কলকাতা: গুজরাত বিধানসভা ভোটের প্রচারে বাঙালি-বিদ্বেষী মন্তব্য করেন হিন্দি চলচ্চিত্রের পরিচিত অভিনেতা পরেশ রাওয়াল (Paresh Rawal)। যা নিয়ে ব্যাপক শোরগোল। এরই মধ্যে পরেশের মন্তব্যের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ালেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম (Mohammed Salim)। শুক্রবার থানায় গিয়ে এ ব্যাপারে এফআইআর দায়ের করলেন সিপিএম নেতা।
কেন পরেশ রাওয়ালের বিরুদ্ধে এফআইআর মহম্মদ সেলিমের
এ দিন তালতলা থানায় অভিযোগ পত্র জমা দিয়েছেন সেলিম। সেখানে জানান, পরেশ রাওয়ালের বাঙালি বিরোধী মন্তব্যের জেরে দেশের অন্য প্রদেশের মানুষের মধ্যে বাঙালি বিদ্বেষী মনোভাব তৈরি হতে পারে। এই মর্মে তিনি পরেশের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে তাঁর যথাযথ শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
গুজরাতে পরেশের প্রচারপর্বের একটি ভিডিয়োর লিঙ্ক অভিযোগপত্রে উল্লেখ করে সেলিম লিখেছেন, বহু বাঙালিই পশ্চিমবঙ্গের বাইরে অন্য রাজ্যে বসবাস করেন। এই ধরনের মন্তব্য তাঁদের বিপদে ফেলার জন্য যথেষ্ট। এই বক্তব্য বাঙালিদের প্রতি ঘৃণার উদ্রেক ঘটাবে। সোশ্যাল মিডিয়ার কমেন্ট থ্রেডেও তা স্পষ্ট। এর ফলে দেশে হিংসা ছড়াতে পারে।

পরেশের মন্তব্যের ভিডিও প্রকাশ্যে আসতেই প্রতিবাদে সরব হয় পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারাও। এ ছাড়াও এই মন্তব্যের বিরুদ্ধে বাংলাপক্ষের তরফ থেকে এ দিন প্রতিবাদ জমায়েতের আয়োজন করা হয়। এরই মধ্যে থানায় অভিযোগ দায়ের করল সিপিএম। জানা গিয়েছে, বলিউড অভিনেতার বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৫৩, ১৫৩এ, ১৫৩বি, ৫০৪ ও ৫০৫ ধারায় মামলা হয়েছে।
গুজরাত বিধানসভা ভোটের প্রচারে কী বলেছিলেন পরেশ রাওয়াল
মঙ্গলবার গুজরাতের ভালসাদে নির্বাচনী প্রচারে পরেশ বলেন, “বর্তমানে গ্যাস সিলিন্ডারের দাম যথেষ্ট বেশি, তবে এই দাম কমে যাবে। সাধারণ মানুষের কর্মসংস্থানও হবে। কিন্তু রোহিঙ্গা বা বাংলাদেশিরা দিল্লির মতো জায়গায় আপনার পাশেই বসবাস শুরু করলে কী হবে? তখন আপনি গ্যাস সিলিন্ডার নিয়ে কী করবেন? বাঙালিদের জন্য মাছ রান্না করবেন? গুজরাতের মানুষ মূল্য়বৃদ্ধি সহ্য করে নেবে, কিন্তু এটা নয়…যে ভাবে তাঁরা কুকথা ব্যবহার করেন, তাঁদের মাঝে থাকতে হলে সাধারণ মানুষকে মুখেও ডায়পার পরতে হবে।”
পরেশের এই বিতর্কিত মন্তব্যের বিরুদ্ধে মুখ খোলেন অনেকেই। পরেশ “অবৈধ বাংলাদেশি এবং রোহিঙ্গা” বলার সময় “বাঙালি” শব্দটি ব্যবহার করায় এই প্রতিবাদ আরও জোরালো হয়। ঘুরিয়ে ক্ষমা চাইবার জন্য টুইটারে পরেশ লেখেন, “অবশ্যই মাছ নিয়ে আলাদা করে বলা ঠিক হয়নি। গুজরাতের মানুষও মাছ খান। তবে স্পষ্ট করে বলতে চাই, বেআইনি ভাবে অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশি এবং রোহিঙ্গাদের বোঝাতে চেয়েছি আমি। কিন্তু এর পরেও যদি আপনার অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে থাকি, তা হলে ক্ষমা চাইছি”।
বিস্তারিত পড়ুন এখানে: খাদ্যাভ্যাস নিয়ে বাঙালিকে চরম অপমান, ক্ষমা চেয়ে নিলেন পরেশ রাওয়াল
খবরের সব আপডেট পড়ুন খবর অনলাইনে। লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল।