ওয়েবডেস্ক: বর্ষা-পরবর্তী সময়ে অস্থির থাকে বঙ্গোপসাগর এবং আরব সাগর। ঘূর্ণিঝড়ের প্রবণতা বেড়ে যায়। এ বছর এখনও পর্যন্ত বঙ্গোপসাগরে কোনো ঘূর্ণিঝড় তৈরি না হলেও, খেল দেখাচ্ছে আরব সাগর। তবে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে আন্দামান সাগরে একটি নিম্নচাপ তৈরি হতে চলেছে, যার দিকে কড়া নজর রাখছেন আবহাওয়াবিদরা।
জানানো হয়েছে আগামী ৩ নভেম্বর, উত্তর আন্দামান সাগরে একটি নিম্নচাপ তৈরি হতে পারে। এই নিম্নচাপের গতিপ্রকৃতির ব্যাপারে কেউ অবশ্য কিছু জানাননি এখনও। কারণ এখন আবহাওয়ার অবস্থা নিয়ে ৫-৬ দিনের বেশি পূর্বাভাস দেওয়া দুষ্কর হয়ে গিয়েছে।
ফলে ওই নিম্নচাপটি কী রকম আচরণ করবে সে নিয়ে সরকারি ভাবে কোনো তথ্য দেওয়া না হলেও, ঘরোয়া ভাবে অনেকেই বিভিন্ন রকম আশঙ্কা করছেন।
সাধারণত এই সময়ে উত্তর আন্দামান সাগরে নিম্নচাপ তৈরি হলে তা শক্তি বাড়িয়ে ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তরিত হওয়ার আশঙ্কা একটা থাকেই। ২০১৩ সালে ওড়িশায় হানা দেওয়া ফাইলিন এবং ২০১৪-এ বিশাখাপত্তনমে হানা দেওয়া হুডহুডের উৎপত্তি ছিল উত্তর আন্দামান সাগরই। ফলে ওই জায়গায় নিম্নচাপ তৈরি হওয়ার ভারতের কাছে বিপদবার্তা তো বটেই।
আরও পড়ুন কর্মজীবনের শেষ আট দিনে ৬টি হাইপ্রোফাইল মামলায় রায় দেবেন রঞ্জন গগৈ
এ বছর সেপ্টেম্বর থেকে আরব সাগর অনেক বেশি সক্রিয়। একটা পর একটা ঘূর্ণিঝড় তৈরি হচ্ছে। এর মধ্যে বর্তমানে সাগরের জলে থাকা ঘূর্ণিঝড় ‘কিয়ার’ সুপার সাইক্লোন-এর তকমা পেয়ে গিয়েছে। তুলনায় বঙ্গোপসাগর অনেকটাই নিষ্ক্রিয়। ‘ফণী’র পর কোনো ঘূর্ণিঝড়ে বঙ্গোপসাগরে হয়নি। ফলে এ বার একটা ঘূর্ণিঝড় বঙ্গোপসাগরে তৈরি হতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে।
এখন কথা হল, ঘূর্ণিঝড় তৈরি হলেও, তার গতিপ্রকৃতি কী হবে। সাধারণ ভাবে উত্তর আন্দামানে তৈরি হওয়া ঘূর্ণিঝড়ের গতিপথ হয় দু’ রকম। হয় সে পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে উত্তর তামিলনাড়ু থেকে দক্ষিণ ওড়িশার মধ্যে আঘাত হানে। আর যদি তার এগিয়ে যাওয়ার পথে উত্তর ভারত থেকে কোনো পশ্চিমী ঝঞ্ঝার আগমন হয়, তা হলে তৎক্ষণাৎ দিক পরিবর্তন করে সে এগোবে উত্তর উত্তরপূর্ব দিকে, অর্থাৎ দক্ষিণবঙ্গ-বাংলাদেশ উপকূলের দিকে।
এই নতুন নিম্নচাপটিও পশ্চিমী ঝঞ্ঝার সম্মুখীন হতে পারে বলে জানাচ্ছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক আবহাওয়া সংস্থা। ফলে তাদের অনেকেরই আশঙ্কা, ওই নিম্নচাপটি আগামী সপ্তাহের শেষ দিকে, এ রাজ্যের দিকেই এগিয়ে আসবে।
তবে নিম্নচাপ কতটা শক্তি বাড়াবে, সে আদৌ ঘূর্ণিঝড় হবে কি না, সেই নিয়ে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলির থেকে খোলসা করে কিছু বলা হয়নি।
কিন্তু ঘূর্ণিঝড় যদি হয়, এবং তার গতিপথ যদি এ রাজ্যের দিকে হয়, তা হলে বাংলার যে চিন্তা বাড়বে তা বলাই বাহুল্য।