নিজস্ব প্রতিনিধি, আকুই, বাঁকুড়া: নিমগাছের তলায় একটা বেদি। সামনে রাখা একটি মূর্তি এবং একটি ঘট। দু’ জনেই এক সঙ্গে পূজিত হচ্ছেন। পুজো উপলক্ষ্যে গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে চূড়ান্ত প্রস্তুতি। সবাই আজ আনন্দে। দুর্গাপুজোতেও এত আনন্দ হয় না, যেটা মঙ্গলবার হল।
কারণ এই পুজোটা যে গ্রামের একবারে নিজস্ব। বৈশাখ মাসের শুক্লপক্ষের মঙ্গলবার এই পুজো আয়োজন করা হয়। পূজিত হচ্ছেন ওলাইচণ্ডী মা। স্থানীয়রা অবশ্য তাঁকে ‘হাটতলামা’ বলেন। বাঁকুড়া জেলার ইন্দাস ব্লকের আকুই গ্রামের পশ্চিমপাড়ায় এই ‘হাটতলামা’-এর পুজো হল মঙ্গলবার।
প্রসঙ্গত, উল্লেখ্য আকুই গ্রাম থেকে ৪ কিমি দূরে বর্ধমান জেলার বোঁয়াইচণ্ডীতে রয়েছে বোঁয়াইচণ্ডী মায়ের মন্দির। তিনি পরিচিত বসন্তচণ্ডী নামে। স্থানীয় মানুষজন বিশ্বাস করেন, বসন্তচণ্ডী আর ওলাইচণ্ডী দুই বোন।

তবে কবে থেকে আকুই পশ্চিমপাড়ায় ‘হাটতলামা’-এর পুজোর প্রচলন হল তার ইতিহাস পাওয়া যায় না। এলাকার প্রবীণদেরও পুজো শুরুর ইতিহাস অজানা। এক সময়ে গ্রামবাংলা উজাড় হয়ে যেত কলেরা, বসন্ত, ম্যালেরিয়া মহামারিতে। আকুই গ্রামও তার ব্যতিক্রম ছিল না। সেই মহামারি ঠেকাতেই যে এখানে ‘হাটতলামা’-এর পুজো শুরু হয়েছিল, সে ব্যাপারে কোনো দ্বিমত নেই।
প্রচলিত প্রথা অনুযায়ী পুজো হয় মঙ্গলবার ও ভোগ বুধবার। তার ঠিক তিন আগে ঢ্যাঁড়া পিটিয়ে পশ্চিমপাড়ার মানুষের কাছে মায়ের আগমনবার্তা জানিয়ে দেওয়া হয়। এর পর কেউ আর পাড়ার বাইরে যেতে পারেন না, বা গেলেও পুজোর দিন ফিরে আসতে হয়। পুজোর পরের দিন মায়ের ভোগ দেওয়া হয়। মাকে ভোগ অর্পণ করার পরে পাড়ার বাইরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়।
ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’র হুমকি উপেক্ষা করেই মঙ্গলবার পুজো হল ‘হাটতলামা’-এর। পুজোর মাঝেই বৃষ্টি নামে। বৃষ্টির প্রাবল্য ছিল যথেষ্ট। কিন্তু তার মধ্যেই পাড়ার সকলের উপস্থিতিতে পুজো সুসম্পন্ন হয়।
আরও পড়তে পারেন
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বাংলা আকাদেমি পুরস্কার, প্রতিবাদে পুরস্কার ফেরত, ইস্তফা
কাটল জট! বিধায়ক হিসেবে বাবুল সুপ্রিয়র শপথগ্রহণ বুধবার
রাষ্ট্রদ্রোহ আইন পুনর্বিবেচনার সিদ্ধান্ত কেন্দ্রের, সময় বেঁধে দিল সুপ্রিম কোর্ট
হাইকোর্টে জমা পড়ল কাশীপুরের বিজেপি কর্মীর ময়নাতদন্ত রিপোর্ট, খুন না কি আত্মহত্যা?
খবরের সব আপডেট পড়ুন খবর অনলাইনে। লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল।