২০২৪-২৫ অর্থবর্ষের বাজেটে ‘সিন ট্যাক্স’— অর্থাৎ অ্যালকোহল, সিগারেট ও তামাকজাত পণ্যের ওপর অতিরিক্ত কর আরোপে কোনও পরিবর্তন আনছেন না কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। সাধারণত এই কর বাড়িয়ে জনস্বাস্থ্য রক্ষা ও সরকারি কল্যাণমূলক প্রকল্পে অর্থ সংগ্রহ করা হয়। এবারের বাজেটে সেই প্রবণতায় স্থগিতাবস্থা দেখা যাচ্ছে।
২০২৩-২৪ অর্থবর্ষের বাজেটে সিগারেটের ওপর ন্যাশনাল ক্যালামিটি কনটিনজেন্ট ডিউটি (NCCD) ১৫-১৬ শতাংশ বাড়ানো হয়েছিল। এর পাশাপাশি পানমশলা, চিউইং টোব্যাকো ও সিগারের ওপর ২৮ শতাংশ জিএসটি বজায় ছিল। তবে ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষের বাজেটে সিগারেটের ওপর কোনও নতুন কর বসানো হয়নি, যা রাজস্ব আয় এবং জনস্বাস্থ্যের ওপর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলতে পারে।
যদিও এবারের বাজেটে নতুন কোনও কর বসানো হয়নি, ডিসেম্বর ২০২৪-এ একদল মন্ত্রীর (GoM) সুপারিশ অনুযায়ী, ‘সিন পণ্য’-র ওপর ৩৫ শতাংশ জিএসটি আরোপের প্রস্তাব আলোচনায় উঠে এসেছে। এই প্রস্তাব কার্যকর হলে, তামাক ও অ্যালকোহলজাত দ্রব্যের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়বে, যা মানুষের ভোগান্তি কমাতে সাহায্য করবে। তবে এখনো পর্যন্ত সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে এই কর আরোপের সিদ্ধান্ত নেয়নি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী ১৮২টি দেশের মধ্যে ভারতকেও তামাকজাত পণ্যের ৭৫ শতাংশ কর বসানোর সুপারিশ মানতে বলা হয়েছে। কিন্তু ভারতের বর্তমান কর হার সেই মানদণ্ডের চেয়ে অনেক কম:
- সিগারেট: ৫২.৭ শতাংশ কর
- চিউইং টোব্যাকো: ৬৩.৮ শতাংশ কর
- বিড়ি: মাত্র ২২ শতাংশ কর
এ থেকে স্পষ্ট, ভারতের তামাক কর নীতি আন্তর্জাতিক মানের তুলনায় পিছিয়ে রয়েছে এবং নীতিগত সংস্কারের প্রয়োজন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, তামাকজাত দ্রব্যের চাহিদা তুলনামূলকভাবে অনমনীয় (inelastic), অর্থাৎ কর বৃদ্ধির পরেও এই পণ্যগুলোর বিক্রি পুরোপুরি কমে যায় না। ফলে সরকার এই খাত থেকে স্থায়ীভাবে রাজস্ব আয় করতে পারে।
সিন ট্যাক্সের দুটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য রয়েছে:
২. সাধারণ মানুষের তামাক ও অ্যালকোহল গ্রহণ নিরুৎসাহিত করা, বিশেষ করে যুবসমাজ ও নিম্নবিত্ত শ্রেণির মধ্যে।
২. রাজস্বের অর্থ স্বাস্থ্যসেবা ও কল্যাণমূলক প্রকল্পে ব্যয় করা, যেমন— ডি-অ্যাডিকশন ক্যাম্প, স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়ন এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় তহবিল গঠন।
তবে ভারতের বর্তমান কর নীতি এখনো পুরোপুরি এই লক্ষ্য অর্জনে কার্যকর হয়ে ওঠেনি।