নিম্নচাপের কারণে টানা বৃষ্টির পর কিছুটা বিরতি এলেও দক্ষিণবঙ্গে বন্যার তাণ্ডব কমছে না। ডিভিসি (দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন) থেকে বৃহস্পতি এবং শুক্রবারেও বড় মাত্রায় জল ছাড়া হয়েছে, যার ফলে হাওড়া, হুগলি, পূর্ব বর্ধমান-সহ বিভিন্ন জেলায় প্লাবনের আশঙ্কা বাড়ছে।
ডিভিসি থেকে মাইথন এবং পাঞ্চেত বাঁধ থেকে প্রায় ৮০ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। ডিভিসির মতে, বাঁধগুলিতে জলস্তর ক্রমশ বাড়তে থাকায় এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেছেন, এটি পরিকল্পিতভাবে বাংলাকে বন্যায় ডোবানোর ষড়যন্ত্র। তাঁর দাবি, ডিভিসি যদি আগে থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে জল ছাড়ত, তাহলে এই পরিস্থিতি তৈরি হত না। তিনি এই বন্যাকে ‘ম্যান মেড’ বলে অভিহিত করেছেন এবং কেন্দ্রীয় সরকারের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
বুধবার পুরশুড়ায় বন্যা পরিদর্শনে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, ডিভিসির সিদ্ধান্তের ফলে বাংলার বিস্তীর্ণ অঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘ডিভিসি সাড়ে তিন লক্ষ কিউসেক জল ছেড়েছে, যা অভূতপূর্ব। আমি নিজে ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেও কথা বলেছি, কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার বাংলাকে বন্যার মুখে ফেলে দিচ্ছে।’’
এদিকে, বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এই অবস্থার জন্য রাজ্য সরকারকেই দায়ী করেছেন। তাঁর মতে, নদীবাঁধগুলির সংস্কার না হওয়ায় এই বিপর্যয় আরও বাড়ছে।
ডিভিসির জল ছাড়ার ফলে দক্ষিণবঙ্গের পূর্ব বর্ধমান, হাওড়া, হুগলি-সহ দামোদরের তীরবর্তী এলাকা গুলি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এর মধ্যে খানাকুল, আরামবাগ, ঘাটাল, পাঁশকুড়া এলাকায় বন্যার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ায় পরিদর্শনে যাচ্ছেন।