দার্জিলিং
তৃণমূলের সঙ্গে মিশে গেল জিটিএ-র কর্মী সংগঠন
এই প্রথম পাহাড়ের সরকারি কর্মীদের কোনো সংগঠন রাজ্যের শাসকদলে নাম লেখাল।

দার্জিলিং: জিটিএ (GTA) -র কর্মী সংগঠন ইউনাইটেড এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশন (UEA) মিশে গেল রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের সঙ্গে। তৃণমূলের সাংসদ শান্তা ছেত্রী এবং দার্জিলিং বিধানসভায় দলের আহ্বায়ক এনবি খাওয়াসের উপস্থিতিতে কর্মী সংগঠনটি তৃণমূলের অনুমোদিত সংগঠন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করল।
সোমবার দুপুরে দার্জিলিং জিডিএনএস হলঘরে সংগঠনের কয়েক হাজার কর্মী তৃণমূলে যোগ দেন। এঁরা জিটিএ-র অস্থায়ী কর্মী। দীর্ঘ দিন ধরে স্থায়ীকরণ-সহ অন্য়ান্য দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যালয়ে উপস্থিতি হয়েও কর্মবিরতিতে শামিল হয়েছিলেন সংগঠনের সদস্যরা। পরে প্রশাসনের আশ্বাসে সেই কর্মবিরতি প্রত্যাহার করা হয়।
এই প্রথম পাহাড়ের সরকারি কর্মীদের কোনো সংগঠন রাজ্যের শাসকদলে নাম লেখাল। ইউইএ-র কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য সুভাষ ছেত্রী বলেন, “রাজ্য সরকারই তো আমাদের স্থায়ী করতে পারে। তাই মাঝে আর লালকুঠি কেন, আমরা সরকারি মূল দলের সঙ্গেই জুড়ে গেলাম”।
সংগঠন সূত্রে জানা যায়, কালিম্পঙেও একই ভাবে যোগদান হয়েছে। মঙ্গলবারেও জিটিএ-র অস্থায়ী কর্মীরা মিরিকেও তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন।
স্বাভাবিক ভাবেই বিষয়টির মধ্যে শাসক দলের রাজনৈতিক প্রভাবের ছাপ রয়েছে বলে দাবি করছে একাংশ। বলা হচ্ছে, বিনয় তামাংদের সঙ্গ ছেড়ে এ ভাবে কর্মী সংগঠনের তৃণমূলে মিশে যাওয়ার ঘটনায় অন্য ইঙ্গিত রয়েছে। তৃণমূল এত দিন মোর্চার ক্ষমতাসীন নেতৃত্বের হাতে দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছিল, তবে পরিবর্তিত পরিস্থতিতে তারাই সক্রিয়তা দেখাতে শুরু করল। তবে এই নিয়ে অবশ্য বিনয় তামাং অথবা অনীত থাপারা মুখ খোলেননি।
মাসখানেক আগেই কর্মী সংগঠনের উদ্দেশে জিটিএ কর্তৃপক্ষ অনুরোধ করেন কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নিতে। কোভিডের জেরে এক দিকে আর্থিক সংকট, অন্য দিকে সামনে উৎসবের মরশুম। এমন পরিস্থিতিতে কর্মবিরতি প্রত্যাহারের অনুরোধ জানানো হয়। একই সঙ্গে আশ্বাস দেওয়া হয়, দীপাবলির মধ্যে রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে এ বিষয়ে সদর্থক পদক্ষেপ নেওয়া হবে। গত ২ অক্টোবর জিটিএ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকের পর আসন্ন দীপাবলি পর্যন্ত কর্মবিরতি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয় সংগঠন।
প্রসঙ্গত, সংগঠনের অভিযোগ, নতুন প্রশাসন গঠিত হলেও জিটিএ-র নির্দিষ্ট শ্রেণির কর্মীরা পড়ে রয়েছেন অন্ধকারেই। ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে কর্মরত থাকলেও নির্দিষ্ট শ্রেণির কর্মীরা বঞ্চিত প্রাপ্য সুযোগ থেকে। একাধিক বার রাজ্য সরকারের তরফে এ বিষয়ে অনুমোদন মেলার পরেও উদাসীন জিটিএ কর্তৃপক্ষ। বিস্তারিত পড়ুন এখানে: জিটিএর-র চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের নিয়মিতকরণ-সহ একাধিক দাবিতে লাগাতার আন্দোলেন কর্মী সংগঠন
দার্জিলিং
ঘন কুয়াশায় মুখ লুকিয়েছে কাঞ্চনজঙ্ঘা, মন খারাপ দার্জিলিংয়ের
জানুয়ারিতেও সে ভাবে শীতের দেখা নেই দার্জিলিংয়ে।

নিজস্ব প্রতিনিধি, দার্জিলিং: “এতদিন পর দার্জিলিং এলাম। ভেবেছিলাম ম্যাল থেকে ঝকঝকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখব। কিন্তু কোথায় কী…”
হতাশার সুর শকুন্তলা বসু সাহার গলায়। স্বামী হিমাংশু সাহাকে নিয়ে দার্জিলিং বেড়াতে এসেছেন ষাটোর্ধ এই প্রৌঢ়া। বছর কুড়ি আগে শেষ বার যখন দার্জিলিং এসেছিলেন কাঞ্চনজঙ্ঘা মন ভরিয়ে দিয়েছিল তাঁদের। কিন্তু এ বার এমন পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে তা তিনি ভাবতেই পারেননি।
জুন-জুলাইয়ে এ রকম কুয়াশা মেনে নেওয়া যায়, কিন্তু জানুয়ারিতে এমন আবহাওয়া থাকবে দার্জিলিংয়ে, সেটা শুধু শকুন্তলাদেবীই নন, দার্জিলিংয়ের ম্যালে ঘুরে বেড়ানো বেশিরভাগ পর্যটকই ভাবতে পারছেন না।
কোভিডের আতঙ্ক কাটিয়ে দার্জিলিং এখন জমজমাট। অফ-সিজন হয়ে গেলেও ম্যাল, কেভেন্টার্স, গ্লেনারিজে পর্যটকদের আনাগোনা লেগেই রয়েছে। স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা অনেকেই করছেন না, সেটা যেমন ঠিক, আবার এটাও ঠিক যে সব ধরনের বিধি অক্ষরে অক্ষরে পালন করার মতো মানুষজনও রয়েছেন।
কিন্তু সবাই মোটামুটি হতাশ দার্জিলিংয়ের আবহাওয়াটা দেখে। কিছুদিন আগে পর্যন্তও আবহাওয়া এক্কেবারে পরিষ্কার ছিল। দু’তিন দিন হল কুয়াশার আস্তরনে ঢেকে গিয়েছে পাহাড়। আকাশ মেঘলা। বৃষ্টি এখনও না হলেও আগামী ৪৮ ঘণ্টায় তার সম্ভাবনা যথেষ্ট রয়েছে।
আর শীত? দার্জিলিংবাসীই বলছেন জানুয়ারিতে এই রকম ‘উষ্ণ’ শীত খুব একটা দেখা যায় না। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৫ ডিগ্রিতে ঘোরাফেরা করছে এখন। দিল্লিতেও এর থেকে ঠান্ডা অনেক বেশি।
এমন কি এই মরশুমেই দক্ষিণবঙ্গের পানাগড় এবং পুরুলিয়ার তাপমাত্রা দার্জিলিংয়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়েছে। এই পারদের কারণেই আগামী কয়েক দিনে বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকলেও তুষারপাতের সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে।
শকুন্তলাদেবীদের মতো বাকি পর্যটকদেরও আশা, সোমবার কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা না গেলেও, অন্তত মঙ্গলবার বা বুধবার তার দেখা পাওয়া যাবে। যদিও আবহাওয়ার পূর্বাভাস বলছে, সেই সম্ভাবনা খুবই কম।
খবরঅনলাইনে আরও পড়তে পারেন
১৩ বছরে উষ্ণতম জানুয়ারি, তবে ৪৮ ঘণ্টায় ফিরছে শীত
আলিপুরদুয়ার
একই দিনে সভা বিমল গুরুং, বিনয় তামাংয়ের, দু’জনেরই আক্রমণের লক্ষ্য বিজেপি
পাহাড়ের রাজনীতিতে ফের নতুন করে নাটক।

খবরঅনলাইন ডেস্ক: তিন বছর ধরে আত্মগোপন করে থাকার পর ফের প্রকাশ্যে এসে গিয়েছেন বিমল গুরুং। এখনও পাহাড়ে উঠতে না পারলেও সমতলে একাধিক সভা করছেন তিনি। অন্য দিকে বিমল গুরুং আত্মপ্রকাশ করায় সক্রিয় হয়ে উঠেছেন তাঁর চরম বিরোধী বিনয় তামাংও।
রবিবার উত্তরবঙ্গের সমতলের দুই প্রান্তে দু’টি সভা করেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার দুই গোষ্ঠীর দুই নেতা। এবং সরাসরি, দু’জনেরই টার্গেট কিন্তু কেন্দ্রের শাসক বিজেপি। সব মিলিয়ে পাহাড়ের রাজনীতি ফের নতুন করে নাটক তৈরি করছে।
ইন্দো-ভুটান, ইন্দো-নেপাল চুক্তি বাতিলের দাবি বিনয়ের
শিলিগুড়ির কাছে সুকনায় সভা করেন বিনয়। সেখানে বিজেপিকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার কাশ্মীরের সমস্যা সমাধানে উদ্যোগী হলেও দার্জিলিং পাহাড়ের সমস্যা সমাধানে আগ্রহী নয়। তাঁর হুঁশিয়ারি, “আপনাদের সময় দিচ্ছি। এর মধ্যে সমাধান করুন। নইলে যে কোনো পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।”
বিনয়ের দাবি, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তিন বার পাহাড়ের গোর্খাদের স্বীকৃতি দেওয়ার কথা বললেও কেন্দ্র সেটা শোনেনি। ইন্দো-নেপাল এবং ইন্দো-ভুটান চুক্তি বাতিল করে দেওয়ার দাবিও তোলেন বিনয়। তাঁর কথায়, “ডুয়ার্স ও পাহাড়ের সমস্যা সমাধানে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় (Mamata Banerjee), প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi) ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠি পাঠাব।”
মমতা কথা রাখতে জানেন, বললেন গুরুং
অন্য দিকে, বীরপাড়ার সভা থেকে বিজেপির বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার বার্তা দেন বিমল গুরুং। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে লড়াই করার কথা জানান।
সভায় শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বিজেপিকেই বিঁধেছেন তিনি। বলেন, “পঞ্চায়েতে বিজেপিকে জেতালাম, বিধানসভায় জেতালাম, লোকসভায় জেতালাম। কিন্তু আমাদের কথা দিয়েও কথা রাখেনি বিজেপি। নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ বলেছিলেন আমাদের সমস্যার সমাধান করবেন। কিন্তু সাড়ে তিন বছরে কিছুই করেননি।”
মমতা স্তুতি করে গুরুং বলেন, “রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কথা দিয়ে রাখতে জানেন। তাই তাঁর হাত ধরে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে লড়াই চালাব।”
খবরঅনলাইনে আরও পড়তে পারেন
আন্দোলন আরও তীব্র, অনশন শুরু কৃষকদের
দার্জিলিং
বিজেপির উত্তরকন্যা অভিযান ঘিরে রণক্ষেত্র শিলিগুড়ি
এক কর্মীর মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি বিজেপির।

খবরঅনলাইন ডেস্ক: বিজেপির (BJP) উত্তরকন্যা অভিযানকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্রের চেহারা নিল শিলিগুড়ি। পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছেন বিজেপি কর্মীরা। এই সংঘর্ষে এক কর্মীর মৃত্যুও হয়েছে বলে দাবি গেরুয়া শিবিরের।
সোমবার বেলা একটু বাড়তেই বিজেপি কর্মী, সমর্থকরা জড়ো হন উত্তরকন্যা অভিযানে অংশ নিতে। আগে থেকেই শহরে পৌঁছে গিয়েছিলেন রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় স্তরের শীর্ষ নেতারা। শিলিগুড়ির ফুলবাড়ি মোড় থেকে মিছিলের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন দিলীপ ঘোষ, সায়ন্তন বসু। বাকি দু’টি মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন কৈলাস বিজয়বর্গীয় ও মুকুল রায়।
অভিযান আটকাতে শহরের তিনবাতি মোড়ে ব্যারিকেড করে রেখেছিল পুলিশ। বেলা ২টো নাগাদ আচমকা সেই ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করেন যুব মোর্চার কর্মীরা। পুলিশ-বিজেপি কর্মী ধস্তাধস্তিতে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয় এলাকায়। তিনবাতি মোড়ের কাছে রাস্তায় বসে পড়েন যুব মোর্চার কর্মীরা।
পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে পুলিশের তরফে ঘোষণা করা হয়, ওই এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি হয়েছে। জমায়েতকে ছত্রভঙ্গ হওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়। কিন্তু তাতে কর্ণপাত করেনি বিজেপির যুব মোর্চা।
এর পরই বিক্ষোভকারীদের হটাতে প্রথমে টিয়ার গ্যাস ছোঁড়ে পুলিশ। পালটা ইট বৃষ্টি করে বিজেপির কর্মীরা। জলকামান ব্যবহার করেও বিক্ষোভকারীদের হটানোর চেষ্টা করে পুলিশ। পুলিশ-বিজেপি সংঘর্ষে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয়। জখম হন বেশ কয়েক জন সাংবাদিক ও বিজেপি কর্মী, পুলিশকর্মী। কাঁদানে গ্যাসের শেলেই এক কর্মীর মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করে বিজেপি।
এর পর ফের নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। ময়দানে নামে মহিলা মোর্চার কর্মীরা। খুলে দেন ব্যারিকেডের দড়ি। সেই সময় ফের জলকামান ব্যবহার করে পুলিশ। ফাটানো হয় টিয়ার গ্যাসের সেল। জলের মুখে পিছু হটে বিজেপি কর্মীরা। প্রায় একঘণ্টা ধরে সংঘর্ষের আবহ থাকার পর বর্তমানে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে চাপা উত্তেজনা এখনও রয়েছে।
খবরঅনলাইনে আরও পড়তে পারেন
-
কলকাতা3 days ago
ভয়াবহ বাইক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত সাংবাদিক ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ, সতীর্থের মৃত্যু
-
হাওড়া3 days ago
বালির বিধায়ক বৈশালী ডালমিয়াকে দল থেকে বহিষ্কার করল তৃণমূল
-
শরীরস্বাস্থ্য3 days ago
কেন খাবেন মটরশুঁটি, জেনে নিন এর উপকারিতা
-
জীবন যেমন3 days ago
কম বয়সে মুখে বলিরেখা? রান্না ঘরেই আছে এর সমাধান, একমাসে