাদের সেই বোধের উপর যেন একটা সিলমোহর সেঁটে দিল নির্মলা সীতারমনের এই বাজেট শিক্ষা।
স্বাস্থ্য, মহিলাদের ক্ষমতায়ন, বেকারত্ব দূরীকরণ, বিশেষ করে শিল্পায়নের প্রশ্ন- এ সবে যে ভাবে বিদেশি পুঁজির জোগানকে সামনে নিয়ে আসা হল, তাতে খুব বড়ো ভাবেই এটা পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে যে, ভারতবর্ষের অর্থনীতির নিয়ন্ত্রণটি এখন ভারত সরকার কার্যত আর নিজেদের হাতে রাখতে চাইছে না। ভারতবর্ষের অর্থনীতির নিয়ন্ত্রক হিসেবে তারা বিদেশি বহুজাতিক, সাম্রাজ্যবাদী অর্থপুষ্ট শক্তিদের সব রকম ভাবে আহ্বান করছে।
এই উদ্দেশ্য নিয়ে যে তাঁরা হিন্দু মুসলমানকে বিভক্ত করে এনআরসি, এনপিআরসি, সিএএ-এর ভেতর দিয়ে গোটা দেশে একটা ভয়ঙ্কর রাজনৈতিক-সামাজিক-সাংস্কৃতিক অস্থিরতা তৈরি করে, দেশের সার্বিক পরিস্থিতিকে ভয়াবহ করে তুলে, তার ভেতর দিয়েই বিদেশি পুঁজির জন্য দেশের বাজারকে খুলে দেওয়া সব রকমের চেষ্টা করছেন- তা নির্মলা সীতারমনের এ বারের বাজেটের মধ্যে দিয়ে আবারও একবার অত্যন্ত ভালো ভাবে পরিষ্কার হয়ে গেল।
* লেখক ইতিহাসবিদ। মতামত লেখকের নিজস্ব
দেশ
আয়করে বড়োসড়ো ছাড়! এক নজরে দেখে নিন প্রস্তাবিত পর্যায় এবং হার

ওয়েবডেস্ক: ২০২০-২১ অর্থবর্ষের কেন্দ্রীয় বাজেটে করদাতাদের জন্য সুখবর শোনালেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। শনিবার বাজেট পেশ করার সময় তিনি জানান, পুরনো পর্যায়গুলির আমূল বদল করে নতুন এই হার করদাতাদের প্রভূত সহায়ক হবে। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক, প্রস্তাবিত আয়করের পর্যায় এবং হার।
আয়ের পরিমাণ | করের পরিমাণ | এখন রয়েছে |
৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত | ছাড় | ১০ শতাংশ |
৫ লক্ষ থেকে ৭.৫ লক্ষ | ১০ শতাংশ | ২০ শতাংশ |
৭.৫ লক্ষ থেকে ১০ লক্ষ | ১৫ শতাংশ | ২০ শতাংশ |
১০ লক্ষ থেকে ১২.৫ লক্ষ | ২০ শতাংশ | ৩০ শতাংশ |
১২.৫ লক্ষ থেকে ১৫ লক্ষ | ২৫ শতাংশ | ৩০ শতাংশ |
১৫ লক্ষের উপরে | ৩০ শতাংশ | ৩০ শতাংশ |
একই সঙ্গে করদাতাদের আত্মবিশ্বাস বাড়াতে একটি চার্টার তৈরির কথা জানান নির্মলা। আইনের একটি অংশ হিসাবেই এই চার্টার তৈরি করা হবে। এটাই করদাতাদের আত্মবিশ্বাস বাড়াতে যথেষ্ট সহায়ক ভূমিকা পালন করবে সরকার চায় কোনো নাগরিক যাতে কর সংক্রান্ত বিষয়ে হেনস্থার শিকার না হন।
করদাতাদের উপর কোনো রকমের হেনস্থাকে বরদাস্ত করবে না সরকার। এ ব্যাপারে নাগরিকের প্রতি অপরাধমূলক দায়বদ্ধতা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। এ ক্ষেত্রে কোম্পানি আইনের সংশোধন করা হবে।
-
প্রযুক্তি2 days ago
মাত্র ২২ টাকায় জিও ফোন প্রিপেড ডেটা ভাউচার! জানুন বিস্তারিত
-
শিক্ষা ও কেরিয়ার1 day ago
কেন্দ্রের নতুন শিক্ষানীতির আওতায় মাদ্রাসায় পড়ানো হবে গীতা, রামায়ণ, বেদ-সহ অন্যান্য বিষয়
-
রাজ্য3 days ago
৯২ আসনে লড়বে কংগ্রেস, জানালেন অধীর, আব্বাসকে নিয়ে জট অব্যাহত
-
দেশ2 days ago
স্বামীর ‘দাসী’ নন স্ত্রী, এক সঙ্গে থাকতে বাধ্য করা যাবে না, বলল সুপ্রিম কোর্ট