গত তিন দশকে এমন বন্যা দেখেনি বারাণসী। ১৯৭৮-এর পর সব থেকে ভয়ঙ্কর বন্যার মুখোমুখি দেশের এই পবিত্র ও বাঙালির অতিপ্রিয় এই শহর। দশাশ্বমেধ থেকে মণিকর্ণিকা, শহরের সব ঘাট এবং ঘাট সংলগ্ন এলাকাগুলি জলের তলায়।
বারাণসী জেলায় প্রায় তিন লক্ষ মানুষ বন্যায় আক্রান্ত। শুধুমাত্র শহরেই আক্রান্ত ৮০ হাজার। প্রায় তিন হাজার বাড়ি কম বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শহরে। ঘাটগুলিতে প্রায় দু’তলা বাড়ি সমান জল। মণিকর্ণিকা ঘাট পুরোপুরি জলের তলায় থাকার ফলে ব্যাহত হচ্ছে শবদাহ। ওই ঘাটের কাছে একটি বাড়ির ছাদে অল্প একটু জায়গায় চলছে পরলৌকিক ক্রিয়াকর্ম। কিন্তু জায়গাটি খুব ছোট্ট হওয়ায় দেহের লাইন পড়ে যাচ্ছে। এমনই অবস্থা যে বৃহস্পতিবার বারাণসীতে জন্মাষ্টমীর উৎসব পালনেও ভাটা লক্ষ করা গেছে। খাটু শ্যাম মন্দিরের প্রধান পূজারি সঞ্জয় হাজারি বলেন, “এ বছর জন্মাষ্টমী পালনে কারও মন নেই। মানুষ এখন একে অপরকে সাহায্য করতে ব্যস্ত”। অন্যান্য দিন গমগম করা দশাশ্বমেধ ঘাট সংলগ্ন বাজারও এখন নিষ্প্রভ। স্থানীয় দোকানদার কিশোর কেশরী বলেন, “আশেপাশের সব এলাকা জলের তলায়। ব্যবসা হবে কোথা থেকে!”
শহরের বন্যাকবলিতদের জন্য ত্রাণশিবিরের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু অভিযোগ, সেখানে পর্যাপ্ত পরিমাণে জল আর খাবার দেওয়া হচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সংসদীয় এলাকা এই বারাণসী। বন্যা পরিস্থিতির ওপর নজর রাখার জন্য তিনি অন্য এক সাংসদ সি আর পাটিলকে দায়িত্ব দিয়েছেন। পাটিল বলেন, “বন্যাকবলিত সব জায়গাতেই ত্রাণ পৌছনোর চেষ্টা চলছে, কিন্তু এখনও মানুষের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। আমরা সব মানুষের কাছে যাওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করছি। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকেও সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলার যে সমস্ত গ্রামে ত্রাণ পৌঁছয়নি, খুব তাড়াতাড়িই তাঁদের কাছে ত্রাণ পৌঁছবে”।
তবে বন্যার জন্য সব থেকে বেশি দায়ী করা হচ্ছে গঙ্গার পাড় বরাবর গজিয়ে ওঠা বেআইনি সব নির্মাণকে। তবে আশার কথা শুনিয়েছে কেন্দ্রীয় জল কমিশন। বারাণসীতে গঙ্গার বিপদসীমা ৭১ মিটার। তার অনেক ওপর দিয়ে বইলেও, গঙ্গার জল শুক্রবার সকালে কিছুটা নেমেছে। শনিবার সকালের মধ্যে তার ৭২ মিটারে নেমে যাওয়ার আশ্বাস শুনিয়েছে জল কমিশন।
শুধু বারাণসীই নয়, বন্যার কবলে পড়েছে এলাহাবাদও। রবিবার পর্যন্ত শহরের সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে প্রশাসনের তরফ থেকে।
খবরের সব আপডেট পড়ুন খবর অনলাইনে। লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল।
বারাণসীর খবরটা জানতামনা।কালকে পেপার পড়তে সময় পাইনি। ঈশ্বর যাকরেন মঙ্গলের করেন , এতে কি মঙ্গল আছে জানিনা।
ধন্যবাদ পাপিয়া।।।