বিশেষ প্রতিনিধি, কলকাতা: এ রাজ্যে পঞ্চায়েতের পাড়া-বৈঠককে সারা দেশে ‘মডেল’ করতে চায় কেন্দ্রীয় সরকার। সম্প্রতি কেন্দ্রের গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের প্রতিনিধিরা এ রাজ্যের জেলায় জেলায় ঘুরে পঞ্চায়েতের কাজ নিয়ে সমীক্ষা চালান। মন্ত্রকের অধীনে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড পঞ্চায়েতিরাজ-এর প্রতিনিধিরা এ রাজ্যের দক্ষিণ ও উত্তরবঙ্গের সব জেলাতেই পঞ্চায়েতের কাজ খতিয়ে দেখেন। সমীক্ষকদলের কাছে সব থেকে আগ্রহের বিষয় হয়ে দাঁড়ায় পঞ্চায়েতের পাড়া-বৈঠক।
আগেও এ রাজ্যে গ্রামসভা বসত। কিন্তু গ্রামসভার থেকেও বর্তমানে নতুন ধারণার পাড়া-বৈঠক অনেক বেশি কার্যকর। নতুন মোড়কে চালু হওয়া এই কর্মসূচির নাম সহভাগী প্রক্রিয়া। এই ছোটো ছোটো পাড়া বৈঠকেই গ্রামের মানুষের মতামত নিয়ে সংশ্লিষ্ট এলাকার উন্নয়নমূলক প্রকল্প গ্রহণ করে থাকে সরকার। এই বৈঠকে যেমন উপস্থিত থাকেন পঞ্চায়েতের প্রতিনিধিরা তেমনই থাকেন সাধারণ বাসিন্দারাও। ফলে চাহিদা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনায় উঠে আসা একাধিক মত। যা থেকে পরিকল্পনা গ্রহণের কাজ অনেকটাই সহজ হয়ে যায়।
কেন্দ্রের প্রতিনিধিদল পঞ্চায়েতের পাড়া-বৈঠকে মহিলাদের উপস্থিতির হার দেখে আরও উৎসাহী হয়ে উঠেছেন। তাঁদের সংগৃহীত তথ্যে উল্লেখ রয়েছে, এ ধরনের পাড়া-বৈঠকে উপস্থিত মহিলাদের হার প্রায় ৯০ শতাংশ। যা ওই প্রতিনিধি দলকে অবাক করে দিয়েছে।
তাঁদের মতে, তাঁরা দেশের অন্য রাজ্যগুলিতেও একই ইস্যুতে পর্যবেক্ষণের কাজ করেছেন। কিন্তু সে সব রাজ্যে এ ধরনের কোনো কার্যকর বৈঠক তাঁদের নজরে পড়েনি। এ রাজ্যের জেলাগুলিতে প্রতি মাসে গড়ে একটি করে পাড়া-বৈঠকের আয়োজন করা হয়ে থাকে। ফলে এখানে খুব সহজেই এলাকার উন্নয়নমূলক কর্মসূচিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে। অন্য দিকে দেশের অন্যান্য রাজ্যগুলিতে এ ধরনের কোনো কর্মসূচি পালিত না হওয়ায় পঞ্চায়েতের কাজে ফাঁক থেকে যায়।
কেন্দ্রের প্রতিনিধিদল দিল্লি ফিরে গিয়ে গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের কাছে পাড়া-বৈঠকের ইতিবাচক দিক সম্পর্কে বিস্তারিত রিপোর্ট পেশ করে। ওই রিপোর্ট জমা করার পরেই মন্ত্রক সিদ্ধান্ত নেয়, দেশের অন্য রাজ্যগুলিতেও একই ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হবে। সম্প্রতি মন্ত্রকের তরফে পশ্চিমবঙ্গের পাড়া-বৈঠককে মডেল করতে চেয়ে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। যেখানে এই কর্মসূচির বিশদ স্পষ্ট করে একটি খসড়া রূপরেখা চেয়ে পাঠানো হয়েছে।