ওয়েবডেস্ক: হিমাচল প্রদেশ এবং গুজরাত। ভারতের উত্তর এবং পশ্চিমের দুই রাজ্য। উত্তরের রাজ্যটি কংগ্রেসের দখলে এবং পশ্চিমের রাজ্যটি নিয়েই বিজেপির যত গর্ব। বিজেপির কাছে চ্যালেঞ্জ, প্রতিষ্ঠানবিরোধী হাওয়াকে কাজে লাগিয়ে উত্তরের রাজ্যটি দখল করা এবং পশ্চিমের রাজ্যটিতে অল্পস্বল্প প্রতিষ্ঠানবিরোধী হাওয়া থাকলেও, তা জয় করেই সেখানের কর্তৃত্ব বজায় রাখা।
ঐতিহাসিক ভাবেই হিমাচল এবং গুজরাতে এক সঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন হয়। এক সঙ্গে যখন হয় তার মানে সেই নির্বাচনের সূচিও এক সঙ্গেই ঘোষিত হয়। কিন্তু এ বারই ঘটল ব্যতিক্রম। হিমাচলের সূচি ঘোষিত হলেও, হল না গুজরাতের।
মুখ্য নির্বাচনী কমিশন অচল কুমার জ্যোতি বৃহস্পতিবার এই দুই রাজ্যের নির্বাচনসূচি ঘোষণা করতে গিয়ে শুধু হিমাচলেরটাই ঘোষণা করেন। আগামী ৯ নভেম্বর সমগ্র হিমাচলে এক দফাতেই হবে নির্বাচন। ভোটের গণনা হবে ১৮ ডিসেম্বর। কিন্তু গুজরাতের নির্বাচনসূচি তিনি ঘোষণা করেননি। বরং বলেছেন, ১৮ ডিসেম্বর হিমাচলের সঙ্গেই ভোট গণনা হবে গুজরাতের। গুজরাতের নির্বাচন-সূচি পরে ঘোষণা করা হবে বলে জানান তিনি।
আপাতদৃষ্টিতে খুব মামুলি একটা ব্যাপার মনে হলেও এর পেছনে রয়েছে গভীর একটা অঙ্ক, এমনই মনে করেন এক প্রাক্তন মুখ্য নির্বাচনী কমিশনার। তাঁর মতে, নির্বাচনসূচি ঘোষিত হয়ে যাওয়ার অর্থ নির্বাচনী আচরণবিধি শুরু হয়ে যাওয়া। এই আচরণবিধি শুরু হয়ে গেলে ভোটারদের ‘প্রভাবিত’ করার জন্য কোনো উন্নয়নমূলক প্রকল্পের ঘোষণা করতে পারে না ক্ষমতাসীন দল। এখানেই রয়েছে সেই মোক্ষম ‘টুইস্ট’।
আগামী ১৬ অক্টোবর গুজরাত সফর করার কথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। ওই প্রাক্তন কমিশনারের মতে, গুজরাতে নির্বাচনী আচরণবিধি শুরু না হওয়ায় সেই সময়ে বেশ কিছু উন্নয়নমূলক প্রকল্পের ঘোষণা করতে পারেন মোদী।
গুজরাত নির্বাচনের সূচি প্রকাশ না করার ফলে নির্বাচন কমিশনের সম্মানহানি হল, এমনই মনে করেন ওই প্রাক্তন কমিশনার। তাঁর কথায়, “যখন কোনো দু’টো বা তার বেশি রাজ্যের নির্বাচন এক সঙ্গেই ছ’মাসের মধ্যে পড়ে, তখন তাদের সূচি এক সঙ্গেই ঘোষণা করতে হয় কমিশনকে। কিন্তু কমিশন আজ যেটা করল তাতে কমিশনের সম্মানহানি হয়ে গেল।” এর পর তিনি যোগ করেন, “গুজরাতের নির্বাচনের সূচি প্রকাশ না করার ফলে বিশাল সুবিধা পেয়ে গেলেন মোদী। এর ফলে তাঁর আসন্ন গুজরাত সফরে বেশ কিছু উন্নয়নমূলক প্রকল্পের ঘোষণা করতে পারবেন তিনি।”
উল্লেখ্য, গত সপ্তাহ দুয়েক ধরে গুজরাতের নির্বাচনের কথা ভেবেই বেশ কিছু জনমুখী ঘোষণা করেছেন মোদী, যার মধ্যে অন্যতম জিএসটিতে কিছু পরিবর্তন।