পাপিয়া মিত্র :
মালদহের বেগুন বলুন বা দক্ষিণ দিনাজপুরের তুলাইপাঁজি চালই বলুন, এ বার মেলায় মেলা ভার নগদের। বলা যেতে পারে নারদের চরিত্রে অবতীর্ণ হয়েছেন তিনি। এক এক স্টলে যন্ত্রের দ্বারা বিক্রিবাটা ভালো, আবার এক এক স্টল মুখ অন্ধকার করে বসে আছে।
মেলা মানে বদলে যাওয়া ছবি। মেলা মানে সর্বধর্ম সমন্বয়ের মিলনস্থল। মেলা মানে সব রোগ দূরে সরিয়ে সদর্পে এগিয়ে চলা। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের স্বনির্ভর গোষ্ঠী ও স্বনিযুক্তি দফতরের উদ্যোগে সল্টলেকের করুণাময়ী সেন্ট্রাল পার্কে ‘রাজ্য সবলা মেলা’ শুরু হয়েছে। চলবে ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
প্রায় তিনশোটি স্টল বসেছে রাজ্যের নানা প্রান্তের হাতের কাজের ও চাষাবাদের সম্ভার নিয়ে। সাংস্কৃতিক মঞ্চে চলছে গুণীজনের উপস্থাপনা। আছে জামদানি, মসলিন, বালুচরী, জারদৌসি, পাশাপাশি উত্তরবঙ্গের বাঁশ-বেত-গালা-শোলার কাজ। পুরুলিয়ার মুখোশ, হস্তশিল্পের গায়ে বসেছে চামড়ার ব্যাগ, কৃত্রিম অলঙ্কার, পাতাবাহার, ফুলের সমাহার। বাঁকুড়ার ডোকরার কাজ, পোড়ামাটির ঘর সাজানোর সামগ্রী।
মালদহের বিখ্যাত বেগুন নিয়ে ফি বছর আসেন দেবল বিশ্বাস। এক একটি বেগুন ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৫ কুইন্টাল শেষ, আরও ৩ কুইন্টাল এসেছে। পোড়া ও ভাজা খেতে শীতের পাতে অনবদ্য পদ।
শ্রীরামকৃষ্ণ প্রেমবিহার স্টলে বড়ি, ধূপ, রান্নার মশলার চাহিদা তুঙ্গে।
পূর্ব মেদিনীপুরের বীণা পালের গলা ভাঙা। গয়নাবড়ি সাজানো স্টলে তেমন বেচাকেনা নেই। ধামাখালির ইতু উপাধ্যায়ের মুখ গম্ভীর। জানালেন, সরকার থেকে যদি মেশিনের ব্যবস্থা থাকত তা হলে লাভের মুখ দেখতেন। নোটচক্রে কেনাকাটার বাজার খানিক থমকে থাকলেও উদরের পুজো জোর চলেছে। নানা পিঠের পাশে কাটলেট, ঘুগনি, কড়াইশুঁটির কচুরি, আলুর দম, মোমো নিমেষে উধাও। চেয়ে খাওয়া বাঙালির অভ্যাস। তাই যত না কেনা তার বেশি স্বাদ নেওয়ার জন্য হাত পাতছে পাটালির স্টলে।
আশাবাদী মানুষ নির্ঝঞ্ঝাট বছর চাইছে। তাই ‘সবলা মেলা’ আবার হাসি ফোটাতে আসবে শীতের কাছে এই প্রার্থনা।