নিউ জলপাইগুড়ি: ট্রেনযাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠল ইউটিউবার কানিকা দেবরানির সাম্প্রতিক অভিজ্ঞতার পর। এক চাঞ্চল্যকর ভিডিও বার্তায় তিনি অভিযোগ করেছেন, নিউ জলপাইগুড়ি জংশন (NJP) স্টেশনে ব্রহ্মপুত্র মেল ট্রেনে যাত্রার সময় তাঁকে এবং তাঁর সহযাত্রীদের ড্রাগ খাইয়ে লুটপাট করা হয়েছে।
ঘটনার বিস্তারিত জানিয়ে কানিকা জানান, 2AC কামরায় যাত্রা করছিলেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘ফার্স্ট ক্লাস এসি টিকিট না পেয়ে আমি 2nd AC-তে টিকিট কাটি নিউ দিল্লি থেকে গৌহাটি পর্যন্ত। ভেবেছিলাম, সুরক্ষিতই থাকব। ট্রেন নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে দাঁড়িয়েছিল। তখন আমি ঘুমাচ্ছিলাম। ফোনটি বালিশের নিচে রেখে চার্জে দিয়েছিলাম।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘একজন অপরিচিত ব্যক্তি, যার কাছে কোনও টিকিট ছিল না, সেই কামরায় ঢোকে। হাঁটতে হাঁটতে কয়েকজন যাত্রীর সঙ্গে কথা বলে। ওই ব্যক্তি আমার ঠিক উপরের বার্থে থাকা যাত্রীর সঙ্গেও কথাবার্তা বলে। মনে হয়, সে তখনই আমার ওপর কিছু স্প্রে করেছিল, কারণ আমি কিছু বুঝতেই পারিনি।’’
কানিকার দাবি, ‘‘কেউ আমার বার্থে এসে ফোন নিয়ে চলে যায়। প্রথম প্রশ্ন, কীভাবে রেলের কর্মীরা একজন অপরিচিত, টিকিটবিহীন ব্যক্তিকে কামরার ভিতরে ঢুকতে দিলেন? আমি জানি না, ওই লোক কে ছিল।’’
ঘটনায় শুধু কানিকার ফোন নয়, তাঁর এক সহযাত্রীর ফোনও একইভাবে খোয়া যায় বলে অভিযোগ। কানিকা বলেন, ‘‘আমি তখন ঘুমোচ্ছিলাম। হঠাৎই আশপাশের লোকজনের চেঁচামিচিতে ঘুম ভাঙে। তখনই বুঝি, ফোন নেই।’’
ঘটনার পর আরও ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়, যখন কানিকার মা ফোন পান তাঁর হারানো নম্বর থেকে। কানিকার অভিযোগ, ‘‘একজন ব্যক্তি নিজেকে আরপিএফ অফিসার বলে পরিচয় দিয়ে আমার মায়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন এবং ফোনের পাসওয়ার্ড জানতে চান।’’
ঘটনার পর পুলিশের ভূমিকা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কানিকা। তাঁর দাবি, পুলিশও সাহায্য করতে অস্বীকার করে।
ইনস্টাগ্রামে ভিডিও শেয়ার করে কানিকা লেখেন, “ট্র্যাভেল সেফ।” পরে মন্তব্য করে জানান, “আমি সুরক্ষিত আছি, এবং টুইটও করেছি এই ঘটনার বিষয়ে। আপনাদের চিন্তার জন্য ধন্যবাদ।”
নর্থ ইস্ট ফ্রন্টিয়ার রেলওয়ের মুখপাত্র কপিন্জল কিশোর শর্মা সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, “তদন্ত শুরু হয়েছে। কানিকা বর্তমানে গৌহাটিতে আছেন। আরপিএফ তাঁর অভিযোগ নথিভুক্ত করেছে। মোবাইল খোঁজার জন্য CEIR পোর্টালের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে। অপরাধীদের ধরার জন্য কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
তবে খবর অনলাইন কানিকার অভিযোগের সত্যতা স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি।
সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ঘটনা নিয়ে শুরু হয়েছে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া। অনেকেই IRCTC এবং রেলমন্ত্রককে ট্যাগ করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। কেউ লিখেছেন, “এভাবে টিকিট ছাড়া লোক কামরায় ঢুকতে পারছে! মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে বড় প্রশ্ন উঠছে।”
আরও পড়ুন:অ্যান্ড্রয়েডে এবার চুরি ঠেকাতে গুগলের নতুন তিন সিকিউরিটি ফিচার! ফোন হাতছাড়া হলেই সঙ্গে সঙ্গে লক