ওয়েবডেস্ক: বাংলার এক দশকের রাজনীতিতে অন্যতম গুরুত্ববাহী স্থান সিঙ্গুর থেকেই ফের ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই শুরু করছে সিপিএম। এই ঘুরে দাঁড়ানো বিজেপির ‘আগ্রাসন’ রুখে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের মূল প্রতিপক্ষ হিসাবে তুলে ধরার লড়াই। বিশেষ করে যখন বিজেপির তিনটি রথযাত্রার আগেই সিপিএমের কৃষক ও ক্ষেতমজুর সংগঠনের তরফে শুরু হচ্ছে এই তিনটি পদযাত্রা।
এমন নয়, রাজ্যের শাসন ক্ষমতা হাতছাড়া হওয়ার পর এই প্রথমবার ঘুরে দাঁড়ানোর ডাক। গত সাত বছরে পূর্বতন শাসক দলের তরফে বড়োমাপের একাধিক কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। রাজ্যের শাসকের তখ্ত নেই তো কী, সিপিএম ব্রিগেডও ভরিয়েছে। কিন্তু বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে অতিকায় কোনো কর্মসূচি নিয়ে অন্য প্রান্ত থেকে সমালোচনার শিকার হওয়ার ঝুঁকি নেওয়াটাও সম্ভব নয়।

ঝুঁকি এই অর্থেই, সরাসরি সিপিএমের ব্যানারে না হলেও গত ৩ অক্টোবর বাম গণসংগঠনগুলির লং মার্চের (অধিকার যাত্রা) সমাপ্তি অনুষ্ঠান এতটাই জনশূন্য ছিল যে, দলীয় নেতৃত্ব পর্যন্ত হতাশা চেপে রাখতে পারেননি। সদ্য সদ্য মেয়ো রোডে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের জনসভায় লোক উপচে পড়লেও শহিদ মিনারের পাদদেশে সিপিএম রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রের সভা ছিল অতিশয় ম্যাড়মেড়ে। বেশির ভাগ চেয়ারই পড়ে ছিল খালি।
সব থেকে বিস্ময়ের যে বামপন্থী মঞ্চ বেঙ্গল প্লাটফর্ম অব মাস অর্গানাইজেশনের ওই অনুষ্ঠান আদতে ১২১টি গণসংগঠনের মিলিত কর্মসূচি। সেখানেও ওই হাল। তবে ওই মঞ্চে দাঁড়িয়েই সূর্যকান্ত বিজেপির আসন্ন রথযাত্রা কর্মসূচিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, ‘লালকৃষ্ণ আদবানি রথ নিয়ে রাজ্যের একাংশে প্রবেশ করেছিলেন। তার পর সেই অঞ্চলে দাঙ্গা হয়েছিল। এ বার পশ্চিমবঙ্গের তিন দিক থেকে বিজেপি রথযাত্রা করবে বলছে। রথযাত্রার শেষে নাকি ব্রিগেড সমাবেশ হবে। আমরা বিজেপির এই রথযাত্রাকে চ্যালেঞ্জ করছি। প্রত্যেক বুথে তৈরি থাকতে হবে। সব জায়গায় প্রস্তুত থাকতে হবে।’

একই ভাবে গত সোমবারও সল্টলেকে সিজিও কমপ্লেক্সে সিবিআই দফতরের সামনে দাঁড়িয়েও তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, বিজেপির রথের চাকায় রক্ত লেগে রয়েছে। এ রাজ্যে সেই রথ চললে তার সামনে বামপ্ন্থীরা প্রাচীর তুলবেন।
আলিমুদ্দিন সূত্রে খবর, আগামী মাসেই মোট ৩টি পদযাত্রার আয়োজন করবে সিপিএম। প্রথমটি ২৮ নভেম্বর সিঙ্গুর থেকে শুরু করে ৩০ নভেম্বর বা ১ ডিসেম্বর পৌঁছাবে কলকাতায়। নদিয়া-মুর্শিদাবাদের পদযাত্রা শেষ হবে পলাশিতে এবং উত্তরবঙ্গে তিস্তা নদীর গতিপথ ধরে চলা পদযাত্রা শেষ হবে কোচবিহারে। তবে সেগুলির দিনক্ষণ এখনও স্থির হয়নি।
কয়েক মাস আগেই মহারাষ্ট্রে সিপিএমের কৃষকসভার ডাকা লং মার্চ কাঁপন ধরিয়ে দিয়েছিল সে রাজ্যের বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকারের বুকে। এখানে দেখার, রথযাত্রার আগে পদযাত্রার মাধ্যমে তারা বিজেপির আগ্রাসন থেকে জমিরক্ষায় কতটা সফল হতে পারে!
খবরের সব আপডেট পড়ুন খবর অনলাইনে। লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল।