বুধ-সন্ধায় কলকাতায় তাণ্ডব চালিয়ে গভীর নিম্নচাপ পাড়ি দিল ঝাড়খণ্ডে। কিন্তু এর ফলে স্বস্তি তো দূর, দক্ষিণবঙ্গের ওপর এখন দুর্যোগের ঘনঘটা। ঝাড়খণ্ডে ব্যাপক বৃষ্টির ফলে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিতে পারে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায়।
বুধবার সন্ধায়, কলকাতা যখন লণ্ডভণ্ড হচ্ছে অতি-গভীর নিম্নচাপটি তখন অবস্থান করছে শহরের কাছেই ডায়মন্ড হারবারে। নিম্নচাপটি পূর্ণাঙ্গ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার থেকে মাত্র এক ধাপ দূরে ছিল বলে কলকাতার ওপর এত তীব্র ছিল ঝড়। ঝড়ের সাথে তাল মিলিয়ে ভারী বৃষ্টিও হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত কলকাতায় বৃষ্টি হয়েছে ৮০ মিলিমিটার, এই মরসুমে যা সর্বোচ্চ। কলকাতার পাশাপাশি জেলাগুলিতেও বৃষ্টি হয়েছে ভালোই। পুরুলিয়ায় বৃষ্টি হয়েছে ৮০ মিমি, ডায়মন্ড হারবারে বৃষ্টি হয়েছে ৭০ মিমি, হলদিয়ায় বৃষ্টি হয়েছে ৬০ মিমি। বাঁকুড়া, পানাগড়, কাঁথিতে বৃষ্টির পরিমাণ ছিল ৫০ মিমি।
কিন্তু দক্ষিণবঙ্গের বৃষ্টি নয়, বিশেষজ্ঞদের ভাবাচ্ছে ঝাড়খণ্ডে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ। বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত ঝাড়খণ্ডের কিছু কিছু অংশে মাত্রাতিরিক্ত বৃষ্টি হয়েছে। সব থেকে বেশি বৃষ্টি হয়েছে জামশেদপুরে। সেখানে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ২৭০ মিমি। বোকারো, রাঁচিতেও ভালো বৃষ্টি হয়েছে। সর্বশেষ পরিস্থিতিতে দেখা যাচ্ছে নিম্নচাপটি এতটুকু শক্তিক্ষয় না করে অবস্থান করছে ডালটনগঞ্জের কাছে। এর ফলে আরও অন্তত এক দিন অতি ভারী বৃষ্টি চলবে ঝাড়খণ্ডের সর্বত্র। দামোদর অববাহিকা অঞ্চলে এত বৃষ্টির ফলে তাদের নিজস্ব জলাধার থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ বাড়াতে বাধ্য হচ্ছে ডিভিসি। এর ফলে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিতে পারে দক্ষিণবঙ্গে।
এই নিম্নচাপটি ক্রমে দূরে সরে গেলেও এখনই স্বস্তির কোনও খবর নেই। উল্টে আরও একটি নিম্নচাপ লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ২০ তারিখ নাগাদ বঙ্গোপসাগরে তার উৎপত্তি হওয়ার কথা। এর গতিপ্রকৃতি কী হয় তার ওপর নির্ভর করছে বাংলার ওপর দুর্যোগের সম্ভাবনা। ওই নিম্নচাপ যদি ওড়িশা দিয়ে স্থলভূমিতে প্রবেশ করে তা হলে এ যাত্রায় রেহাই পাবে দক্ষিণবঙ্গ। কিন্তু তা না হয়ে, নতুনটি আগের দু’টি নিম্নচাপের রাস্তা ধরলে পরিস্থিতি জটিল হবে।
খবরের সব আপডেট পড়ুন খবর অনলাইনে। লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল।