খবর অনলাইনডেস্ক: আরজি করের ঘটনা যে সাধারণ মানুষ এবং চিকিৎসকদের মধ্যে বড়ো রকমের প্রভাব ফেলেছে, ঝাড়গ্রামের একটি ঘটনায় সেটা প্রমাণিত হল। বৃহস্পতিবার শহরের রঘুনাথপুরে একটি লজের ভিতর থেকে উদ্ধার হল এক চিকিৎসকের দেহ। কলকাতার বাড়িতে ছুটি কাটিয়ে বৃহস্পতিবার সকালেই তিনি ঝাড়গ্রাম গিয়েছিলেন তিন এবং ওই লজে ওঠেন। তার পর থেকেই পরিবারের সদস্যেরা তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিলেন না। শেষে বৃহস্পতিবার দুপুরে ঝাড়গ্রামে লজ থেকে উদ্ধার হয় চিকিৎসকের দেহ। মৃতের নাম দীপ্র ভট্টাচার্য। বয়স ৩২ বছর।
প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, ওই চিকিৎসকের বাড়ি কলকাতার বেহালায়। তিনি ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের অ্যানাস্থেশিয়া বিভাগের সিনিয়র রেসিডেন্ট চিকিৎসক হিসাবে কর্মরত ছিলেন। কী কারণে তাঁর মৃত্যু হল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে দেহের পাশে একটি সিরিঞ্জও পাওয়া গিয়েছে। প্রাথমিক অনুমান, তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন। দেহ উদ্ধারের পর অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ময়নাতদন্তের পর চিকিৎসকের দেহ নিয়ে আসা হয়েছে কলকাতায়।
পুলিশ সূত্রে খবর, মৃত্যুর আগে স্ত্রীকে বেশ কিছু মেসেজ পাঠিয়েছিলেন তিনি। তাঁর মৃত্যুর পর স্ত্রীকে নতুন জীবন শুরু করার জন্য বলেছিলেন। এ ছাড়া মেসেজের একটি অংশে আরজি করের ঘটনার কথা উল্লেখ করে তিনি লিখেছেন, “নোংরা পৃথিবী, অবিচার, নোংরামি দেখেও অন্ধ হয়ে থাকে সবাই। এ ভাবে কি বেঁচে থাকা যায়? এ কোন দুনিয়ায় আমরা বাস করছি? ঘুম থেকে উঠতে ইচ্ছে করে না, জেগে থাকতে ইচ্ছে করে না, চারিদিকে শুধু অন্ধকার।”
ঝাড়গ্রামের পুলিশ সুপার অরিজিৎ সিংহ বলেন, “এক জন চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হয়েছে। মৃত্যুর কারণ জানতে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। শুক্রবার ময়নাতদন্ত হবে। একটি মেসেজ উদ্ধার হয়েছে মোবাইল থেকে। সেটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” তবে ওই মেসেজে আরজি করের ঘটনার প্রসঙ্গ উল্লেখ রয়েছে কি না, তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি পুলিশ সুপার। তিনি বলেন, “স্ত্রীকে পাঠানো মেসেজে ব্যক্তিগত, পেশাদারি এবং মানসিক সমস্যাগুলির কথা জানিয়েছেন। পারিবারিক ও মানসিক সমস্যাগুলিকে অনেক বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। বাকি বিষয়গুলিও আমরা তদন্তের আওতায় আনব।”