ভোটের আগে ঘুঁটি সাজানোর লড়াই তুঙ্গে। রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে চলছে শিবির বদলের খেলা। একদিকে বিজেপির বিধায়ক তাপসী মণ্ডল তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন, এবার বাম শিবিরেও ভাঙন ধরল। উত্তর দমদম পুরসভার একমাত্র সিপিএম কাউন্সিলর সন্ধ্যারানি মণ্ডল যোগ দিলেন তৃণমূলে। এই দলবদলের ফলে এখন পুরো পুরসভাই শাসকদলের দখলে চলে গেল, বিরোধীশূন্য হয়ে গেল উত্তর দমদম।
শনিবার সন্ধ্যায় রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য সন্ধ্যার হাতে তৃণমূলের পতাকা তুলে দেন। ২০২২ সালের পুরভোটে উত্তর দমদম পুরসভার ৩৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৩৩টি তৃণমূল দখলে রাখলেও ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে জিতেছিল সিপিএম। দীর্ঘ তিন বছর সেই ওয়ার্ডের জনপ্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেছিলেন সন্ধ্যা মণ্ডল। তবে দলত্যাগের কারণ হিসেবে তিনি জানান, ‘‘আমি কাজ করতে পারছিলাম না। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণায় সকলের জন্য কাজ করার সুযোগ পেতেই তৃণমূলে যোগ দিলাম।’’
রাজনৈতিক তরজা তুঙ্গে
সন্ধ্যার দলবদল নিয়ে শাসক দলের যুক্তি, ‘‘তিনি আমাদের দলে যোগ দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীর অনুমোদন নিয়েই তাঁকে দলে নেওয়া হয়েছে।’’ মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের দাবি, ‘‘এখন উত্তর দমদম পুরসভায় কোনও বিরোধী নেই, পুরোপুরি উন্নয়নের জন্য কাজ করতে পারবে তৃণমূল।’’
অন্যদিকে, সিপিএমের মুখপাত্র শতরূপ ঘোষ কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘তৃণমূল যখন দলবদল করে, সেটা ঠিক, কিন্তু অন্য দল করলে ভুল? বাম আমলে আমরা বিরোধীদের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের এইভাবে দলে টানিনি। তৃণমূল এই রাজনৈতিক সংস্কৃতি এনেছে, আর আমরা বাংলা থেকে তাড়িয়ে এই সংস্কৃতিও সরাব।’’
রাজনৈতিক শিবিরে দোলাচল
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ভোটের আগে এই দলবদল তৃণমূলের জন্য সুবিধাজনক হলেও, বাম শিবিরের মনোবল তাতে বড়সড় ধাক্কা খেল। উত্তর দমদমের মতো এলাকায় যেখানে বামেদের কিছুটা হলেও সংগঠন রয়েছে, সেখানে দলের একমাত্র জনপ্রতিনিধির দলত্যাগের ফলে বাম সমর্থকদের হতাশা তৈরি হতে পারে।
তবে বিরোধীশূন্য পুরসভায় গণতন্ত্রের ভারসাম্য কতটা বজায় থাকবে, সেটাই এখন বড় প্রশ্ন। ভোটের আগে আরও দলবদলের ঘটনা ঘটবে কি না, তা নিয়েও রাজনৈতিক মহলে চলছে জল্পনা।