দার্জিলিঙের মাটিগাড়ায় স্কুলছাত্রী ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত মহম্মদ আব্বাসকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দিল শিলিগুড়ি আদালত। এই নৃশংস ঘটনার ১ বছর ১৪ দিনের মাথায় মামলার নিষ্পত্তি করল আদালত। শনিবার শিলিগুড়ির অতিরিক্ত নগর দায়রা আদালতের বিচারক অনিতা মেহেত্রা মাথুর এই রায় ঘোষণা করেন। একইসঙ্গে, আদালত মৃতার পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছে। বিচারকের এই রায়ে নির্যাতিতার পরিবার সন্তোষ প্রকাশ করেছে এবং বলেছে, এই রায়ে তাদের মেয়ে শান্তি পাবে।
২০২৩ সালের ২১ অগস্ট মাটিগাড়ার জঙ্গলের ভিতর একটি পরিত্যক্ত ঘরে একাদশ শ্রেণির ছাত্রীকে ফুসলিয়ে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেছিল মহম্মদ আব্বাস। শারীরিক অত্যাচারের জেরে মেয়েটির মৃত্যু হয়, এবং অপরাধী তার মুখ ইট দিয়ে থেঁতলে দেয় যাতে তাকে চেনা না যায়। এই ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই রাজ্য জুড়ে ক্ষোভের আগুন ছড়িয়ে পড়ে। অবশেষে, ঘটনার তদন্ত শেষ করে সমস্ত সাক্ষ্যপ্রমাণ খতিয়ে দেখে আব্বাসকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত।
মামলার রায় ঘোষণার সময় সরকারি পক্ষের আইনজীবী বিভাস চট্টোপাধ্যায় অপরাধীর ফাঁসির দাবি জানান। তিনি বলেন, “এই নৃশংস ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হওয়া অপরাধীকে সর্বোচ্চ সাজা দেওয়া উচিত।” অন্যদিকে, আব্বাসের আইনজীবী তাঁর মক্কেলের বৃদ্ধা মায়ের কথা উল্লেখ করে ফাঁসি রদের আবেদন করেন। তবে, বিচারক এই মামলাকে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে দোষীকে মৃত্যুদণ্ড দেন।
মামলার রায় ঘোষণার পর নির্যাতিতার মা আদালতে উপস্থিত থেকে বলেন, “আমরা আদালতের রায়ে সন্তুষ্ট। আমার মেয়ে শান্তি পাবে। অপরাধীকে যে শাস্তি দেওয়া হয়েছে, তা একেবারে সঠিক।” তাঁর আরও সংযোজন, “ওই ব্যক্তির পরিবার ছিল, স্ত্রীরা ছিল, সন্তানও ছিল, কিন্তু সে যা করেছে, তার জন্য এমন শাস্তিই প্রাপ্য। শুরু থেকেই আমরা মাটিগাড়া থানা এবং আদালতের উপর ভরসা রেখেছিলাম। আজ সেই ভরসা আমাদের মেয়েকে ন্যায়বিচার পাইয়ে দিল।”
এদিকে, শিলিগুড়ির আদালতের বাইরে নির্যাতিতার পরিবার ও প্রতিবেশীরা আব্বাসের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন। আদালতে আনা হলে তাঁরা অপরাধীর উপর ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং ন্যায়বিচারের দাবিতে সোচ্চার হন। সাজা ঘোষণার পরে তাঁরা আদালতের বাইরে উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন।
উল্লেখ্য, মামলাটি পক্সো আইনে দায়ের করা হয়েছিল, কারণ নির্যাতিতা ছিল নাবালিকা। এছাড়াও, আদালত মৃতার পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।