বীরভূম
বীরভূমের সমস্ত কিষান মান্ডিতে ডেপুটেশন কংগ্রেসের
ন্যায্য মূল্যে ধান কেনার দাবিতে ও ফড়ে-দালাল রুখতে রাজ্য জুড়ে কর্মসূচি নিয়েছে কংগ্রেস।

বীরভূম: “রাজ্য সরকারের লাগামহীন অত্যাচার এবং কেন্দ্রীয় সরকারের জনবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে” বৃহস্পতিবার জেলা জুড়ে প্রতিবাদে নামল জাতীয় কংগ্রেস।
বীরভূম জেলা কংগ্রেসের সভাপতি এবং হাঁসনের বিধায়ক মিল্টন রসিদ বলেন, “প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি এবং সাংসদ অধীররঞ্জন চৌধুরী ন্যায্য মূল্যে ধান কেনার দাবিতে ও ফড়ে-দালাল রুখতে রাজ্য জুড়ে কর্মসূচি নিয়েছেন। সেই কর্মসূচির অঙ্গ হিসেবেই আজ জেলার সমস্ত কিষান মান্ডিতে ডেপুটেশন দেওয়া হল”।
দিল্লি সীমানায় প্রায় এক মাস ধরে নয়া তিন কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে অবস্থান করছেন কৃষকরা। ন্যূনতম সহায়ক মূল্য নিয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা। এ দিনের প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে কংগ্রেস নেতৃত্ব বলেন, সঠিক ভাবে ন্যায্য মূল্যে কৃষকদের কাছ থেকে ধান কিনতে হবে। কৃষি আইন বাতিল করতে হবে।
পাশাপাশি, তাঁতশিল্পীদের সুযোগ-সুবিধা, জেলার অভিবাসী শ্রমিকদের তালিকা তৈরি, কাজ হারানো শ্রমিকদের আর্থিক সহযোগিতা, যোগ্য ব্যক্তিদের সরকারি বাড়ি, বার্ধক্য ভাতা, বিধবা ভাতা, তফসিলি এবং প্রতিবন্ধী-সহ সমস্ত রকমের ভাতার দাবিতে সওয়াল করেন কংগ্রেস নেতৃত্ব।
আরও পড়তে পারেন: রাষ্ট্রপতি ভবনে কংগ্রেসের অভিযানে পুলিশের বাধা, আটক প্রিয়ঙ্কা গান্ধী
বীরভূম
টিকিট মেলেনি, কান্নায় ভেঙে পড়লেন তৃণমূল বিধায়ক
“ওরা টুপি পরতে বারন করেছিল, কিন্তু আমি শুনিনি”, অভিযোগ বিদায়ী বিধায়কের!

খবর অনলাইন ডেস্ক: শুক্রবার ২৯১ আসনে প্রার্থীতালিকা প্রকাশ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। সেই তালিকায় বাদ পড়েছে নলহাটির বিদায়ী বিধায়ক মইনুদ্দিন শাসমসের নাম। টিকিট না পেয়ে ফেসবুক লাইভে কান্নায় ভেঙে পড়লেন তিনি।
এ দিন ফেসবুক লাইভে তিনি বলেন, “দল যে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে, সেখানে নলহাটি বিধানসভা থেকে আমার নাম বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমার অপরাধ এটাই, আমি পাঁচ বছরে নিজের বিধানসভা এলাকার মানুষের সেবা করার চেষ্টা করেছি। মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। সমস্ত বাধা অতিক্রম করে আমি নলহাটির উন্নয়নের চেষ্টা করেছি। আমি কোনো দিন বালি মাফিয়াদের সঙ্গে আপস করিনি। আমি কোনো দিন কয়লা, পাথর মাফিয়াদের সঙ্গে আপস করিনি। এটাই আমার অপরাধ”।
তাঁর মারাত্মক অভিযোগ, “আমার সব থেকে বড়ো অপরাধ, আমি এক জন টুপি পরা মুসলমান। ওরা আমাকে টুপি পরতে বারণ করেছিল। আমি তা শুনিনি”।
পাশাপাশি তৃণমূল নেতৃত্বকে হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়েছেন, দলের টিকিট না পেলেও এ বারের ভোটে নলহাটি থেকেই ফের ভোটের ময়দানে লড়বেন। তবে কোন দলে যোগ দেবেন, তা স্পষ্ট করেননি তিনি।
আগামী দু’দিনের মধ্যেই তা স্পষ্ট করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। প্রাক্তন বাম মন্ত্রী কলিমুদ্দিন শামসের পুত্র। উল্লেখ্য,নলহাটি বিধানসভা কেন্দ্রে এ বার তৃণমূলের প্রার্থী হচ্ছেন রাজেন্দ্র প্রসাদ সিং। এই ঘোষণার পরেই ফেসবুক লাইভে তাঁর ওপর হওয়া ‘অবিচারের’ জবাব দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিলেন মইনুদ্দিন।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ভোটে তৃণমূল প্রার্থী হন ছেলে মইনুদ্দিন। সে বার তিনি ফরোয়ার্ড ব্লক প্রার্থী দীপক চট্টোপাধ্যায়কে ১০ হাজারের বেশি ভোটে হারিয়ে দেন।
আরও পড়তে পারেন: পূর্ণাঙ্গ প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করল তৃণমূল
বীরভূম
জেল হেফাজতে টোটোচালকের রহস্য মৃত্যুর তদন্ত এবং পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণের দাবি জোরালো হচ্ছে বীরভূমে
বৃদ্ধ বাবা-মা, স্ত্রী এবং দুই শিশুকন্যাকে নিয়ে টোটো চালিয়ে কোনো রকমের সংসার চলত মৃত যুবকের!

খবর অনলাইন ডেস্ক: রামপুরহাটে জেল হেফাজতে মৃত প্রভাত মণ্ডলের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ এবং মৃত্যুরহস্যের তদন্তের দাবিতে জেলা শাসকের দফতরে স্মারকলিপি জমা দিল বিধায়ক মিল্টন রশিদের নেতৃত্বে এক প্রতিনিধি দল।
ঘটনায় প্রকাশ, বীরভূমের তারাপীঠ থানার কড়কড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা প্রভাত। গত বছরের ডিসেম্বর মাসের শেষের দিকে মল্লারপুর পুলিশ তাঁকে মাদক সংক্রান্ত মামলায় গ্রেফতার করেছিল। এর পর রামপুরহাট মহকুমা আদালত তাঁর জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয়।
মৃত প্রভাসের পরিবারের দাবি, ১৪ ফেব্রুয়ারি রাতে ফোন করে জানানো হয়, জেলে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। কিন্তু কী ভাবে মৃত্যু হল, সে ব্যাপারে কিছু জানানো হয়নি।
জানা গিয়েছে, বৃদ্ধ বাবা-মা, স্ত্রী এবং দুই শিশুকন্যাকে নিয়ে টোটো চালিয়ে কোনো রকমের সংসার চলত প্রভাতের।
বিধায়ক মিল্টন রশিদ বলেন, “তাঁর বাড়িতে এখন খাওয়ার মতো এক কেজি চালও নেই। পশ্চিমবঙ্গ সরকার এবং বীরভূম জেলা প্রশাসনের কাজকর্ম অবাক করার মতোই। এত দিন হয়ে গেল, অথচ কেন্দ্র, রাজ্য সরকারের কোনো প্রতিনিধি মৃতের বাড়িতে গিয়ে তাঁর পরিবারকে সমবেদনা জানালেন না। রামপুরহাট জেলা প্রশাসন মারফত আমি মুখ্যমন্ত্রীর কাছেও আবেদন জানিয়েছিলাম, এই রহস্যজনক মৃত্যুর অবিলম্বে তদন্ত করা হোক। পাশাপাশি মৃতের পরিবারকে যেন আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়। সরকারের কাছ থেকে কোনো সদুত্তর না পেয়ে আজ বীরভূম জেলাশাসকের কাছে আমরা স্মারকলিপি জমা দিলাম”।
তিনি আরও বলেন, “অন্য মৃত্যুর ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসন অথবা রাজনৈতিক নেতারা ক্ষতিপূরণ অথবা টাকাপয়সা নিয়ে পৌঁছে যান। কিন্তু তারাপীঠের এই যুবকের ক্ষেত্রে দেখা গেল না”।
আরও পড়তে পারেন: ‘ভূমিপুত্র’ প্রার্থী চাই, প্রকাশ্যে বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব
বীরভূম
বীরভূমে কড়িধ্যা গ্রামের নন্দীবাড়ির সরস্বতী পদ্মাসনা, পাশে জয়া ও বিজয়া
আনুমানিক অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষের দিকে সীতানাথ নন্দী বীরভূমের দুবরাজপুর থেকে চলে আসেন কুড়িধ্যা গ্রামে এবং সেই সময় থেকে তিনি শুরু করেন মা সরস্বতীর পুজো।

শুভদীপ রায় চৌধুরী
আগামী কাল সরস্বতীপুজো, বাঙালির ঘরে ঘরে মা সরস্বতীর আরাধনা। আপামর ভক্তসমাজ মেতে উঠবেন বাগদেবীর আরাধনায়। ব্যতিক্রম নয় বীরভূম জেলার কড়িধ্যা গ্রামও।
কড়িধ্যা গ্রামের একটু পরিচয় দেওয়া যাক। তিনশো বছরের প্রাচীন এই গ্রাম। গ্রামে রয়েছে প্রচুর মন্দির, তার মধ্যে সংখ্যায় সব চেয়ে বেশি শিবমন্দির। এই সব মন্দিরের বেশির ভাগ অবশ্য ভগ্নপ্রায় অবস্থায় রয়েছে। সামান্য কিছু মন্দির রয়েছে অক্ষত।

কিন্তু কেন এত শিবমন্দির কড়িধ্যায়? তিনশো বছর আগে মারাঠা বর্গীরা যখন রাজনগর আক্রমণ করে তখন তাদের যাওয়ার পথ ছিল এই কড়িধ্যা দিয়ে। বর্গীরা যে পথ দিয়ে যেত, সেই পথের আশেপাশের সমস্ত গ্রাম তারা আক্রমণ করত, লুটপাট চালাত। কড়িধ্যার গ্রামবাসীরা শুনেছিলেন, এই মারাঠারা শৈব সম্প্রদায়ভুক্ত। তাই তাদের হাত থেকে নিজেদের জিনিসপত্র রক্ষা করার জন্য তাঁরা বহুসংখ্যক শিবমন্দির নির্মাণ করেন। ওই সব মন্দিরের ভেতরে জিনিসপত্র লুকিয়ে রাখা হয়।
কড়িধ্যায় প্রাচীন কাল থেকেই নানা পুজোপার্বণ অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। তার মধ্যে অন্যতম সরস্বতীপুজো। অতীতে কড়িধ্যা গ্রামে সেন বংশের জমিদারি ছিল। আর সেন পরিবারের পাশাপাশি এই গ্রামে বসবাস করেন নন্দী বংশের সদস্যরাও। আনুমানিক অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষের দিকে সীতানাথ নন্দী বীরভূমের দুবরাজপুর থেকে চলে আসেন কড়িধ্যা গ্রামে এবং সেই সময় থেকে তিনি শুরু করেন মা সরস্বতীর পুজো। তখনকার দিনে সীতানাথ নন্দী ছিলেন বীরভূম জেলার অন্যতম উচ্চশিক্ষিত মানুষ। তাঁর কাছে বহু পড়ুয়া আসত শিক্ষা গ্রহণের জন্য। সেই থেকে নন্দীবাড়ির কুলদেবী হন মা সরস্বতী।
নন্দীবাড়ির প্রতিমায় কিছু বিশেষত্ব রয়েছে। এখানে দেবী পদ্মাসনা এবং তাঁর পাশে রয়েছেন জয়া এবং বিজয়া। একচালার সাবেকি প্রতিমা নানা পারিবারিক গহনায় সাজানো হয়।
পুজোর দিন সকালে বাড়ি সংলগ্ন পুকুর থেকে দেবীর ঘটের জল আনা হয় এবং তার পর শুরু হয় পুজো। পুকুরের জল আনার সঙ্গে সঙ্গে লাটাইয়ের সুতো ছাড়তে ছাড়তে মন্দির পর্যন্ত সুতো নিয়ে আসা হয় – এ এক বিশেষ প্রথা নন্দীবাড়ির। দেবীকে নানা রকমের ফল, মিষ্টি ইত্যাদি ভোগ দেওয়া হয়। সরস্বতীপুজোয় ঢাকিরা বংশপরম্পরায় ঢাক বাজিয়ে আসছেন নন্দীবাড়িতে।

সরস্বতীপুজোর দিন দুপুরে সাধারণত নিরামিষ খাবার খাওয়া হয়, কিন্তু নন্দীবাড়িতে পুজোর পর দুপুরবেলায় ভাত-মাছ খাওয়ার রীতি রয়েছে। পুজোর দিন সন্ধ্যাবেলায় আরতির সময় রুপোর থালায় লুচিভোগ ও মিষ্টি নিবেদন করা হয় এবং ১০৮টি প্রদীপ জ্বালানো হয়।
মুকুরী সপ্তমীর দিন চণ্ডীপাঠ হয় এবং বারি-ঘট বিসর্জনের মাধ্যমে পুজোর সমাপ্তি ঘটে। সেই দিন দই-চিঁড়ে নিবেদন করা হয়, সিঁদুরখেলা হয় এবং বিকালে গোটা গ্রাম প্রদক্ষিণ করে প্রতিমা বিসর্জন হয়।
এ বছর করোনা ভাইরাসের কারণে প্রসাদ বিতরণ বন্ধ থাকবে এবং বিসর্জনে গ্রাম প্রদক্ষিণের যে প্রথা রয়েছে সেটাও বন্ধ থাকছে বলে জানিয়েছেন পরিবারের সদস্য সৌরভ নন্দী। প্রশাসনের সমস্ত রকম নিয়ম মেনেই পুজো হবে। বাইরের দর্শনার্থীদের প্রবেশ এ বছর বন্ধ রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বাহন ছাড়াই বীণাপাণির আরাধনা হয় উত্তর কলকাতার বটকৃষ্ণ পালের বাড়িতে
-
রাজ্য2 days ago
পূর্ণাঙ্গ প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করল তৃণমূল
-
গাড়ি ও বাইক2 days ago
আরটিও অফিসে আর যেতে হবে না! চালু হল আধার ভিত্তিক যোগাযোগহীন পরিষেবা
-
ভ্রমণের খবর3 days ago
ব্যাপক ক্ষতির মুখে পর্যটন, রাঢ়বঙ্গে ভোট পেছোনোর আর্জি নিয়ে কমিশনের দ্বারস্থ পর্যটন ব্যবসায়ীদের সংগঠন
-
রাজ্য2 days ago
বিধান পরিষদ গঠন করে প্রবীণদের স্থান দেওয়া হবে, প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে বললেন মমতা