ওয়েবডেস্ক: করোনাভাইরাস মহামারির (Coronavirus pandemic) কারণে ঋণের কিস্তির উপর ছ’মাসের মোরাটোরিয়াম বা ইএমআই স্থগিতের অনুমোদন দিয়েছে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক (RBI)। কিন্তু এই মেয়াদে কেন সুদ নেওয়া হবে, সেই প্রশ্ন তুলেই মামলা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। বৃহস্পতিবার ওই মামলার শুনানিতে অর্থমন্ত্রকের ব্যাখ্যা চাইল সর্বোচ্চ আদালত।
এ দিনের শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অশোক ভূষণ, সঞ্জয়কিষান কউল এবং এমআর শাহের বেঞ্চ দু’টি বিষয়ে বিবেচনার নির্দেশ দেয়। প্রথমটি, মোরাটোরিয়ামের (Moratorium) সময় সুদ মুকুব করা। দ্বিতীয়টি হল, সুদের উপর সুদ নেওয়া যাবে না।
বিচারপতি অশোক ভূষণ বলেন, “এই ইস্যুতে দু’টি বিষয় রয়েছে। স্থগিত সময়কালে কোনো সুদ নয়, এবং সুদের উপর কোনো সুদ নয়”। এ ব্যাপারে আরবিআই এবং কেন্দ্রের উপর চাপ বাড়িয়ে নোটিশ পাঠায় সুপ্রিম কোর্ট।
আরবিআই অবশ্য সুপ্রিম কোর্টে জমা দেওয়া হলফনামায় আগেই জানিয়েছে, মোরাটোরিয়ামের উপর সুদ মুকুব করা হলে ২ লক্ষ কোটি টাকার লোকসান হবে। যা জিডিপির প্রায় এক শতাংশ। এখন কিস্তির টাকা না দিতে হলেও ঋণগ্রহণকারীকে পরে তা সুদ-সহ ফেরত দিতে হবে। তা না হলে ব্যাঙ্ক এবং অন্যান্য আর্থিক সংস্থাকে লোকসানের মুখোমুখি হতে হবে।
অন্য দিকে আরবিআই গভর্নর শক্তিকান্ত দাস সংবাদ মাধ্যমের কাছে জানান, লকডাউনের কারণে ছ’মাসের কিস্তি স্থগিতের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই মেয়াদে সুদ মুকুব করার বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য না করায় বিভিন্ন ব্যাঙ্ক, ব্যাঙ্ক নয় এমন আর্থিক প্রতিষ্ঠান (NBFC) অথবা গ্রামীণ ব্যাঙ্কগুলি নিজেদের মতো করেই পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছে।
আরবিআইয়ের এহেন মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বেঞ্চ বলে, আর্থিক বিষয় কখনোই সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয়ের থেকে বড়ো হতে পারে না। একই সঙ্গে আরবিআই গভর্নরের মন্তব্য প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট বলে, সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়ে বিষয়টি নিয়ে চাঞ্চল্য ছড়ানো হচ্ছে।
এ দিনের শুনানিতে কেন্দ্রের প্রতিনিধিত্বকারী সলিসিটার জেনারেল তুষার মেহতা বেঞ্চের কাছে জানান, তিনি অর্থ মন্ত্রকের সঙ্গে এ বিষয়ে পরামর্শ করবেন এবং আদালত ও মামলাকারী- উভয় প্রশ্নের জবাব দাখিল করবেন। তাঁর মন্তব্যের পর, সর্বোচ্চ আদালত ১২ জুন বা তার আগে মেহতাকে উত্তর দাখিলের অনুমতি দেয়।
প্রসঙ্গত, ১ মার্চ থেকে ঋণের ইএমআইয়ের উপর দু’টি পর্যায়ে ছ’মাসের মোরাটোরিয়াম ঘোষণা করে আরবিআই। তবে কিস্তি পিছিয়ে দেওয়া হলেও ওই সময়কালে সুদ নেওয়া হবে বলে জানায় বিভিন্ন ব্যাঙ্ক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান। এর পরই আগ্রার বাসিন্দা গজেন্দ্র শর্মা সুপ্রিম কোর্টে একটি আবেদন দায়ের করেন। তাঁর প্রশ্ন, গ্রাহককে যদি বাড়তি সুদ দিতেই হয়, তাহলে মোরাটোরিয়াম কিসের?
খবরের সব আপডেট পড়ুন খবর অনলাইনে। লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল।