বাঁকুড়া
বিজেপি কর্মীদের উপর হামলার ঘটনাই বলে দিচ্ছে বাংলায় পরিবর্তন আসছে: অমিত শাহ
দু’দিনের রাজ্য সফরে এসে এ দিন বাঁকুড়ার একটি অনুষ্ঠানে এমন মন্তব্য করেন বিজেপি নেতা।

বাঁকুড়া: পশ্চিমবঙ্গের মানুষ যে পরিবর্তনের প্রত্যাশায় রয়েছেন, সেটা তাঁদের চোখের দিকে তাকালেই স্পষ্ট হয়ে যায় বলে বৃহস্পতিবার মন্তব্য করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। দু’দিনের রাজ্য সফরে এসে এ দিন বাঁকুড়ার একটি অনুষ্ঠানে এমন মন্তব্য করেন বিজেপি নেতা।
বৃহস্পতিবার সাড়ে এগারোটা নাগাদ আকাশপথে বাঁকুড়ায় পৌঁছন অমিত শাহ। সেখানে বিরসা মুন্ডার মূর্তিতে মালা দেন। বলেন, “গতকাল থেকে পশ্চিমবঙ্গের যে প্রান্তেই গিয়েছি, সব জায়গায় মানুষের উৎসাহ দেখেছি। বাংলার মানুষ পরিবর্তনের জন্য প্রত্যাশী, তা আমি মানুষের চোখে দেখতে পাচ্ছি। শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বেই তাঁদের আশা পূরণ সম্ভব। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার কেন্দ্রীয় সরকারের ৮০টিরও বেশি প্রকল্পের সুবিধা বাংলার দরিদ্রদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে না”।
একই সঙ্গে তিনি বলেন, “রাজ্যের মমতা সরকারের প্রতি ভয়ঙ্কর আক্রোশ তৈরি হয়েছে। বিজেপি ক্ষমতায় এলে বেকারের হাতে কাজ মিলবে। তাই কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে রাজ্য সরকারকে ছুড়ে ফেলুন”।
রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে বিজেপি কর্মীদের উপর হামলার ঘটনা প্রসঙ্গে অমিত শাহ বলেন, “যে ভাবে বিজেপি কর্মীদের বিরুদ্ধে আক্রমণ চালানো হচ্ছে, আমরা নিশ্চিত, বিজেপি দুই তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে বাংলায় পরবর্তী সরকার গঠন করবে। সীমান্তবর্তী রাজ্য হিসাবে দেশের সুরক্ষার সঙ্গে গভীর ভাবে জড়িয়ে রয়েছে বাংলার সুরক্ষার”।
তাঁর কথায়, “যে ভাবে বিজেপি কর্মীদের উপর শাসকদলের দমনপীড়ন নীতি চলছে, তাতে আমি পরিষ্কার দেখতে পারছি যে মমতা সরকারের মৃত্যুঘণ্টা বেজে গিয়েছে”। তিনি বলেন, “এক বার সুযোগ দিলে সোনার বাংলা গড়ে দেবে বিজেপি। বাংলায় উন্নয়নের বন্যা বইবে”।
আরও পড়তে পারেন: বিনিয়োগ টানতে মুকেশ অম্বানি, রতন টাটাদের পাশে নিয়ে বৈঠকে বসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী
বাঁকুড়া
সোনামুখীর দে বাড়ির ১১৫ বছরের সরস্বতীপুজো
সোনামুখীতে এই পুজো শুরু করেন স্বর্গীয় অধরচন্দ্র দে মহাশয় ১৯০৬ সালে।

শুভদীপ রায় চৌধুরী
সামনেই সরস্বতীপুজো। প্রতিটি পুজোমণ্ডপ থেকে শুরু করে ঘরে ঘরে চলছে পুজোর চূড়ান্ত প্রস্তুতি। এ বার যে পুজোর কথা বলছি, তা হল বাঁকুড়া জেলার সোনামুখী শহরের ১১৫ বছরের প্রাচীন সরস্বতীপুজো।
এই পুজোর বিশেষত্ব হল, এখানে শুধুমাত্র দেবী সরস্বতীই থাকেন না, সঙ্গে থাকেন তাঁর তিন ভাই-বোন অর্থাৎ লক্ষ্মী, কার্তিক এবং গণেশ। সোনামুখীতে এই পুজো শুরু করেন স্বর্গীয় অধরচন্দ্র দে মহাশয় ১৯০৬ সালে, যা আজও নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করে আসছেন দে বাড়ির সদস্যরা।
অধরচন্দ্রকে সোনামুখীর জমিদারি প্রদান করেন বর্ধমানের রাজা। অধরচন্দ্রবাবু নারীশিক্ষার প্রতি নিজের সদর্থক চিন্তাধারার প্রতিফলন ঘটাতে একটি মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে সেই মন্দিরটির নাম সরস্বতীমন্দির।

কথা হচ্ছিল এই বাড়ির সদস্যা নীলয়া দে মহাশয়ার সঙ্গে। তিনি জানালেন, স্বর্গীয় অধরচন্দ্র দে মকরসংক্রান্তির দিনে এক স্বপ্নাদেশ পেয়েছিলেন। তার সূত্র ধরেই তিনি এই মন্দির তৈরি করেন ও দেবী সরস্বতীর সঙ্গে তাঁর আরও তিন ভাই-বোনেরও পুজোর ব্যবস্থা করেন।
কথায় কথায় জানা যায়, অধরচন্দ্রের আট সন্তান ছিল। তিনি চেয়েছিলেন এই আট সন্তানের মধ্যে যেন ভ্রাতৃত্ববোধ অটুট থাকে। তাই একচালায় বাগদেবীর সঙ্গে লক্ষ্মী, কার্তিক এবং গণেশের পুজোর প্রচলন করেন। সোনামুখীর এই দে বাড়িতে এখনও সেই প্রাচীন নিয়ম মেনেই পুজো হয়ে আসছে।

প্রতি বছর মকরসংক্রান্তির পরে এই বাড়ির উঠোনে অনুষ্ঠিত হয় ‘এখেন লক্ষ্মীপুজো’। এই পুজোর পর ধানের জমি থেকে মাটি ও খড় দিয়ে প্রতিমা নির্মাণ শুরু হয়। একচালার সাবেকি প্রতিমায় চার ভাই-বোন যেন এক সূত্রে বাঁধা থাকেন, এমনটাই চেয়েছিলেন অধরবাবু। পারিবারিক গহনা দিয়ে সাজানো হয় প্রতিমা। ডাকের সাজের উজ্জ্বল প্রতিমা সোনামুখীর ঐতিহ্যকে আরও বাড়িয়ে তোলে।
শুক্লপঞ্চমীতিথিতে সরস্বতীপুজোর সঙ্গে সঙ্গে দে পরিবারে রান্নাপুজোও অনুষ্ঠিত হয়। পরিবারের সদস্যরা পুজোর অঞ্চলি দেওয়ার পর মাছ খান, এটাই রীতি দে বাড়িতে। তবে দেবীকে নানান রকমের ফল, লুচি, ভাজা, মিষ্টি ইত্যাদি নিবেদন করা হয়। রান্নাপুজোয় বিভিন্ন রকমের পদ রাঁধা হয়, যেমন সাদাভাত, শুক্তোনি, মাছের মাথা দিয়ে বাঁধাকপির তরকারি, মাছের মাথা দিয়ে মুগের ডাল, মাছের আরও নানা পদ ইত্যাদি। পরের দিন পরিবারে রান্না হয় না। আগের দিনের তৈরি রান্নাই পরের দিন খান পরিবারের সদস্যরা।

অধরচন্দ্র দের সরস্বতী মন্দিরের পাশাপাশি পরিবারের কুলদেবতা শ্রীদামোদরজিউ-এর আলাদা মন্দির রয়েছে। তবে পুজোর দিন তিনি এই সরস্বতী মন্দিরেই অবস্থান করেন।
এ বছর করোনার কারণে বিভিন্ন বিধিনিষেধ মেনেই পুজো হচ্ছে দে বাড়িতে। প্রতি বছর পুজোর ভোগ ছাড়াও পরিবারের সদস্যরা এক সঙ্গে খিচুড়িভোগ খান। সেই প্রথাটি এ বছর বন্ধ রাখা হয়েছে। বিসর্জনের শোভাযাত্রাও হবে না এ বছর, অর্থাৎ প্রশাসনের সমস্ত নিয়ম মেনেই পুজো হবে সোনামুখীর দে বাড়িতে।
আরও পড়ুন: বাগুইআটির ‘অভিন্দ্রা’ সরস্বতীপুজোয় তুলে ধরে এক অনন্য কাহিনি, এ বছর ‘ধারা’
বাঁকুড়া
রবিবার শুরু হচ্ছে কোতুলপুর বইমেলা, চলবে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত
মেলার পাঁচ দিনই নানা ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে।

নিজস্ব প্রতিনিধি, খবরঅনলাইন: রবিবার থেকে শুরু হচ্ছে কোতুলপুর বইমেলা। এই নিয়ে দ্বিতীয় বছরে পড়ল এই বইমেলা। মেলা চলবে ১১ ফেব্রুয়ারি, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত।
কোতুলপুর বইমেলা কমিটি আয়োজিত এই মেলা অনুষ্ঠিত হবে কোতুলপুর হাইস্কুল ফুটবল ময়দানে। মেলা উদ্বোধন করবেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন এবং জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী ড. শ্যামল সাঁতরা।
বইমেলা উপলক্ষ্যে রবিবার কোতুলপুরে এক বর্ণময় শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়েছে। সেই শোভাযাত্রার থিম হল ‘বইকে ভালবেসে হাঁটুন’। ওই শোভাযাত্রার মধ্য দিয়েই মাননীয় মন্ত্রী বইমেলার উদ্বোধন করবেন।
মন্ত্রী ছাড়াও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন জয়রামবাটির রামকৃষ্ণ মিশন সারদা সেবাশ্রমের স্বামী জ্যোতির্ময়ানন্দ, বাঁকুড়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি মৃত্যুঞ্জয় মুর্ম্মু, বিষ্ণুপুরের অতিরিক্ত জেলা বিচারপতি জনাব আতাউর রহমান, বাঁকুড়ার জেলাশাসক এস অরুণ প্রসাদ আইএএস, বাঁকুড়ার আরক্ষাধ্যক্ষ কোটেশ্বর রাও আইপিএস, জেলার উচ্চপদস্থ আধিকারিক এবং বিধায়করা।
মেলার পাঁচ দিনই নানা ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে স্মরণিকা প্রকাশ, গ্রন্থ প্রকাশ, আলোচনাসভা, কবি সম্মেলন, সংগীত-নৃত্য-আবৃত্তি পরিবেশনা, জিমন্যাস্টিক্স প্রদর্শন, যাত্রাপালা ইত্যাদি।
আরও পড়ুন: হারিয়ে যাওয়া লোকসংস্কৃতি ফিরিয়ে আনতে ৩ দিনের জেলা লোকসংস্কৃতি মেলা জয়নগরে
বাঁকুড়া
‘পাহাড়ে আগুন লাগিয়ে ১ জানুয়ারি সেলিব্রেট করল মদ্যপরা,’ শুশুনিয়ার আগুনে ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ

খবরঅনলাইন ডেস্ক: হাড়কাঁপানো শীতে আগুন লেগে গেল শুশুনিয়া পাহাড়ে। শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে আগুনের লেলিহান শিখা গ্রাস করে গোটা পাহাড়কে। এই আগুন লাগার পেছনে একদল মানুষের বেপরোয়া আচরণকে দায়ী করছে বাঁকুড়াবাসী এবং পরিবেশবিদরা।
সাধারণত, গরম কালে এই পাহাড়ে আগুন লাগতে পারে। সেটা খুব একটা অস্বাভাবিক ঘটনাও নয়। গত বছর এপ্রিল মাসেও দাউদাউ করে আগুন জ্বলে উঠেছিল শুশুনিয়ায়। পাহাড়ের শুকনো পাতায় কোনো ভাবে আগুন লেগে তা ছড়িয়ে পড়ে।
কিন্তু ভরা শীতে যে ভাবে পাহাড়ে আগুন লেগেছে, সেটা সম্পূর্ণ ইচ্ছাকৃত ভাবে করা হয়েছে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
স্থানীয় সূত্রে খবর, শুক্রবার এই আগুন লাগার পরেই পাহাড় থেকে জীবজন্তু এবং পাখিদের আর্ত চিৎকার শোনা যায়। দমকলকর্মী এবং স্থানীয় প্রশাসন এই আগুন নেভানোর কাজে নেমে পড়েছেন।
এই আগুন সম্পর্কে নিজের ফেসবুক পোস্টে সব্যসাচী ভট্টাচার্য অভিযোগ করেন, “পিকনিকের নামে মদ্যপদের এতটাই উপদ্রব বেড়েছে যে অনেকে পরিবার নিয়ে যেতে ভয় পাচ্ছে শুশুনিয়ায়, বড়ো বড়ো ডিজে বাজিয়ে অশ্লীল গান আর মেনুতে মদ-মাংস এটাই এখন ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে। মদ্যপরাই শুশুনিয়ায় আগুন লাগিয়ে এক জানুয়ারি সেলিব্রেট করল।”
খবরঅনলাইনে আরও পড়তে পারেন
ইউপিআই লেনদেনে স্বস্তি, কোনো চার্জ লাগবে না
-
বিনোদন3 days ago
বিজেপিতে যোগ দিলেন অভিনেত্রী শ্রাবন্তী, ভোটে কি দাঁড়াবেন?
-
শিক্ষা ও কেরিয়ার3 days ago
৮ লক্ষ যুবক-যুবতীকে প্রশিক্ষণ দিয়ে কাজের সুযোগ করে দিচ্ছে কেন্দ্রের এই প্রকল্প, জানুন বিস্তারিত
-
রাজ্য3 days ago
বিজেপিকে রুখতে তৃণমূলকে সমর্থন, স্পষ্ট জানালেন তেজস্বী যাদব
-
রাজ্য2 days ago
৯২ আসনে লড়বে কংগ্রেস, জানালেন অধীর, আব্বাসকে নিয়ে জট অব্যাহত