আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে চলমান আন্দোলনের প্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুক্রবার ডাকা বৈঠকে ডাক্তারদের দাবি মেনে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। চিকিৎসকরা দীর্ঘদিন ধরে সেফটি ও সিকিউরিটি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন, যার জেরে কলকাতা পুলিশের কমিশনার (সিপি) বিনীত গোয়েলকে সরানোর ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। এর পাশাপাশি, স্বাস্থ্য বিভাগের দুই উচ্চপদস্থ কর্তাকেও সরানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
মমতা বলেন, “ডাক্তারদের পক্ষ থেকে ৪২ জন সাক্ষর করেছেন। মুখ্যসচিব ও অন্যান্য সিনিয়র কর্মকর্তারাও সাক্ষর করেছেন। আমাদের সব দাবি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হবে।” তিনি আরও জানান যে, বিনীত গোয়েলকে সরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া আগামীকাল থেকে শুরু হবে এবং নতুন সিপি নিয়োগ করা হবে। তিনি পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করেন, ‘‘এটা কাউকে অসম্মান করার জন্য নয়, বরং কাজের পরিবেশ ঠিক রাখার জন্য।’’
মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, চিকিৎসকদের সেফটি এবং সিকিউরিটির দাবির পরিপ্রেক্ষিতে মুখ্যসচিবের অধীনে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা ও হাসপাতালের সামগ্রিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। মমতা বলেন, ‘‘আমাদের সরকারের পক্ষ থেকে সমবেদনা জানানো হয়েছে, এবং চিকিৎসকদের সঙ্গে একটি পজিটিভ আলোচনাও হয়েছে। আশা করি তাঁরা দ্রুত কাজে যোগ দেবেন।’’
এর আগে মুখ্যমন্ত্রী এবং আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকদের মধ্যে বেশ বার বৈঠকের সম্ভাবনা তৈরি হয়। তবে, চিকিৎকদের সরাসরি সম্প্রচারের দাবিতে শেষ পর্যন্ত বৈঠকগুলি ভেস্তে যায়। সোমবার কালীঘাটের বাড়িতে বৈঠকে শেষপর্যন্ত চিকিৎসকদের দাবি মেনে নেওয়া এবং কমিশনারসহ স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের অপসারণের মাধ্যমে একটি সমঝোতায় পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে। জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি মেনে ডিসি নর্থকেও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, যেহেতু আদলতে মঙ্গলবার মামলা রয়েছে তাই বিকাল চারটের পর মুখ্য সচিব পুলিশ কর্তাদের বদলির নোটিফিকেশন জারি করবেন।
মুখ্যমন্ত্রী এই বৈঠকের পরে সবাইকে শান্তিপূর্ণভাবে কাজ চালিয়ে যেতে অনুরোধ করেন। তিনি বলেন, ‘‘বর্তমান বন্যা পরিস্থিতির কারণে চারিদিকে সাহায্য প্রয়োজন, এবং এমন সময়ে আমাদের সবার একসঙ্গে কাজ করা উচিত।’’