কথাবার্তা
মানুষের কাছ থেকেই জানতে চাই, আমার কাছ থেকে তাঁরা কী চাইছেন: মিমি চক্রবর্তী
অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তী ব্যস্ত ছিলেন তাঁর নতুন ছবি ‘মন জানে না’ নিয়ে। তারই মাঝে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগামী লোকসভা নির্বাচনের জন্য নায়িকার নাম ঘোষণা করেন। তখন থেকেই অভিনয় ও রাজনীতির মধ্যে ব্যালেন্স করে চলেছেন সদ্য রাজনীতিতে আসা মিমি। সকালে ছবির প্রচার তো বিকেলে তৃণমূলের কর্মিসভা। তাঁরই মাঝে কথা বলে নিলেন খবর অনলাইনের প্রতিনিধি রাকা রায়-এর […]

অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তী ব্যস্ত ছিলেন তাঁর নতুন ছবি ‘মন জানে না’ নিয়ে। তারই মাঝে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগামী লোকসভা নির্বাচনের জন্য নায়িকার নাম ঘোষণা করেন। তখন থেকেই অভিনয় ও রাজনীতির মধ্যে ব্যালেন্স করে চলেছেন সদ্য রাজনীতিতে আসা মিমি। সকালে ছবির প্রচার তো বিকেলে তৃণমূলের কর্মিসভা। তাঁরই মাঝে কথা বলে নিলেন খবর অনলাইনের প্রতিনিধি রাকা রায়-এর সঙ্গে।
সিনেমার প্রচারের সঙ্গে রাজনীতি – কী ভাবে সামলাচ্ছ? এই দুই প্রচারে মিল বা অমিল কোথায়?
যে ভাবে দেখছ আমাকে, সে ভাবেই ব্যালেন্স করছি। দু’টি ক্ষেত্র একেবারেই আলাদা। সিনেমায় নিজের ছবির প্রচারে যাই নিজের ছবির কথা জানাই। তবে রাজনীতির ক্ষেত্রে আমি সাধারণ মানুষের কথা ভাবি, তাঁদের সমস্যার কথা শুনি। আমার দল তৃণমুলের কথা জানাই। দলের নীতির কথা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিচ্ছি।
কলেজ জীবনে কখনও রাজনীতি করেছ? মানে ছাত্র রাজনীতি? হঠাৎ করেই তো রাজনীতিতে আসা?
তোমরা সবাই জানো, আমি ভীষণ টমবয় টাইপের ছিলাম ছোটবেলায়। তাই আমি যখন আশুতোষ কলেজে ভর্তি হই, বাড়ি থেকে বলে দেওয়া হয়েছিল, আমি যেন ইউনিয়ন না করি। কারণ আশুতোষ কলেজে রাজনীতি খুবই সক্রিয়। তা ছাড়া তখন আমি ছোটো ছিলাম। যদিও আমার বাড়িতে ভীষণ ভাবেই রাজনৈতিক পরিবেশ দেখেছি। আমার মামারা অনেক দিন ধরেই রাজনীতির সঙ্গে, বিশেষ করে তৃণমুলের সঙ্গে যুক্ত। অরূপদা যখনই যেখানে ক্যাম্পেনের জন্য ডেকেছেন, আমার মামারা সেখানে গেছেন।
তুমি যাদবপুর কেন্দ্র থেকে লোকসভা ভোটে লড়ছ, এই কেন্দ্রটি খুবই গুরুত্বপুর্ণ রাজনৈতিক দিক থেকে। মুখ্যমন্ত্রী নিজেও প্রথম বার এই কেন্দ্র থেকেই জিতে লোকসভায় যান। সেখানে তোমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন। নিজেকে কতটা গুরুত্বপুর্ণ বলে মনে হচ্ছে? কী ভাবে স্ট্র্যাটেজি নিচ্ছ?
আমি কোনো স্ট্র্যাটেজি নিচ্ছি না। আমার মনে হয় না সেগুলোর কোনো দরকার আছে বলে! আমার বিশ্বাস এত দিন ধরে মানুষ আমাকে ভালোবেসে বিশ্বাস করেছেন, এই জায়গাটা আমায় দিয়েছেন, সে ভাবেই এই নির্বাচনেও আমার পাশে থাকবেন, আমাকে আশীর্বাদ করবেন।
একটা কথা বলতেই হয়। অভিনেত্রী হিসেবে রাজনীতিতে আসার কারণে খুবই ট্রোল হতে হচ্ছে, সমালোচিত হতে হচ্ছে, কী ভাবে দেখছ? কোনো বার্তা দিতে চাও তাঁদের?
আমি কাউকে কোনো বার্তা দিতে চাই না, কোনো কিছুই বলতে চাই না। আসলে এই সময়ে দাঁড়িয়ে আমার সব কিছুই রয়েছে। নাম-পরিচিতি-অর্থ সবই রয়েছে, তা-ও যখন আমি রাজনীতিতে আসছি, তার মানে তো আমি টাকার জন্য বা নাম অথবা যশের জন্য আসছি না। মানুষের জন্য কাজ করা ছাড়া আমার কাছে রাজনীতিতে আসার অন্য কোনো উদ্দেশ্য থাকতেই পারে না। আমার মনে হয় কলকাতা শহরে আমাকে সবাই চেনে। এটাও মনে হয় তাঁরা বোঝেন যে, আমি আমার কেরিয়ারের মধ্যগগন থেকেই রাজনীতিতে আসছি, মানে আমি নাম-যশ বা অর্থ উপার্জনের জন্য আসছি না। কারণ, আমি জনসেবার জন্যই রাজনীতিতে আসতে চাইছি। আর যারা বোকা বোকা কথা বলে, আমার মনে হয় তাতে কান না দেওয়াই ভালো। আমি তো সব সময়ই বলি, এ সব কথায় বা ট্রোলে আমি কখনোই কান দিই না।
রাজনীতিতে আসার জন্য ‘বিবাহ অভিযান’ ছবিটা ছাড়তে হল, মন খারাপ হয়নি?
খুূবই হয়েছে। কারণ এই চিত্রনাট্যের প্রথম থেকেই আমি ছিলাম, আমার কথা ভেবে গল্প লেখা হয়েছে। এক জন পশুপ্রেমী প্রতিবাদী যেমন, আমি ঠিক তেমনই ওই ছবির চরিত্রটিতে। তাই অবশ্যই ও রকম চরিত্রে অভিনয় না করে কষ্ট হয়েছে। তবে এখন আমি মানুষের জন্য কাজ করতে চাই, মানুষের দায়িত্বটাই মাথায় রাখছি। রাজনীতিতে মনঃসংযোগ করতে চাই। সব মিলিয়ে আমি কাজ করতে চাই, ভালো কাজ করতে চাই – সে ক্যামেরার সামনে হোক বা ক্যামেরার পিছনে থেকে কাজ। সেই ক্ষেত্রে আমি যাঁদের সঙ্গে কাজ করি আমার পরিচালক বিরসা বলো বা প্রযোজক মনিদা, ওরা সবাই আমায় বোঝে। ওদের সাপোর্ট নিয়েই এসেছি রাজনীতিতে। ওরা বোঝে, এখন এই বিষয়টাতেই বেশি করে আমায় মনঃসংযোগ করতে হবে।
রাজনীতিতে তোমার আইডল কে?
দিদি (মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) ছাডা় আর কে হতে পারে!(হাসি)
যাদবপুরের মানুষের কাছে কী ভাবে যেতে চাও? কোন সমস্যাগুলোর সমাধান করতে চাও জিতে এলে?
দেখো, প্রথমত এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া আমার পক্ষে এই মুহূর্তে টু আরলি। আমি চাই মানুষ আমাকে বলুন, তাঁদের সমস্যার কথা। এখনও আমি প্রচার সে ভাবে শুরু করিনি। সবে মাত্র কর্মিসভা করেছি, কয়েকটি ক্যাম্পেন করেছি। কর্মীরা, যাঁরা কাজ করবেন তাঁদের সঙ্গেই আলোচনা করছি। অনেক জায়গায় দেওয়াললিখন শেষ হয়নি। তবে আগামী দিনে যখনই আমি প্রচারে যাব, আমি চাই সবাই জানান, তাঁরা আমার কাছ থেকে কী কাজ আশা করছেন, আমার দলের থেকে কী কাজ আশা করেছেন। সেগুলোতেই বেশি করে মন দেব।
কথাবার্তা
এমএসএমই ঠিক কী ভাবে স্বনির্ভর হতে সাহায্য করে?

স্মিতা দাস: মাইক্রো স্মল মিডিয়াম এন্টারপ্রাইজেস (এমএসএমই) ঠিক কী ভাবে স্বনির্ভর হতে সাহায্য করে? কী-ই বা তার প্রশিক্ষণ পদ্ধতি, এমনই বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর দিলেন ভারত সরকারের এমএসএমই পরীক্ষা কেন্দ্র, কলকাতা কার্যালয়ের ডেপুটি ডিরেক্টর দেবব্রত মিত্র।
এমএসএমই-র কাজ সম্পর্কে সাধারণ মানুষের ধারণা খুব একটা স্পষ্ট নয়। সাধারণ মানুষকে জানানোর জন্য কী উদ্যোগ নিচ্ছেন তাঁরা?
এটাকে সবাই ইন্ডাস্ট্রি নামে জানে। কিন্তু ২০০৬ থেকে এটি বদলে গিয়ে হয়েছে এন্টারপ্রাইজ। এই সংস্থার নিজস্ব প্রচার মাধ্যম আছে। টুইটার অ্যাকাউন্ট, ফেসবুক অ্যাকাউন্ট, ওয়েবসাইট, ই-ম্যাগাজিন ইত্যাদির মাধ্যমে প্রচার চালানো হয়। তা ছাড়া দুরদর্শনেও প্রচার করার জন্য বেশ কয়েকটি পর্বে এই নিয়ে আলোচনা করা হয়েছিল।
সাধারণ মানুষকে এই বিষয়ে উৎসাহিত করার জন্য কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়?
প্রায়শই এক বা দুই দিনের মোটিভেশনাল ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়। এর আয়োজন করা হয় সংস্থার অফিসের পাশাপাশি বিভিন্ন জেলাতেও। সেই ক্যাম্পের ব্যাপারে ওয়েবসাইটে প্রচার করা হয়। তা ছাড়া উদ্যোগদাতাদের অ্যাসোসিয়েশনের মাধ্যমেও প্রচার করা হয়, এই ক্যাম্পে যোগ দেওয়ার জন্য বলা হয়। তাতে বিভিন্ন স্কিম, ব্যবসা করার পদ্ধতি ইত্যাদি জন্য ট্রেনিং দেওয়া হয়। তা ছাড়া পাঁচ বা দশ দিনের অনুষ্ঠানগুলিতে এই বিষয়গুলিই আরও বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। সেই সব অনুষ্ঠানে ব্যাঙ্কের আধিকারিকরাও উপস্থিত থাকেন, তাঁরা জানান কী ভাবে ব্যাঙ্কের পক্ষ থেকে সাহায্য করা হয়। পাশাপাশি মানুষকে এটাও বোঝানোর চেষ্টা করা হয় যে কী ভাবে স্বনির্ভর হওয়া যায়, কী ভাবে নিজের ব্যবসার মাধ্যমে ভালো আয় করা যায়, ইত্যাদি।
ট্রেনিং ক্লাসগুলি সম্পর্কে কী ভাবে জানা যায়? কতক্ষণের বা ক’দিনের হয় এই ক্লাস?
সাধারণ ভাবে সোম থেকে শুক্রবার দিনের বেলা এই ক্লাস করানো হয়। সময় থাকে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা। সাধারণ ভাবে শনি-রবিবার ক্লাস বন্ধ থাকে। প্রত্যেক ক্লাসের সময়সীমা দেড় ঘণ্টা।
এই ক্লাস শুরুর আগে ওয়েবসাইটে ও ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। তা ছাড়া বহু মানুষ নিজে থেকেও এই মাধ্যমগুলিতে আবেদন জানিয়ে থাকে। অন্য দিকে এমএসএমই-র সিস্টার কনসার্ন বর্তমানে প্রচুর ট্রেনিং-এর ব্যবস্থা করছে। তার নাম এমএসএমই টুল রুম। এই টুল রুমের পক্ষ থেকে প্রত্যেক বার আলাদা ভাবে সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়।

এদের ওয়েবসাইটটি হল – www.msmedikolkata.gov.in, www.dcmsme.gov.in sisikolkata.gov.in
msmedikolkata facebook
এই ধরনের ট্রেনিং নিতে খরচ কী রকম থাকে?
খরচ খুব সামান্যই হয়। তপশিলি জাতি/উপজাতি ও মহিলাদের জন্য বিনামূল্যে এই ট্রেনিং দেওয়া হয়। সাধারণদের জন্য এক দিনের কোর্স বিনামূল্যে করানো হয়। বেশি দিনের কোর্স হলে যেমন ১০ দিন বা ছ’সপ্তাহের কোর্সের ক্ষেত্রে ১০০ বা ২০০ টাকা ফি নেওয়া হয়। তবে এমএসএমই টুল রুমের কোর্সের ক্ষেত্রে খরচ একটু বেশি পড়ে। কারণ সেখানে প্রশিক্ষণের ব্যাপারে বেশি জোর দেওয়া হয়, অনেক ক্ষেত্রে ছ’মাসের কোর্সও থাকে। সেই সব ক্ষেত্রে ৫-৬ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ হয়।
কী ধরনের শিল্পোদ্যোগ এই কার্যক্রমের মধ্যে পড়ে?
ম্যানুফ্যাকচারিং এন্টারপ্রাইজ ও সার্ভিস এন্টারপ্রাইজ – এই দুই ভাগে ভাগ করা যায়। ট্রেনিং কিন্তু এমএসএমই-র আওতায় পড়ে না। দোকান খোলা বা কিছু বিক্রি করা এগুলি ট্রেনিং হয় কিন্তু এমএসএমই-র আওতায় পড়ে না। কিন্তু সার্ভিস এন্টারপ্রাইজ হিসাবে দেখলে পড়ে। উদাহরণ হিসাবে বলা যেতে পারে, হলুদ চাষ করাটা এমএসএমই-র আওতায় পড়ে না। কিন্তু হলুদ চাষ করে গুঁড়ো করে প্যাকেট করে সেই গোটা ব্যাপারটি এমএসএমই-র মধ্যে পড়ে।
আর্থিক সহযোগিতা বা লোনের ব্যবস্থা আছে?
না, এই সংস্থা হল টেকনিক্যাল কনসালটেন্সি অর্গানাইজেশন। ট্রেনিং-এর মাধ্যমেই সেগুলি শেখানো হয়। কিন্তু সরাসরি টাকা দিয়ে সাহায্য করা হয় না। তার জন্য ব্যাঙ্ক সাহায্য করে। তবে ব্যাঙ্কিং ফিনান্সের জন্য প্রোজেক্ট রিপোর্ট তৈরি করতে হলে সংস্থা সাহায্য করে।
৫৯মিনিটস.কম সাইটটির সঙ্গে এর কোনো সংযোগ আছে কি?
৫৯মিনিটস.কম সাইটটির মিনিস্ট্রি অব ফিনান্সের। মিনিস্ট্রি অব এমএসএমই-র নয়।
এই ধরনের সংস্থা থেকে ট্রেনিং নেওয়ার পর আর্থিক সহযোগিতা করে এমন কোনো সরকারি প্রকল্প বা উদ্যোগ আছে?
এমএসএমই প্রকল্প থেকে মুদ্রা স্কিমে সাহায্য পাওয়া যায়। মুদ্রা স্কিমে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত সাহায্য পাওয়া যায়। এ ছাড়া প্রাইম মিনিস্টার এমপ্লয়মেন্ট জেনারেশন প্রোগ্রাম। অর্থাৎ পিএমইজিপি। এখানে ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের ক্ষেত্রে ২৫ লক্ষ টাকা ও সার্ভিসিং-এর ক্ষেত্রে ১০ লক্ষ টাকা ব্যাঙ্কঋণ পাওয়া যেতে পারে। এগুলির জন্য অনলাইন আবেদন করা যায়। তা ছাড়াও তফশিলি ও মহিলাদের জন্য আরও একটি স্ট্যান্ডআপ ইন্ডিয়া স্কিম রয়েছে। এই স্কিমে সর্বাধিক এক কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ পাওয়া যেতে পারে।
পড়ুন – দিল্লি মেট্রো রেল কর্পোরেশন ১৪৯৩ পদে প্রার্থী চাইছে
কথাবার্তা
খুন-সন্ত্রাস এড়িয়ে মানুষ ভোট দিতে পারলে আমার জয় নিশ্চিত: অশোক কান্ডারি

প্রচারের ফাঁকেই রোগী দেখার কাজটাও সেরে নিয়েছেন জয়নগরের বিজেপি প্রার্থী চিকিৎসক অশোক কান্ডারি। সপ্তম দফার ভোটের আগে তাঁর মুখোমুখো খবরঅনলাইনের প্রতিনিধি উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়
আপনি জয়নগর এলাকার একজন প্রতিষ্ঠিত চিকিৎসক। হঠাৎ রাজনীতিতে এলেন কেন? এসে কেমন লাগছে?
আমি চিকিৎসার পাশাপাশি দেশকে ভালোবাসি। যে কারণে এলাকার মানুষের উন্নয়ন করতে, মোদীজির স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে রাজনীতিতে চলে এলাম। বিজেপির তরফে আমাকে প্রার্থী করার প্রস্তাব এলে আমি গ্রহণ করি। এই দলের প্রার্থী হতে পেরে খুব ভালো লাগছে। গর্ব অনুভব করছি।
আপনার জন্ম আর পেশা সম্পর্কে কিছু বলুন…
আমার জন্ম ১৯৭৬ সালে, জয়নগর থানার (বর্তমানে বকুলতলা) উত্তর ঠাকুরচকে। আমি গত ২০ বছর ধরে রোগীর সেবায় কাজ করে চলেছি। ২০০৭ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত মন্দির বাজার ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক ছিলাম। পরে বদলি হয়ে মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়ার ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের দায়িত্ব পাই। কিন্তু আমি ওখানে কাজে যোগ না দিয়ে ইস্তফা দিই। এবং জয়নগরে এসে চিকিৎসা শুরু করি। এর পরে রোগীদের সেবার জন্য একটি নার্সিংহোম তৈরি করি। সেখানে এখনও চিকিৎসা করে চলেছি।
ভোটের ময়দানে নেমে পড়ার ফলে রোগী দেখার ক্ষেত্রে কি খুব অসুবিধার সৃষ্টি হচ্ছে?
প্রচারের ফাঁকেও আমি এখনও প্রতিদিন সকালে নিয়ম করে রোগী দেখছি। এতে আমার কোনো অসুবিধা হচ্ছে না।
ভোটের প্রচারে সুন্দরবনের দুর্গম এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন আপনি। কেমন অনুভূতি হচ্ছে?
এখানে আমার নতুন নতুন অভিজ্ঞতা হচ্ছে। তবে এই ভাবে ঘুরতে ঘুরতে সুন্দরবনের মানুষদের না পাওয়ার ব্যথা-বেদনাটা বেশি করে ভাবাচ্ছে আমায়। স্বাধীনতার এত বছর পরেও সুন্দরবনের উন্নয়ন থমকে আছে। এখানকার উন্নয়নের প্রধান বাধা পরিবহণ। সড়কপথ, সেতু আর রেলপথ খুবই প্রয়োজন। কুলতলি আর মৈপীঠের মানুষকে আজও কলকাতা যাওয়ার জন্য ট্রেন ধরতে নদী পেরিয়ে ক্যনিংয়ে আসতে হয়। এগুলির পরিবর্তন চাই।

আপনি জিতলে কী কী করতে চাইবেন?
সবার আগে সড়কপথ ও রেলপথের সমস্যা সমাধান। তার পর বেহাল স্বাস্থ্য ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ। নদীবাঁধ সংস্কার, কলেজ নির্মাণ। গোসাবার মন্মথনগরের মানুষ আজও বিদ্যুৎ পরিষেবা পায়নি – এগুলির দিকে নজর দেব।
এই কেন্দ্রে আপনার দলের পুরানো কর্মীরা আপনার পাশে নেই কেন?
ভুল বোঝাবুঝি সব দলেই থাকে। একটু-আধটু মনমালিন্য থাকবেই। তবে আমি পুরানো কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের প্রচারে ফিরিয়ে আনছি। কারণ তাঁরাই দলের সম্পদ। তাঁদেরকে বাদ দেওয়া যায় না।
নিজের জয়ের ব্যাপারে কতটা নিশ্চিত আপনি?
সুন্দরবনের মানুষ খুন-সন্ত্রাস থেকে নিজেদের বাঁচিয়ে নিজের ভোট নিজে দিতে পারলে ও গণতন্ত্র বজায় থাকলে আমার জয় কেউ আটকাতে পারবে না।
সুন্দরবনের ভোটারদের প্রতি আপনার করণীয়?
সুন্দরবনের মানুষের কাছ থেকে খেলাধুলো হারিয়ে যাচ্ছে। তাই খেলাধুলোর উন্নয়ন ও বেকারদের কর্মসংস্থানের উদ্যোগ নেব। এ ছাড়া কৃষকদের পাশে থেকে এবং সুন্দরবনের পর্যটনের আরও উন্নয়নের ইচ্ছা আছে।
তৃণমূল, আরএসপি, কংগ্রেস, এসইউসি-র প্রার্থীদের সম্পর্কে আপনার মতামত?
আমি কাদা ছোড়াছুড়িতে বিশ্বাস করি না। তাই তাঁদের সম্পর্কে মন্তব্য করতে চাই না।
নতুন ভোটারদের কাছে আপনার বার্তা?
সুন্দরবনের উন্নয়নের স্বার্থে আমাকে একবার জয়ী করুন। সব দলকে কাজের সুযোগ দিয়েছেন, একবার বিজেপিকে কাজের সুযোগ দিন। জয়নগর কেন্দ্রে পরিবর্তন আনুন। আমি আপনাদের সেবায় সারা বছর থাকব।
প্রচারে কেমন সাড়া পাচ্ছেন?
সুন্দরবনের মানুষের কাছ থেকে প্রচুর সাড়া পাচ্ছি। তাঁরা চান নিজের ভোট নিজে দিতে।
[ প্রার্থী হিসাবে নুসরত জাহানকে দরাজ সার্টিফিকেট সায়ন্তন বসুর! ]
কথাবার্তা
নতুন ভোটারদের উদ্দেশে বিশেষ বার্তা জয়নগরের তৃণমূল প্রার্থী প্রতিমা মণ্ডলের

ডব্লিউবিসিএসের কো-অপারেশন ডিপার্টমেন্টের চাকরি ছেড়ে ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে প্রার্থী হয়েছিলেন জয়নগর কেন্দ্রে। জয়ীও হন। এ বারের ভোটেও ওই কেন্দ্রেই বিদায়ী সাংসদ প্রতিমা মণ্ডলকে প্রার্থী করেছে তৃণমূল। তাঁর মুখোমুখি খবরঅনলাইনের প্রতিনিধি উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়।
দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে কী ভাবে দেখছেন?
২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি দেশের উন্নয়নের কথা বলে ক্ষমতায় এসেছিল। কিন্তু গত পাঁচ বছরে সেই প্রতিশ্রুতি রাখতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। তাই এখন উন্নয়নকে বাদ দিয়ে শুধু ধর্ম নিয়ে রাজনীতি শুরু করেছে।ধর্মের নামে বিভেদ তৈরি করছে। এটা দেশের পক্ষে ভালো নয়। এ ভাবে চলতে থাকলে দেশের পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে থাকবে। ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে দেশ।
বিজেপিকে কী ভাবে ট্যাকল করছেন?
মানুষের ব্যবহারই মানুষের পরিচয়। বিজেপি টাকা দিয়ে ভোট কিনতে চাইছে। এটা গণতন্ত্রের পক্ষে খুব খারাপ একটা লক্ষণ। আমরা সাধারণ মানুষকে পাশে নিয়ে এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
আপনার লোকসভার অন্তর্গত জয়নগর, কুলতলি, বাসন্তী, গোসাবা, ক্যানিংয়ে তৃণমূলের অন্তর্কলহ কাজ করছে বলে শোনা যাচ্ছে। এটা কি ভোটের ফলাফলে প্রভাব ফেলতে পারে?
তৃণমূল এখন একটা বড়ো সংসারে পরিণত হয়েছে। বড়ো সংসারের ভিতর তো মনোমালিন্য থাকতেই পারে। আমরা দল করি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শ মেনে। ফলে মানুষ ভোট দেবেন তাঁকে দেখেই, সেখানে অন্য কোনো প্রভাবের স্থান নেই।
এ বারে জয়ের ব্যাপারে কতটা আশাবাদী আপনি?
একশোয় একশো শতাংশ। তৃণমূল মানুষের পাশে থাকা দল। তাই এই দলের সৈনিক হিসাবে আমি নিজেকে গর্বিত মনে করি।

আগামী পাঁচ বছরের জন্য আপনার কী কী পরিকল্পনা রয়েছে?
মগরাহাট-২ এবং জয়নগর-১ ব্লকে আর্সেনিকমুক্ত পানীয় জল সরবরাহের প্রকল্পের কাজ শেষ করতে চাই। নিমপীঠ এবং জয়নগরে মোয়া হাব তৈরির কাজটা শেষ করতে চাই। পাশাপাশি গোটা এলাকার আর্থসামাজিক উন্নয়নে একাধিক পরিকল্পনার বাস্তবায়নেই জোর দিতে চাই।
রেলপথ সম্প্রসারণ বা লোকাল ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানোর কোনো চিন্তাভাবনা রয়েছে?
গত লোকসভার অধিবেশন চলাকালীন মোট চারবার সংসদে ক্যানিং, ঝড়খালি, জয়নগর, মৈপীঠ রেলপথ সম্প্রসারণ এবং ক্যানিং ও জয়নগর থেকে আরও ট্রেন বাড়ানোর জন্য প্রস্তাব রাখি। কিন্তু সবই তো ওদের হাতে। ওরা না চাইলে কী করে হবে!
এলাকার নদীবাঁধ সংস্কারের আপনি কোনো কাজ করেননি বলে অভিযোগ বিরোধীদের!
বিরোধী দলের নেতা এ বারও এখানে প্রার্থী হয়েছেন। তিনি সেচমন্ত্রী থাকাকালীন সুন্দরবনে আয়লা এসেছিল। তিনি তখন কী করেছিলেন? বাসন্তীর সজিনাখালিতে কয়েক দিন আগে একটা নদীবাঁধ ভেঙেছিল। খবর পেয়ে আমি নিজে সেখানে যাই। বিডিও এবং সেচ দফতরকে সঙ্গে নিয়ে দ্রুত বাঁধ মেরামতির কাজ হয়। সুন্দরবনের বাঁধগুলিকে রিংবাঁধ দিয়ে সংস্কার করতে হবে। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার যদি টাকাই না দেয়, কী করে হবে?
বেকারদের কর্মসংস্থানের ব্যাপারে কী ভাবছেন?
উৎকর্ষ বাংলা প্রকল্পের মাধ্যমে যুবক-যুবতীদের হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দিয়ে কাজের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে স্বনির্ভর হওয়ার যাবতীয় বন্দোবস্থ করেছে রাজ্য সরকার।
নতুন ভোটারদের উদ্দেশে কি বিশেষ বার্তা দিতে চাইবেন?
লোকসভার ভোট গণতন্ত্রের সব থেকে বড়ো উৎসব। তাই এমন একজন জনপ্রতিনিধিকে নির্বাচিত করুন, যিনি ধর্মনিরপেক্ষ ভাবে মানুষের পাশে থাকবেন এবং উন্নয়নের কাজ করবেন।
বিরোধী দলের প্রার্থীদের সম্পর্কে কী বলবেন?
তাঁদের কারও সঙ্গেই আমার ব্যক্তিগত কোনো রকমের সম্পর্ক নেই, ফলে এ ব্যাপারে কোনো প্রতিক্রিয়া দিতে চাই না।
[ সৌমিত্র খান বিষ্ণুপুরের বিজেপি প্রার্থী, এটাই আমার কাছে অ্যাডভান্টেজ: শ্যামল সাঁতরা ]
-
রাজ্য14 hours ago
পূর্ণাঙ্গ প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করল তৃণমূল
-
শিক্ষা ও কেরিয়ার2 days ago
কেন্দ্রের নতুন শিক্ষানীতির আওতায় মাদ্রাসায় পড়ানো হবে গীতা, রামায়ণ, বেদ-সহ অন্যান্য বিষয়
-
শিক্ষা ও কেরিয়ার2 days ago
প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ মামলায় নয়া মোড়, ফের কলকাতা হাইকোর্টে রাজ্য
-
গাড়ি ও বাইক20 hours ago
আরটিও অফিসে আর যেতে হবে না! চালু হল আধার ভিত্তিক যোগাযোগহীন পরিষেবা