খবরঅনলাইন ডেস্ক: আরজি কর কাণ্ডকে কেন্দ্র করে এককাট্টা হয়েছিলেন মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল এবং মহামেডানের সমর্থকরা। খেলার মাঠে এ হেন প্রতিবাদ নজিরবিহীন হয়েছিল। এর আড়াই মাসের মধ্যেই আরও এক নজিরবিহীন কাণ্ড ঘটে গেল রাজনীতির ময়দানে।
নৈহাটি বিধানসভার আসন্ন উপনির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী সনৎ দে-র সমর্থনে স্পষ্ট বার্তা দিলেন কলকাতার তিন প্রধান ক্লাব মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল এবং মহমেডান স্পোর্টিংয়ের অন্যতম প্রধান কর্তারা। একই সঙ্গে রাজ্য ফুটবলের নিয়ামক সংস্থা আইএফএ সচিব অনির্বাণ দত্তও সনতের ‘খ্যাতি’ নিয়ে সমাজমাধ্যমে ভিডিও বার্তা দিয়েছেন। ঘটনাচক্রে, তিন ক্লাব এবং আইএফএ কর্তাদের সেই বার্তা একত্রিত করে সোমবার দুপুরে এক্স হ্যান্ডলে সেগুলি পোস্ট করেছে তৃণমূলই।
কলকাতা ময়দানের তিনটি বড় ক্লাবের সঙ্গেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সুসম্পর্ক রয়েছে। ক্লাবকর্তাদের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বিদেশ সফরে যাওয়ার নজিরও রয়েছে। আইএসএল খেলা থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিষয়ে তিনটি ক্লাবের কর্তারা মমতার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগে থাকেন। কিন্তু সরাসরি শাসকদলের এক প্রার্থীকে ভোটে সমর্থনের কথা তিনটি ক্লাব বা তাদের কর্তারা এর আগের কোনো ভোটেই করেননি।
ইস্টবেঙ্গল কর্তা দেবব্রত সরকার, মোহনবাগান সচিব দেবাশিস দত্ত এবং মহমেডান কর্তা কামরুদ্দিন বলেছেন, সনতের মতো ফুটবল সংগঠক কম রয়েছেন। তিনটি ক্লাব যখনই নৈহাটিতে খেলতে গিয়েছে, তখনই যে কোনো সমস্যায় মুশকিল আসান করেছেন সনৎ। নৈহাটি স্টেডিয়ামে কলকাতা লিগ-সহ আইএফএ-র অনেক টুর্নামেন্টের খেলা হয় ইদানীং। মাঠ-ময়দানের সঙ্গে জড়িতদের একাংশ বলেন, ওই স্টেডিয়ামের উন্নতির স্বার্থে নৈহাটির তৃণমূল নেতা তথা অধুনা উপনির্বাচনে প্রার্থী সনতের ভূমিকা ছিল। ভোটের আগে সেই সনতের হয়ে বার্তা দিয়েছেন তিন প্রধানের কর্তা এবং আইএফএ সচিব। সেই বার্তার সুবাদে অনির্বাণ, দেবব্রত, দেবাশিস এবং কামরুদ্দিনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন সনৎও।
উল্লেখ্য, আরজি কর আন্দোলনে ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান এবং মহমেডান সমর্থকেরা একসঙ্গে রাস্তায় নেমেছিলেন। ‘তিলোত্তমার’ পাশে ময়দান নামক মঞ্চও তৈরি হয়েছে। আরজি কর আবহেই গত ১৮ অগস্ট ডুরান্ড কাপে ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগানের বড়ো ম্যাচ করার অনুমতি বাতিল করেছিল বিধাননগর কমিশনারেট। কারণ, দু’দলের সমর্থকেরা ঠিক করেছিলেন, মাঠে এবং গ্যালারিতে আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদ জানানো হবে। ম্যাচ বাতিল হওয়ার পর বিকালে যুবভারতীর সামনে তিন প্রধানের সমর্থকেরা জমায়েত হয়ে প্রতিবাদে শামিল হয়েছিলেন। তাতে পুলিশের লাঠি চলেছিল। অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছিল ইএম বাইপাস।
অনেকের মতে, সেই ক্ষত মেরামত করতেই তৃণমূল তিন প্রধানের কর্তাকে দিয়ে সনতের পক্ষে বার্তা দেওয়ানোর চেষ্টা করেছে। সনৎ নিজে অবশ্য সে সব মানতে চাননি। তাঁর কথায়, ‘‘কোনো ক্ষতে প্রলেপ দেওয়া বা ক্ষত মেরামত করার বিষয় নেই। আরজি করের ঘটনা একটি সামাজিক অপরাধ। তার বিরুদ্ধে আমরাও রাস্তায় নেমেছি।’’